সেবা ডেস্ক: দেশ, দল ও সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ঠেকাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর প্রযুক্তিতে দক্ষ নেতাকর্মীদের নিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘অনলাইন একটিভিস্ট গ্রুপ।’ এই অনলাইন টিম তৈরি করতে এরই মধ্যে সভা করেছে দলটি। সভায় সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে মনিটরিং টিম গঠন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্র থেকেই বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামের তালিকা তৈরি করে দেয়া হবে। জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হবে- এমনটাই জানিয়েছেন দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে করা সব অপপ্রচার, গুজব, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জঙ্গি কার্যক্রম, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে দলের পক্ষে প্রচার এবং বর্তমান সরকারের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচারের জন্য একটি ‘কমন প্লাটফর্ম’ বা ‘অনলাইন টিম’ তৈরির কাজ চলছে। এজন্য আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগসহ অন্যান্য সংগঠনের প্রযুক্তিতে দক্ষ নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি ও সিআরআই-এর যৌথ উদ্যোগে ‘অনলাইন টিম’ তৈরির কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে কেন্দ্র থেকে একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হচ্ছে। তাদেরকে প্রথমে ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের বিভিন্ন নির্দেশনা দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য অনলাইন টিম একযোগে কাজ করবে।
এছাড়া দলের অন্যান্য নেতা বা সরকারের কোনো মন্ত্রী যে বক্তব্য দেবেন সেটিই প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অথবা বিএনপির কোনো অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সজাগ করার জন্য অনলাইন টিম ২৪ ঘণ্টা কাজ করবে।
সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচার কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
কর্মশালায় তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে যারা সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, তাদের বিপক্ষে সবাইকে সত্য প্রচারে গড়ে তুলতে হবে অনলাইন একটিভিস্ট গ্রুপ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, আর্থ-সামাজিকসহ প্রতিটি খাতে অর্জন করে চলেছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কাজের প্রচার অব্যাহত রাখতে নেতাকর্মীদের একেকজনকে হতে হবে সাহসী সৈনিক।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর বলেন, গুজব প্রতিরোধ বা সরকারের সব উন্নয়নমূলক কাজগুলোকে তুলে ধরার জন্য একটি কমন প্লাটফর্ম তৈরি করব। সেখানে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা সংযুক্ত থাকবে। আমরা জেলা পর্যায়ে ১০ হাজার মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করব। তারা উপজেলা পর্যায়ে গিয়েও কাজ করবে। এক লাখ পর্যন্ত আমাদের টার্গেট। অনলাইনের মাধ্যমে এক ক্লিকে আমরা যেন সারা বাংলাদেশের সব জায়গায় চলে যেতে পারি এটাই টার্গেট।
‘কমন প্লাটফর্মটা কী’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমরা ভবিষ্যতে জানিয়ে দেব এর নাম কী হবে। কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রচার সেল গঠন করা হচ্ছে। এটি একটি কম্বাইন্ড প্রসেসে (সমন্বিত প্রক্রিয়ায়) হবে। প্রত্যেক সহযোগী সংগঠনের বিভাগ অনুযায়ী, জেলা পর্যায়ে মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করে দেবে।
তারা (মাস্টার ট্রেইনার) জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনলাইন প্রচারের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেবে। তিনি আরো বলেন, মাস্টার ট্রেইনার সিলেক্ট করে দেবে যার যার সংগঠন। আমরা তালিকা দেব। সিআরআই আর আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি যৌথভাবে সমন্বয় করবে।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষিত করা হবে। বিভিন্ন অপপ্রচার কিংবা গুজবের বিষয়ে সজাগ থাকার জন্য এটি (অনলাইন টিম) থানা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত হবে।
সিআরআই-এর কো-অর্ডিনেটর তন্ময় আহমদ বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো- দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত একটা নেটওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা। স্তরে স্তরে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট বানিয়ে দেব, তারা সেগুলো প্রচার করতে থাকবে। কোনটা মিথ্যা, কোনটা সত্য- আমরা তা তুলে ধরব। যাতে তারা (অনলাইন টিম) জনগণকে এসব বিষয়ে সচেতন করতে পারে।
আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর নস্কর বলেন, গুজবের বিষয়ে মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীরা সচেতন আছে। দেশের জনগণকে গুজবের বিষয় সচেতন করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্যও তুলে ধরা হবে।
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে অনলাইন একটিভিস্ট গ্রুপ করা হচ্ছে। এই অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে গুজবের বিষয় মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন অর্জন তুলে ধরা হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির একটি টিম গঠন করে দিচ্ছি। সেই টিমের সদস্যদের ট্রেনিং দেবে আওয়ামী লীগ। ট্রেনিং শেষে আমরা উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে যাব।
শেয়ার করুন
সেবা ডেস্ক: রাজধানী ঢাকার কলাবাগানে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত দিহানের মা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিলেন। দিহানের মা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকার কারণে তারেক রহমানের সাথে ঘনিষ্ঠতার এই সুযোগ পেয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানান।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে দিহানের বাবা আব্দুর রউফ সরকার অঢেল সম্পদের মালিক হন। খোদ বিএনপির নেতারাও তাদেরকে সমীহ করে চলতেন বলে তথ্য জানায় প্রতিবেশীরা।
