সেবা ডেস্ক: রাজধানীর শঙ্কর বাসস্ট্যান্ডের ফুট ওভারব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। তবে এখনও ব্রিজ দিয়ে রাস্তা পারাপারের স্বপ্ন পূরণ হয়নি নগরবাসীর। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, খুঁটি নির্মাণ এবং ওপরের লোহার কিছু অংশের কাজ করেই থেমে গেছে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফুট ওভারব্রিজের ওপর দিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের তারের সংযোগ রয়েছে। ব্রিজ নির্মাণ করতে হলে তারগুলো সরিয়ে নিতে হবে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এসব তার সরানোর জন্য ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিপিডিসি) অনুরোধ করা হয়েছে। তারা তার সরিয়ে নেয়ার খরচবাবদ ৩৭ লাখ টাকা দাবি করেছে। ব্রিজ নির্মাণের জন্য এই টাকা সিটি করপোরেশনের বরাদ্দের বাইরে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফুট ওভারব্রিজটি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ রয়েছে এক কোটি পঁচিশ লাখ টাকা। ডিপিডিসির তার সরিয়ে নেয়ার খরচের জন্য প্রস্তাবিত অতিরিক্ত ৩৭ লাখ টাকা এই বরাদ্দের বাইরে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ডিপিডিসিকে টাকা কমানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে ডিপিডিসি তাদের সিদ্ধান্তে এখনও অনড়।
রাস্তার ওপর দিয়ে বিদ্যুতের তার থাকার পরও কেন সেখানে ব্রিজ নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে? জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটির একজন প্রকৌশলী বলেন, স্থান নির্ধারণের কাজটি ট্রাফিক প্রকৌশল বিভাগ (টিইডি) করেছে। আগে থেকে সমন্বয় করলে এমন সমস্যা হতো না।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ট্রাফিক প্রকৌশল বিভাগ। তারা বলছে, ‘স্থান নির্ধারণের কাজ টিইডি’র নয়। এ কাজের সঙ্গে এ বিভাগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই’।
জানা যায়, ‘তিন বছরে মোটা দাগে ব্রিজটির তিনটি কাজ হয়। ফুটওভার ব্রিজটির কাজের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ২০১০ সালের ২১ মার্চ দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর এক বছর পর ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর ব্রিজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। শঙ্কর বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনি থাকায় কাজে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে যাত্রী ছাউনির কিছু অংশ অপসারণ করে ২০১৩ সালের ১৫ এপ্রিল ব্রিজের খুঁটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর কিছুদিন পর লোহার পাত দিয়ে ব্রিজের উপরের কিছু অংশের কাজ করা হয়। তারপর থেকে ব্রিজের কাজ বন্ধ রয়েছে।
রাস্তার ওপর দিয়ে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানানোর পরও ডিপিডিসি কেন তার সরিয়ে নেয়নি? জানতে চাইলে ডিপিডিসি’র একজন পরিচালক বলেন, ‘তার সরানোর কাজটি হঠাৎ করে একদিনেই সম্ভব নয়। এ কাজের জন্য সিটি করপোরেশনকে হিসাব করেই বাজেট দিয়েছে ডিপিডিসি। তারা ডিপিডিসিকে এখনও টাকা দেয়নি। টাকা জমা দিলেই কাজ শুরু হবে’।
তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকির হোসেন স্বপন ফুটওভার ব্রিজের কাজ দ্রুত শেষ করার আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু আইনি জটিলতায় ব্রিজের নির্মাণ কাজটি আটকে আছে। বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি এই সমস্যার সমাধান হবে’।
পাঁচ বছর আগে ব্রিজ নির্মাণের শুরুর কাজ দেখে যতটা আশাবাদী হয়েছিলেন এ কাজ শেষ না হওয়ায় তার চেয়ে বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
ব্রিজটির পাশের ভবনে দুই বছর ধরে ক্লাস নেন ইউডা’র যোগাযোগ ও গণমাধ্যম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক শাহিনুল হক। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজটি নির্মিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীদের সবচেয়ে বেশি উপকার হতো’।
