সেবা ডেস্ক: অনেক কষ্ট-যাতনা, টানাপড়েনের মধ্যেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে হেলাল উদ্দিন। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তার মা-বাবার ছাড়াছাড়ি (বিবাহ-বিচ্ছেদ) হয়ে যায়। সেই সময় থেকে হেলালের সংগ্রাম শুরু। নানাবাড়িতে থেকে চালিয়ে গেছে পড়ালেখা। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতেও সে টেলেন্টপুলে বৃত্তিসহ জিপিএ ৫ পেয়েছিল। সেই বৃত্তির টাকাতেই চলেছে তার লেখাপড়া।
শেরপুরের নালিতাবাড়ীর সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পাওয়া হেলাল উদ্দিনের চোখেমুখে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন। এত দিন নানাবাড়িতে থেকে খেয়ে-না খেয়ে দাঁতে দাঁত চেপে হেলাল লেখাপড়া চালিয়ে গেলেও এখন কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে মাথায় ভর করেছে দুশ্চিন্তা। স্কুল পর্যায়ে পড়তে টাকার প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু কলেজে ভর্তি, শহরে থাকা-খাওয়াসহ লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া তার জন্য কঠিন।
মেধাবী হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার মা-বাবা বেঁচে থাকলেও সে তাঁদের স্নেহ-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। বাবা তার কোনো খোঁজখবরই নেন না। মা বছরে হঠাৎ কোনো সময় যোগাযোগ রাখলেও সেভাবে খোঁজখবর নেন না। সে যখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র তখন মা-বাবা তাকে ছেড়ে চলে যায়। তখন থেকেই সে নানাবাড়িতে থাকছে। বাবার বাড়ি ভোলায় হলেও সেখানে কখনো তার যাওয়া হয়নি। বিবাহবিচ্ছেদের পর বাবা ওমর ফারুক অন্যত্র বিয়ে করেছেন।
মা হেলেনা আক্তারও অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে নারায়ণগঞ্জে সংসার পেতেছেন। নানা হযরত আলীর বাড়িভিটা ছাড়া অন্য কোনো আবাদি জমি নেই। কিছু জমি বর্গা চাষ করেন। মামা মিরাজ আলম গাজীপুরে একটি গার্মেন্টে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সেই মামার আয় থেকে দেওয়া কিছু টাকা, আর বর্গাচাষের আয় থেকেই চলে তার নানার সংসার। সকালে না খেয়েও কখনো কখনো স্কুলে যেতে হয়েছে।
পোড়াগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেন, ‘হেলাল খুবই মেধাবী। আমরা তাকে বিনামূল্যে পড়িয়েছি। সহযোগিতা পেলে সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।’
⇘সংবাদদাতা: সেবা ডেস্ক
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।