দিহানের বাবা আবদুর রউফ বিএনপি শাসনামলে সরকারি চাকুরীরত থাকাকালে কিনেছেন দেড়শো বিঘারও বেশি জমি। রাজশাহী শহরের অভিজাত দুই এলাকায় দুটি সুউচ্চ ভবনসহ নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় রয়েছে তার। পরিবারটির নানামুখী প্রভাবের কারণে মুখ খুলতেও ভীত এলাকাবাসী।
রাজশাহীর দুর্গাপুর রাতুগ্রামের বাসিন্দা রাজধানীর কলাবাগানে শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত দিহানের বাবা আব্দুর রউফ সরকার। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দিহানের বাবার সকল দুর্নীতির ফিরিস্তি উঠে আসলে তিনি কোনঠাসা হয়ে পড়েন। জেলা রেজিস্ট্রারের পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসরও নেন।
পৈতৃক সম্পত্তি ছাড়াও চাকরিকালীন দুর্গাপুরের কিসমত গণকৈড়, পুঠিয়ার তাহেরপুর, নওগাঁর আত্রাইসহ বিভিন্ন স্থানে কেনেন অঢেল জমি। ভূমি অফিসের তথ্য মতে, শুধুমাত্র রাতুগ্রাম মোজায় আছে ৭৮ বিঘা জমি। আছে পুকুর, খামার, ফসলি জমিসহ গ্রামের আলিশান বাড়ি। পাশাপাশি রাজশাহী নগরীর পদ্মা আবাসিক, সাগরপাড়ায় কেনেন জমিসহ দুটি ভবন।
গ্রামের লোকদের অভিযোগ দিহানের মা বগুড়ার মেয়ে শিল্পী বেগমের ঘনিষ্ঠতা ছিলো বিএনপির তারেক রহমানের সাথে। মূলত তার প্রভাব খাটিয়েই করেন এই অঢেল সম্পদ। তবে দিহানের বড়ভাই সুপ্তের ভয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে চাননি অনেকে।
এলাকাবাসী জানান, তাদের চরিত্র ভালো নয়। এর আগেও নারীঘটিত ঘটনা ঘটিয়েছে। এছাড়াও গরীব মানুষদের মামলা ও মোকদ্দমা নিয়ে ফাঁদে ফেলেন। তাই ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ অনেকেই।
মূলত অঢেল সম্পদের কারণে বেপরোয়া হয়ে ওঠে দিহান। বাবা-মায়ের প্রকাশ্য প্রশ্রয়ে সে দিনকে দিন অপরাধের দিকে ঝুঁকতে থাকে। হয়তো কলাবাগানের ধর্ষণ ও খুনের ব্যাপারটি প্রকাশ্যে না এলে এই পরিবারের এসব অপকর্মের খবর কখনোই প্রকাশিত হতো না।
শেয়ার করুন
সেবা ডেস্ক: বাবার মৃত্যুর বিষয়ে ভিডিও বার্তা দিতে আমাকে জিম্মি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন আল্লামা শফীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ মাদানী। জোরপূর্বক ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার থেকে ওই ভিডিও নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন আল্লামা শফীকে নির্যাতন ও মানসিক নিপীড়ন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ করে এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান তার পরিবার ও হেফাজতের একাংশের নেতারা।
সেখানে লিখিত বক্তব্যে ইউসুফ মাদানী বলেন, ‘জুনায়েদ বাবুনগরী বারবার বলছেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছে। আর এর স্বপক্ষে তিনি আমার ভিডিওবার্তার মাধ্যমে দেয়া স্বীকারোক্তিকে বড় দলিল হিসেবে পেশ করছেন। অথচ আমার কাছ থেকে জোর করে এই স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে ২২ সেপ্টেম্বর আর তা প্রচার করা হয়েছে এক সপ্তাহ পর।
এতেই প্রমাণিত হয়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের বাঁচানোর হীন উদ্দেশ্যে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। অথচ আমি পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওবার্তায় বলেছি যে, আমাকে জিম্মি করে জোরপূর্বক ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে এই পরিত্যক্ত স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছিল।’
শফীপুত্র আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কার ভাষায় বলেছি, আমার বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি। এরপরও বিগত ২৩ ডিসেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের নামে মামা-ভাগ্নের সংবাদ সম্মেলনে বাবুনগরী আমার সেই স্বীকারোক্তিকেই বড় দলিল হিসেবে পেশ করেছেন। এবং তিনি মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি-ধামকি দিয়েছেন, আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার কথা বলেছেন।
আমাদের প্রশ্ন, আমার পিতার মৃত্যু যদি স্বাভাবিক হয়ে থাকে তাহলে তদন্তে বাবুনগরী গং-এর এত ভয় কিসের? তার দাবি অনুযায়ী তদন্তে তিনি তো নির্দোষই সাব্যস্ত হবেন। এই মামলায় তো কাউকে অযথা হয়রানি করার জন্য করা হয়নি।
সুতরাং এই মামলার তদন্তে কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করা হলে এর সম্পূর্ণ দায় বাবুনগরী গংদের ওপরই বর্তাবে।’
হেফাজতের সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে ৪টি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো-
১. বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে আল্লামা শাহ আমদ শফীর ‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর’ রহস্য উদঘাটন করে এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
২. তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলা তদন্তপূর্বক অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে।
৩. আল্লামা শফীর পরিবারের সদস্যদের ও তার অনুসারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যারা মামলা তুলে নেয়ার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. আহমদ শফীর রেখে যাওয়া সব দ্বীনি ও সামাজিক অঙ্গনগুলো থেকে তার বিরোধীদের অপসারণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত আল্লামা আহমদ শফী গত ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান। ৩ মাস পর ১৭ ডিসেম্বর তাকে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রামের আদালতে মামলা করেন তার শ্যালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন। আসামি করা হয় হেফাজতের ৩৬ জনকে।
শেয়ার করুন
