পদ্মা সেতুর এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে জানুয়ারিতেই

S M Ashraful Azom
0
পদ্মা সেতুর এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হবে জানুয়ারিতেই
সেবা ডেস্ক: স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরে যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মিত হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি হলেও দক্ষিণাঞ্চল রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগে ফেরি ও লঞ্চের ওপর নির্ভরশীল। এমতাবস্থায় পদ্মা সেতু জাতীয় উন্নয়নে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে পরিণত হচ্ছে। 

পদ্মা সেতুর প্রতিক্ষায় আছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, যশোর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও রাজবাড়ীসহ ১৯ জেলার প্রায় তিন কোটি মানুষ। পদ্মা সেতু উন্মুক্ত হলে কেবল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতিই বদলে যাবে।

আরও বিশদভাবে বলতে গেলে এই সেতু দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যোগাযোগ, বাণিজ্য, পর্যটনসহ অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সব মিলিয়ে এই সেতু দেশের মানুষের স্বপ্নের সেতু হয়ে উঠবে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজটি সহজ ছিল না।

কিন্তু বর্তমান সরকার পদ্মা সেতুকে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করে। বহু ষড়যন্ত্র ও ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ২০১২ সালের ৮ জুলাই নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে উঠে গোটা বাংলাদেশ।

এরপর যথারীতি শুরু হয় এক মহা কর্মযজ্ঞ। দেশবাসীর বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ চলতে থাকে পুরোদমে। দেশবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দেখা মেলে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ওই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় আরও একটি মাইলফলক রচনা করে। সেদিন জাজিরা প্রান্তে ৩৭-৩৮ নম্বর পিলার দুটির ওপর প্রথম স্প্যানটি স্বগর্বে দৃশ্যমান হয়।

এরপর একে একে আরও ৪টি স্প্যান বসে একত্র হয় পাঁচটি স্প্যান, যার দৈর্ঘ্য সাড়ে ৭০০ মিটার। ৬ নম্বর স্প্যানটি মাওয়া প্রান্তে বসেছে। এখানে আরও তিনটি স্প্যান পিলারে ওঠার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এদিকে ৭ নম্বর স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে এ মাসেই বসবে। আর ফেব্রুয়ারিতে বসবে ৮ নম্বর স্প্যান। এতে জাজিরা প্রান্তে একসঙ্গে সাতটি স্প্যান পিলারে বসে দেখা মিলবে এক কিলোমিটারের বেশি পদ্মা সেতু। এ ছাড়া সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হয়ে নান্দনিক দৃশ্যে মাওয়া প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে টোলপ্লাজা।

আশা করা হচ্ছে, আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে এ সেতু। বিনিয়োগকারী ও পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন হবে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা। এই প্রকল্পের কারণে স্থানীয় উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এ অঞ্চল ঘিরে আলাদা একটি শহর গঠিত হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণসহ এ অঞ্চলে আরও ব্যাপক উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে অবহেলিত থাকবে না এ অঞ্চল আর এখানকার মানুষ। পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি হবে দক্ষিণবঙ্গের। দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠনেও পদ্মা সেতু ভূমিকা রাখবে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের পদ্মা সেতু পৃথিবীর অন্যতম একটি সেতু হিসেবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে স্থাপন করতে যাচ্ছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। কংক্রিট আর স্টিলের নিখুঁত গাঁথুনিতে তৈরি হতে যাচ্ছে বিশ্বের অতুলনীয় এই দোতলা সেতু। দেশি-বিদেশি ২২ হাজার শ্রমিক আর প্রকৌশলীর অক্লান্ত পরিশ্রমে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে সেতুর মূল নির্মাণকাজ।
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top