সেবা ডেস্ক: বান্দরবান জেলা বিএনপি ও লামা উপজেলা বিএনপির ৬ নেতাসহ ৭ নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে প্রতারণামূলক ও আক্রমণাত্মক মিথ্যা তথ্য প্রচার এবং মানহানির অভিযোগে উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন বিএনপি নেতা ও পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আমির হোসেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম রুহুল আমিন, সভাপতি আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুদ্দিন, সহ-সভাপতি আবু তাহের ও সদস্য আরিফ চৌধুরী। মামলার পর গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্তরা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বিএনপি নেতা আমির হোসেন লামা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অভিযুক্তরা আমির হোসেন ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। তারা অবৈধভাবে ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করে তাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের যোগসাজশে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেয়াসহ দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আবেদন করেন। এতে বিএনপি নেতা আমির হোসেনের ৩ কোটি টাকার সম্মানহানি হয়। গত বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) এর প্রতিকার চেয়ে বিএনপি নেতা আমির হোসেন উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি নেতা আমির হোসেন।
আদালতে ৬ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন বলেন, আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য লামা থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শেয়ার করুন
সেবা ডেস্ক: আওয়ামী লীগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসছে ৩০ ডিসেম্বর “গণতন্ত্রের বিজয় দিবস” উদযাপন করবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার নিজ সরকারি বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উদযাপন করবে।
বক্তব্যের শুরুতে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে শীত ঝেঁকে বসেছে। তাই শীতের এই পরিস্থিতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
শেয়ার করুন
‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় আহমদ শফীকে, নেপথ্যে ছিলেন হেফাজত নেতা বাবুনগরী-মামুনুল হক’
ঐতিহাসিকভাবে হাটহাজারী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে
আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুটি অস্বাভাবিক কিংবা হত্যাকাণ্ড
হেফাজতের আমির হচ্ছেন মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী
ক্ষমতা ফিরে পেতে ষড়যন্ত্র শুরু করেন জুনায়েদ বাবুনগরী
শফী বিরোধী নেতাদের নিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী মিটিংয়ের ডাক দেন
আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করা না হলে শফী হুজুরকে চরম মূল্য দিতে হবে
শফীকে হত্যা করা হয়েছে, মামলা দায়ের করেছেন মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মূল কেন্দ্র হচ্ছে প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা আহমদ শফীর তৈরি করা হাটহাজারী মাদ্রাসা। ঐতিহাসিকভাবে হাটহাজারী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে, তা-ই নির্ধারণ করে দেয় হেফাজতের নিয়ন্ত্রণ কোন দিকে থাকবে। বিষয়টি ভালোভাবেই জানতো জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকেরা। ফলে পিতার তৈরি করা মাদ্রাসায় পিতার অবর্তমানে পূর্ণাঙ্গ মালিকানা পাবার কথা থাকলেও ষড়যন্ত্র করে বের করে দেয়া হয় আল্লামা আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানীসহ তার অনুসারীদের। যার কারণে ধারণা করা হচ্ছে, আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুটি অস্বাভাবিক কিংবা হত্যাকাণ্ড। আর এরপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণও রয়েছে।
![]() |
|
বর্তমান হেফাজতের আমির হচ্ছেন মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। যদিও আল্লামা শফী জীবিত থাকা অবস্থায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে, কমিটির চাপে সে সময় দল থেকে সরে যেতে বাধ্য হন বাবুনগরী। এরপর থেকেই হারানো ক্ষমতা ফিরে পেতে ষড়যন্ত্র শুরু করেন জুনায়েদ বাবুনগরী। হাটহাজারী মাদ্রাসায় প্রায় ২০ হাজার ছাত্র রয়েছে৷ তারা বিভিন্ন শিক্ষকদের অনুসারী হিসেবে নানা ভাগে বিভক্ত। বিষয়টি ভালোভাবে জানতেন বাবুনগরী। বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে প্রথমে তিনি হাটহাজারি মাদ্রাসায় অবস্থিত সরকার বিরোধী বিভিন্ন ইসলামিক নেতার সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করেন। অতঃপর একটি শক্তিশালী ঘাটি তৈরি করে ১১ সেপ্টেম্বর আল্লামা শফী বিরোধী নেতাদের নিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী তার ফটিকছড়ির বাসায় একটি মিটিংয়ের ডাক দেন। উক্ত মিটিংয়ে মামুনুল হক ও নাসির উদ্দিন মুনিরের মতো নেতারা অবস্থিত ছিলেন।
উক্ত মিটিংয়ে মামুনুল হক ঘোষণা করেন যে, শফী হুজুরের ছেলে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করা না হলে শফী হুজুরকে চরম মূল্য দিতে হবে। যার অংশ হিসেবে ১৬ তারিখ হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলন শুরু হয়।
![]() |
ছবি: মাওলানা মামুনুল হক (ডানে) এবং মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির (বামে) |
মামুনুল হকের এমন ঘোষণাই আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার প্রথম চক্রান্ত বলে মনে করেন অনেকে।
মনে রাখা প্রয়োজন, হাটহাজারি মাদ্রাসায় ৮ হাজার ছাত্রের থাকা খাওয়ার খরচ আল্লামা শফী সাহেবের কমিটির লোকজন বহন করতো। ফলে এমন মাদ্রাসায় আন্দোলন কখনোই সম্ভব ছিলো না। যা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে।
![]() |
ছবি: হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা |
বর্তমানে আল্লামা শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন আল্লামা শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নবনির্বাচিত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের পরিকল্পনা এবং আরেক যুগ্ম-মহাসচিব নাসির উদ্দিন মুনিরের নেতৃত্বে আল্লামা আহমদ শফীকে ‘হত্যা’করা হয়েছে।
![]() |
ছবি: হাটহাজারী মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান |
বিষয়টি সম্পর্কে আহমদ শফীর পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু হানিফ বলেন, পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হত্যা করা হয়েছে। যে মানুষটি অক্সিজেন ছাড়া চলতেই পারেন না, সেটা আবার হাই ফ্লো অক্সিজেন। সেখানে তাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অক্সিজেন ছাড়া আটকে রাখা হয়েছে। এ কারণে তাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে বাদী নিজস্ব ব্যবস্থায় হুজুরকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা জানান, হুজুর ততক্ষণে কোমায় চলে গেছেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি অবশ্যই রহস্যজনক।
এছাড়া আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর দুই দিন আগে ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে একদল উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রকে মাঠে নামানো হয়। তারা আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে উগ্র ধর্মীয় ভাষা ব্যবহার করে স্লোগান ও গালিগালাজ করতে থাকে। আহমদ শফীর কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে আসামি নাছির উদ্দিন মুনির ধমকের সুরে বলেন, ‘তুই হচ্ছিস বুড়ো শয়তান, তুই মরবি না, তুই সরকারের দালাল।’ ৪০-৫০ জন শফীর কক্ষে গিয়ে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করে ওই পদে হেফাজতের বর্তমান আমির জুনাইদ বাবুনগরীকে বসানোর দাবি করতে থাকেন।
একপর্যায়ে শাহ আহমেদ শফী রাজি না হওয়ায় মামুনুল হকের মোবাইলে নির্দেশমতে নাছির উদ্দিন মুনির হেফাজত আমিরের দিকে তেড়ে যান, শফী সাহেব বসা অবস্থায় চেয়ারে লাথি মারেন। নাকের অক্সিজেন টান দিয়ে খুলে ফেললে শফী হুজুর অজ্ঞান হয়ে যান। এ সময় মাইকে ঘোষণা করা হয়, আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং শফী হুজুর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। যদিও আল্লামা শফী সাহেবের মুখ থেকে একটি কথাও শোনার সুযোগ পায়নি সাধারণ জনগণ।
১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে শফীকে জিম্মি করে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার ও তার পদত্যাগের ঘোষণা মাইকে বলার জন্য চাপ দেন আসামিরা। তিনি অনীহা প্রকাশ করলে তার কক্ষের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিদ্যুতের অভাবে অক্সিজেন লাগাতে না পারায় শফী কোমায় চলে যান। তাকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত মাদ্রাসা থেকে বের করে হাসপাতালে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। উক্ত তথ্য উপাত্তকে বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে উপনীত হওয়া যায় যে, আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো না। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর গত ১৫ নভেম্বর হেফাজতের সম্মেলন হয়। শফীপন্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়া অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে হেফাজতের আমির নির্বাচিত হন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। মহাসচিব নির্বাচিত হন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। এই কমিটিরই যুগ্ম-মহাসচিব হয়েছেন মামুনুল হক ও নাসির উদ্দিন মুনির।
শেয়ার করুন
![]() |
ছবি: হেফাজতে ইসলামের বর্তমান মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী |
হেফাজতের নবগঠিত কমিটিতে বেশ ক'জন জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতা, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠরাও আছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমদ আবদুল কাদের। এছাড়া জঙ্গি সংগঠন হুজি ও লস্কর-ই-তৈয়্যবা ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়া বেশ কজনও রয়েছেন কমিটিতে। অনেকেই নতুন এই কমিটিতে তিক্ততা প্রকাশ করে বলছেন- এ যেন নতুন বোতলে পুরোনো মদ!
গত ১৫ নভেম্বর (রবিবার) কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। যা হেফাজতের আরেকটি অংশ মানছে না। বিতর্কিত এই ব্যক্তিদের কমিটিতে রাখা সংগঠনের আদর্শবিরোধী বলছেন হেফাজতের সাবেক নেতারা।
![]() |
ছবি: হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফী |
হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ধর্মভিত্তিক বড় এই সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপি-জামায়াতপন্থি অংশের নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা শফীপন্থিদের বাদ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। হেফাজতের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ১৮ সদস্যের কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে থাকা বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা নানামুখী তৎপরতা শুরু করেছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনীতি সচেতনরা।
তথ্যসূত্রে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামের সাথে সংশ্লিষ্ট নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত এই কমিটিতে আছেন-
সালাউদ্দিন আইয়ুবি, যিনি ছিলেন শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আব্দুল আলিম, শিবিরের সাংস্কৃতিক সম্পাদক। হাবিবুল্লাহ আজাদী, জামায়াতের রুকন। জুনায়েদ বাবুনগরীর মামাতো বোনের স্বামী অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক। আহমদ আবদুল কাদের, যিনি ১৯৮২ সালে ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন।
![]() |
ছবি: হেফাজতে ইসলামের বিতর্কিত কমিটিতে পদ পাওয়া শিবিরের সাবেক নেতারা |
সংগঠনের বর্তমান মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের যে কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেখানে অনেকেই সরাসরি বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট। কেউ কেউ জামায়াত নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। নতুন কমিটি গঠনকে সামনে রেখে প্রায় প্রতিদিনই বিএনপি-জামায়াতের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা জাফর আলম নিয়মিত গোপন বৈঠক করে কমিটির তালিকা তৈরি করছেন।
এই কমিটির মাধ্যমেই বাবুনগরী এবং জামায়াতের এজেন্ডা খুবই স্পষ্ট রূপে প্রতীয়মান হয়। আর তা হলো- দেশকে আবার অস্থিতিশীল পরিবেশের দিকে ঠেলে দেয়া।
শেয়ার করুন
হাটহাজারী মাদরাসার খেদমতে নিবেদিত শাহ আহমদ শফীর জীবনের শেষদৃশ্য ছিল বড় করুণ। ওই অন্তিম শেষ তিন দিনে তাঁর পাশে ছিলেন নাতি মাওলানা আরশাদ এবং একান্ত খাদেম হাজোইফা আহমদ। তাদের নিজ জবানিতে তারা বর্ণনা করেছেন ওই বিক্ষুব্ধ সময়ের পূর্ণ চিত্র।
আসলে কী ঘটেছিল?
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, আহমদ শফী সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। ছেলে আনাস মাদানী ঢাকায় ছিলেন। জোহরের নামাজের পর মাঠে হৈ চৈ এর আওয়াজ শুনতে পেয়ে একজন শিক্ষক হজরতের কামরায় এসে খবর দেন, ছাত্ররা মাঠে চিৎকার করছে, আনাস মাদানীর বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর খবর আসে, আনাস মাদানীর কক্ষের দরজা-জানালা ভেঙে লুটপাট করছে সন্ত্রাসীরা। আন্দোলনকারী সন্ত্রাসীরা হাটহাজারী মাদরাসার শেখ আহমদ সাহেবের কক্ষের দরজা ভেঙ্গে মুহতামিম সাহেবের কামরায় আসতে বাধ্য করে।
উগ্রপন্থীদের আগমন
শেখ আহমদ সাহেবের সঙ্গে উগ্রপন্থী নেতা হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি দল মুহতামিম কার্যালয়ে প্রবেশ করেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং মাদানীকে বহিষ্কার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তখন হুজুর বলেন, ‘আনাসের যেসব দোষ রয়েছে, তা লিখিত আকারে অভিযাগ করে জানাও, আমি দস্তখত দিব।
দলের সদস্যরা প্রমাণসহ সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উপস্থাপন করতে না পারায় আহমদ শফী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। উগ্রপন্থীদের ২০/২৫ জনের আরেকটি দল আন্দোলনকারী নেতা শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে প্রথম দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে যে, মুহতামিম সাহেব তাদের ভিত্তিহীন দাবি মানতে পারছেন না। এ সময় কার্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছাত্রদের হুমকিধমকি ও জোর জবরদস্তি করে দরজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ছাত্র আন্দোলনকারী নামধারী কিছু সন্ত্রাসী। মাওলানা নুরুল ইসলাম (কক্সবাজার), মুফতী উসমান, আনাস মাদানী ও দিদার কাসেমীর কামরা ভাংচুর করে রশিদ বইসহ লক্ষ লক্ষ টাকা লুট করে। বিক্ষোভকারীরা বিশ-পঁচিশজনের একটি শুরা কমিটি গঠন করে প্রত্যেকের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী ৪০/৫০ জনের একেকটি দল গঠন করা হয়। এই দলের যত ব্যয় হত সব তারা উস্তাদদের কামরায় লুটপাট করা অর্থের মাধ্যমে বহন করত!
শুরার বৈঠক অনুষ্ঠিত
মাগরিবের পর হাটহাজারী মাদরাসার শুরা সদস্য নোমান ফয়েজী, সালাহউদ্দীন সাহেব এবং ওমর ফারুক সাহেব সহ মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষক শুরার বৈঠক করেন। বৈঠকে নোমান ফয়েজী ও উগ্রপন্থীরা আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করার চাপ দিচ্ছিলেন। হজরত বহিষ্কার করতে রাজি না হওয়ায় কার্যালয়ের ভেতরে টেবিলের গ্লাস, বাইরের সীমানা গ্লাস এবং ফুলের টবগুলো ভাংচুর করে আন্দোলনকারীরা। তারা হজরতের সামনে জামেয়ার অফিশিয়াল একটি প্যাড রেখে নাতি দেওবন্দ পড়ুয়া আসাদের গলায় গ্লাসের টুকরো ধরে দস্তখত করতে বলে। হজরতের সামনে ব্যক্তিগত সহকারী (খাদেম) মাওলানা শফিউল আলমকে রড দিয়ে আঘাত করা হচ্ছিল এবং চড়-ঘুষি মারা হচ্ছিল। হুজুরকে সরকারের দালাল, মুনাফিক সহ গালিগালাজ করছিল তার খাদেম আর উপস্থিত আলেমদের সামনেই।
একপর্যায়ে সক্ষম হয় তারা, তবে স্বাক্ষরটি স্বাক্ষর না, সেটা দেখলেই বুঝা যায়। এরপর তারা মাদ্রাসার মাঠে গিয়ে মাইকে ‘হুজুর আনাস মাদানীকে বহিস্কার করেছেন' আগামী শনিবার শুরার সভায় বাকি বিষয়ে সমাধান হবে বলে ঘোষণা দেয়, পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ বৃহস্পতিবার
পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত ছিল। সন্ত্রাসীরা এই সাধারণ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে গুজব প্রচার করতে থাকে "শফী সাহেব মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়ার মিটিং ডেকেছেন", তিনি গতকালকের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। এরপর মাদরাসার পাগলা ঘণ্টা বাজানো হয়। আন্দোলনকারীরা হজরতের কার্যালয়ে এসে উপস্থিত শিক্ষকদের বের হয়ে যেতে বলে। উনারা চলে যাওয়ার পর আহমদ শফীর কার্যালয়ের বিদ্যৎ সরবরাহ বন্ধ করে শুরু করে ভাংচুর ও লুটতরাজ। কোনো অজুহাত ছাড়া হজরতের সামনে তাঁর খাদেমদের বেধড়ক মারধর করা হয়। হজরতের অক্সিজেন সাপোর্ট খুলে ফেলে। বিদ্যুতের কারণে এসি বন্ধ এবং অক্সিজেন খুলে ফেলায় হুজুরের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। অনেক আকুতি মিনতির পর বিদ্যুৎ সংযোগ ও অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে তারা রাজি হয়। অক্সিজেন ও নেবুলাইজারের মাধ্যমে হজরতকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে আহত খাদেমরা।
নাতি আরশাদকে জিম্মি
তারা হুজুরের নাতি আশরাদকে জিম্মি করে বলে, ‘আপনাকে মসজিদের মাইকে বলতে হবে যে, হুজুর সুস্থ আছেন, হামলা হয়নি। এ মর্মে ভিডিওবার্তাও দিতে বলে। তারা দুই পৃষ্ঠার একটি ঘোষণা লিখে নিয়ে আসে। খাদেম শফিকে মেরে বাধ্য করা হয় ভিডিওবার্তা দেওয়ার জন্য। নাতি আসাদকে হজরতের সামনে থেকে টেনে হিঁচড়ে এনে নির্মম নির্যাতন করা হয়। হজরত তখন অসহায়ের মতো তাকিয়ে ছিলেন আর চোখ বেয়ে অঝাোরে পানি পড়ছিল।
তারা ওয়েটিং রুমের চারটি দুই টনি এসি, দুটি টি টেবিল ছাড়া সব টেবিল, প্লেট-গ্লাস সহ যাবতীয় আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে। হজরতের যত সম্মাননা পদক ছিল আধিকাংশ পদক নষ্ট করে ফেলে। এমন কি হারামাইন কর্তৃক উপহার দেয়া কাবাঘরের বাঁধাই করা গিলাফও ভেঙে চুরমার করে ফেলে। কামরার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে ফেলে। হুজুরের কামরার আইপিএস- এর যে ব্যাটারি ছিল সেগুলো নষ্ট করে ফেলে।
মূলত যে সকল শিক্ষকের কামরা থেকে তারা টাকা-পয়সা লুটপাট করেছিল তার অধিকাংশই তাদের ব্যক্তিগত বা বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসায় প্রদান করা অন্যের আমানতের টাকা। যেমন: মাওলানা উমর সাহেবের রুমে তার মেয়ে ও স্ত্রীর ২০ভরি স্বর্ণ, হুজুরের নিজের এবং মানুষের আমানত ৪০ লাখ টাকা তারা লুট করে (যদিও পরে পাঁচ ভরি স্বর্ণ ফিরিয়ে দেয়)। মাওলানা নুরুল ইসলাম (কক্সবাজার) হুজুরের রুমে তিন জুমার কালেকশন ও ব্যক্তিগত টাকা মিলিয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকা, মুফতি উসমান সাহেবের রুম থেকে দুই মাসের বেতনসহ মোট ৬০ হাজার টাকা, দিদার সাহেবের কামরা থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং আনাস সাহেবের রুম থেকে ২৮ লাখ টাকা তারা লুট করে।
আবারো শুরার বৈঠক : হুজুরের অবস্থা শংকটাপন্ন
মাগরিবের পর সন্ত্রাসীরা শুরা সদস্যদের ডেকে বৈঠকের ব্যবস্থা করে। শুরা সদস্যরা হুজুরের কামরায় আসতে থাকেন। আমির আহমদ শফী, মুহিব্দুল্লাহ বাবুনগরী ও ২০০৪ সালে সর্বসম্মতিক্রম শুরার যে সকল সদস্যকে বহিষ্কার করেছিলেন, সেই সমস্ত বহিস্কৃত সদস্যগণও উপস্থিত হন।
সন্ধ্যা সাতটা আটটার দিকে বৈঠক শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পরই হজরত অসুস্থ হয়ে পড়েন। হজরতের শরীর ঠান্ডা ও নিথর হয়ে যায়। হজরতের নাতি আরশাদ ও খাদেম মাওলানা শফিউল আলম শুরা সদস্যদের কাকুতি মিনতি করে অনুরোধ করেন, ইমার্জেন্সি হাসপাতালে নিতে। বারবার অনুরোধ করার পরও মিটিং শেষ করতে আধা ঘণ্টা বিলম্ব করায় হজরতের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। কিন্তু শুরা সদস্যদের কেউ হজরতকে বের করার জন্য এগিয়ে আসেনি।
আন্দোলনকারীদের ফের প্রবেশ
শুরা সদস্যরা না আসায় আন্দোলনকারীগণ আবারও হজরতের কামরায় প্রবেশ করে হজরতকে জিম্মি করে, কিছু সাদা প্যাড দিয়ে মাথার উপর রড ধরে বলে, ‘এখনই কিন্তু বাড়ি দিচ্ছি, দ্রুত দস্তখত কর'।
১৮ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসীরা হুজুরকে সারাদিন কোনো ঔষধ বা খাবার খাওয়াতে দেয়নি। দুই দিনের মানসিক নির্যাতন এবং খাবার ও ওষুধ না পেয়ে হজরত পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে বমি করেন, মুখ দিয়ে অনবরত ফেনা বের হচ্ছিল। একসময় চোখ বন্ধ করে ফেলেন শেষবারের মতো।
নিরুপায় হয়ে নাতি আরশাদ ও খাদেম শফিউল হযরতকে বাঁচাতে সন্ত্রাসীদের হাতে পায়ে ধরে। এভাবে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা চলে যায়। সন্ত্রাসীরা বলতে থাকে, চিকিৎসার দরকার নেই, হুজুর মারা গেলে এখানেই মারা যাবে।
মাওলানা নোমান ফয়েজীর কাছে আবেদনঃ
হজরতের বড় নাতি সন্ত্রাসীদের সাথে থাকা মাওলানা নোমান ফয়েজীকে বলেন যে কোন উপায়ে হজরতকে হাসপাতালে নিতে। তিনি পাষণ্ডের মতো বলেন, এখন তোমার দাদুকে দস্তখত করতে বলো তারপর যা হবার হবে। তখন নাতি আরশাদসহ খাদেমরা বলেন, ‘দাদুর অবস্থা বেশি খারাপ। আপনারা যা ইচ্ছে করেন, প্রয়োজনে তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
তখন তারা ঘোষণা দেয়, হুজুর পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু হজরতে আসলে এ ব্যাপারে কিছু বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না, কোনো। দস্তখত করার তো প্রশ্নই উঠে না। দস্তখত করার আগেই তিনি চোখ বন্ধ করে ফেলেন।
হুজুরকে বের করতে "আমিরের" নির্দেশের অপেক্ষা
সন্ত্রাসীরা মোবাইলে ভয়েসবার্তা অনুসারে কাজ করছিল। তাদের কাছে ফের আকুতি জানালে তারা বলে, এইমাত্র আমিরের নির্দেশ এসেছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে হুজুরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য। তবে আমাদেরকে বলা হয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স আসার আগে হুজুর সুস্থ আছেন এ মর্মে মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রচার করতে হবে।
তখন তারা একটি ভিডিও করে এবং ভিডিওতে বলে, হুজুর সুস্থ আছেন এবং ঘুমাচ্ছেন। অথচ তখন হজরতের জীবনপ্রদীপ নিবু নিবু অবস্থায়। হজরত বেহুশ ছিলেন, মুখ দিয়ে অনবরত ফেনা বের হচ্ছিল।
অ্যাম্বুলেন্স আসার পর আন্দোলনকারীদের একজন এসে বলে, হুজুরের সাথে শুধুমাত্র একজন যেতে পারবে। তখন নাতি ও খাদেম শফিউল বলে, হজরতের সার্বিক দেখভাল করা একজন দ্বারা সম্ভব নয়। কমপক্ষে ৩ জনকে যেতে দিন। আন্দোলনকারীরা ফোনে তাদের আমিরের সাথে কথা বলে হজরতের সাথে অ্যাম্বুলেন্সে খাদেম শফি যেতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত জানায়।
মাদরাসার প্রধান গেটে অ্যাম্বুলেন্সে বাধা
অ্যাম্বুলেন্স মাদরাসার কবরস্থানের গেট সংলগ্ন বাইতুল আতিক মসজিদের সামনে রাখায় বিলম্ব ঘটে। স্ট্রেচারে নেয়ার সময় হজরতের মুখে অক্সিজেন লাগানো ছিলো, তারা মুখ থেকে টান মেরে এক্সিজেন খুলে ছিড়ে ফেলে। খাদেম হুজাইফা হজরতের সাথে উঠেছিলেন, তাকে টেনে হিঁচড়ে মারধর করে নামিয়ে দেয়। শুধু নাতি আরশাদ একাকী হজরতকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা করা মাত্র আন্দোলনকারীরা নতুন দাবি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে। তারা বলতে থাকে, যদি স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই মর্মে স্বাক্ষর না করে যে, ভবিষ্যতে আন্দোলনকারীদের কোনো ক্ষতি হবে না, ততক্ষণ অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেয়া হবে না। তখন সময় রাত ১১টার উপর। অথচ হজরত স্ট্রোক করেন সাড়ে আটটা থেকে নয়টার দিকে। হজরতের অক্সিজেনের তার ছিড়ে ফেলায় অবস্থা আরও গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যায়। হুজুর একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। ওসি সাহেবের সাথে আন্দোলনকারীদের মিটিং শেষ হলে হজরতের অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দিতে মসজিদের মাইকে কয়েকবার ঘোষণা দেয়া হয়।
রাত ১টা ৩০ মিনিটে হজরতকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা চলতে থাকে। পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, দুপুর ১২টায় ডাক্তারগণ জানান, আমাদের চেষ্টা ব্যর্থ।
শুক্রবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসে। হজরতকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উঠানোর সময় নাজুক দেখাচ্ছিল। সন্ধ্যা ৬টার আগেই ঢাকায় পৌছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এবং হজরতকে আসগর আলী হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। কিছুক্ষণ পর ছোট ছেলে আনাস মাদানীর হাতের উপর হজরত ইন্তেকাল করেন।
শেয়ার করুন
সেবা ডেস্ক: দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে ‘সরকার পরিবর্তন আন্দোলন’র সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে পাওয়া কারণ দর্শানো (শোকজ) নোটিসের জবাব দিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
আজ শনিবার বেলা ১১টায় বনানীর নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে শোকজের জবাব দেন তিনি।
লিখিত জবাবের শুরুতেই মেজর হাফিজ বলেন, ‘আমি একজন যুদ্ধাহত, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। বিজয়ের মাসে বুদ্ধিজীবী দিবসে অসৌজন্যমূলক ভাষায় অসত্য অভিযোগ সম্বলিত কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়ে হতবাক হয়েছি। ২৯ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আমার যোগদানের তারিখ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পাওয়ার তারিখ, আমার নামের বানানসহ অনেক ভুলই রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে দৃশ্যমান।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপিতে যোগদানের পূর্বেই আমি তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। ১৯৯১ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়ে বিএনপিতে যোগদান করেছিলাম। বিগত ২২ বছর ধরে দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। দলের ভাইস চেয়ারম্যানকে একজন যুগ্ম মহাসচিব (আদিষ্ট না হয়েও) এমন কঠিন, আক্রমণাত্মক ভাষায় কৈফিয়ত তলব করায় অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি।’
‘এখানে প্রটোকল ও সৌজন্যের ব্যত্যয় ঘটেছে। ব্যক্তি রুহুল কবির রিজভী একজন ভদ্র, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী নেতা। তার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। তার কাছ থেকে এ ধরনের চিঠি আশা করিনি।’
প্রসঙ্গ বিএনপি, জামায়াত, ঐক্যফ্রন্ট ও বামসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও কিছু পেশাজীবী নেতা ‘সরকার পতন’র দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বলে বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার করা হয়। এজন্য ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে বেছে নেয়া হয়।
এ কর্মসূচিতে অংশ না নিতে শেষ মুহূর্তে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের কঠোর বার্তা দেয়া হয়। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে হাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদ ওই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হন। এ কারণে তাদের শোকজ করা হয়। হাফিজ উদ্দিনকে ৫ দিন ও শওকত মাহমুদকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়।
গত বুধবার রাতে শওকত মাহমুদের একান্ত সহকারী আবদুল মমিন নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোকজের জবাব পৌঁছে দেন।
শেয়ার করুন
সেবা ডেস্ক: দ্বিতীয় ধাপে সারাদেশের ৬১ পৌরসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর নামের তালিকা ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
শুক্রবার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
৬১ পৌরসভায় যারা মনোনীত হয়েছেন:
শরীয়তপুরে পারভেজ রহমান, গাইবান্ধায় শাহ মাহমুদ জাহাঙ্গীর কবীর, বগুড়ার শেরপুরে মো. আব্দুস সাত্তার, সারিয়াকান্দিতে মো. আলমগীর শাহী, সান্তাহারে মো. আশরাফুল ইসলাম মন্টু, নওগাঁর নজিপুরে মো. রেজাউল কবীর চৌধুরী, রাজশাহীর কাকনহাট পৌরসভায় এ কে এম আতাউর রহমান খান, ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় মো. আ. মালেক, আড়ানীতে মো. শহীদুজ্জামান, নাটোরের নলডাঙ্গায় মো. মনিরুজ্জামান মনির, লালপুরের গোপালপুর পৌরসভায় কাজী আসিয়া জয়নুল, গুরুদাসপুরে মো. শাহনেওয়াজ আলী, সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, উল্লাপাড়ায় এস এম নজরুল ইসলাম, বেলকুচিতে বেগম আশানুর বিশ্বাস, রায়গঞ্জে মো. আব্দুল্লাহ আল পাঠান, দিনাজপুর সদর পৌরসভায় রাশেদ পারভেজ, বিরামপুর পৌরসভায় মো. আক্কাস আলী, বীরগঞ্জে মো. নূর ইসলাম, নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাফিফা আক্তার জাহান, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মো. ফরহাদ হোসেন ধলু, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে মো. আব্দুল্লা আল মামুন, কাজীপুরে মো. আব্দুল হাননান তালুকদার, ঈশ্বরদীতে মো. ইছাহক আলী মালিথা, পাবনার ফরিদপুর পৌরসভায় খন্দকার মো. কামরুজ্জামান মাজেদ, সাঁথিয়ায় মাহবুবুল আলম, ভাঙ্গুড়ায় মো. গোলাম হাসনাইন, সুজানগরে মো. রেজাউল করিম, খুলনার গাংনীতে মো. আলী, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মো. সামছুজ্জামান অরুন, ভেড়ামারায় মো. শামিমুল ইসলাম ছানা, মিরপুরে মোহা. এনামুল হক, ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কাজী আশরাফুল আজম, বাগেরহাটের মোংলা পোর্টে শেখ আব্দুর রহমান, মাগুরা পৌরসভায় মো. খুরশীদ হায়দার টুটুল।
বরিশালের পিরোজপুরে মো. হাবিবুর রহমান মালেক, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে মো. মনজুরুল ইসলাম তপন, কিশোরগঞ্জ জেলার কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় মো. পারভেজ মিয়া, কুলিয়ারচরে সৈয়দ হাসান সরোয়ার মহসিন, ঢাকার সাভারে হাজী আব্দুল গনি, নরসিংদীর মনোহরদীতে মোহাম্মদ আমিনুর রহমান রশিদ, নারায়ণগঞ্জের তারাব পৌরসভায় হাছিনা গাজী, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মো. সেলিম রেজা, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মো. বিল্লাল হোসেন সরকার, ফুলবাড়ীয়ায় মো. গোলাম কিবরিয়া, নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে লতিফুর রহমান রতন, কেন্দুয়ায় মো. আসাদুল হক ভুঞা।
সিলেটের সুনামগঞ্জে নাদের বখত, ছাতকে মো. আবুল কালাম চৌধুরী, জগন্নাথপুরে মিজানুর রশীদ ভুঁইয়া, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মো. জুয়েল আহমেদ, কুলাউড়ায় সিপার উদ্দিন আহমদ, হবিগঞ্জের মাধবপুরে শ্রীধাম দাস গুপ্ত, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে গোলাম রসুল রাহেল চৌধুরী।
কুমিল্লার চান্দিনায় মো. শওকত হোসেন ভুঁইয়া, ফেনীর দাগনভুঁইয়ায় ওমর ফারুক খান, নোয়াখালীর বসুর হাটে আবদুল কাদের।
চট্টগ্রামের সন্দীপে মোক্তাদির মওলা সেলিম, খাগড়াছড়িতে নির্মলেন্দু চৌধুরী, লামায় মো. জহিরুল ইসলাম।