
কবির, বদি, সজল, তাপস ও শামসু কমান্ডো বাহিনীর পাঁচজন, কিন্তু তারা একজন আরেকজনকে মিশনের সময়ে বিশেষ কল সাইন ধরে ডেকে থাকেন। মধুমতী নদীর পাশে শনির চর গ্রামে একটা স্কুল পাক সেনারা ক্যাম্প করেছে। এটি দখল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধাদের এ দল।
একটি মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো ঘটনা, গল্প বা উপন্যাসের শুরু মনে হলেও আসলে তা নয়, এটি হলো গৌরবময় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরি ‘হিরোজ অব ৭১’ গেমসের পটভূমি। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের জন্য গেইমটি তৈরি করেছে দেশীয় অ্যাপ্লিকেশন গেইম নিমার্তা প্রতিষ্ঠান পোর্টব্লিস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে গেমটি উন্মুক্ত করা হবে।
গেমটিতে ১৬টি ডিফিকাল্ট লেভেল আছে। গেমাররা তিনটা ক্যারাক্টার নিয়ে খেলতে পারবেন এবং তাকে এ তিনটি ক্যারাক্টারের অস্ত্র ও দক্ষতা ব্যবহার করে ক্যাম্প রক্ষা করতে হবে।
ক্রমাগতভাবে পাকিস্তানি সেনা আসতে থাকবে। গেমারকে এদেরকে মারতে হবে। প্রথম লেভেলে অল্পকিছু সৈন্য আসবে, পরে সেনার সংখ্যা, অস্ত্রের ড্যামেজ, প্রকারভেদ বাড়তে থাকবে। ১৬টি লেভেল পার করতে পারলেই গেমার ক্যাম্পকে রক্ষা করতে পারবেন।
দুই বছর আগে গেমটি তৈরির আইডিয়া এসেছিল পোর্টব্লিসের প্রধান নির্বাহী মাশা মুস্তাকিম ও তাঁর দলের মাথায়। শুরুতে আইডিয়া ছিল বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ অথবা মোস্তফা কামালের জীবনের শেষ যুদ্ধকে একটা ইনফিনিট শুটার টাইপ গেমে তুলে আনবেন। তবে সেসময় প্রতিষ্ঠানে ভালো থ্রিডি আর্টিস্ট এবং যথেষ্ট প্রোগ্রামার না থাকার কারণে তখন এটি হয়ে ওঠেনি।
মুস্তাকিম বলেন, চলতি বছর অক্টোবর থেকে তারা বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের যুদ্ধকালীন একটি ঘটনার সঙ্গে কল্পনার মিশেল ঘটিয়ে গল্প তৈরি করে পুরোদমে কাজ শুরু করেন। স্বল্প সুযোগ সুবিধার কারণে ওই বীরশ্রেষ্ঠের আসল ঘটনা নিয়ে কাজ করার সাহস হয়নি বলে জানান তিনি।
এ ডেভেলপার আরও জানান, যে পরিমাণে ইতিহাস জ্ঞান এবং এ ঘটনা নিয়ে গবেষণা ও তথ্যের প্রয়োজন ছিল সেটা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আমরা চাইনা আমাদের তরুণ প্রজন্ম ভুল জিনিস দেখুক। আরও একটি ব্যাপার হলো, আমাদের তরুণ প্রজন্মকে পাকিস্তানিদের কাছে হারতে দিতে চাই না বলে অন্য ঘটনার প্রেক্ষাপট ব্যবহার করা হয়েছে।
গেমটি জনপ্রিয়তা পাবে আশা করে মুস্তাকিম বলেন, গেমারের কাছে যে কোনো গেইমের নূন্যতম গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে অনেক কিছু করতে হয়। আর মুক্তিযুদ্ধের মত বিশাল এবং স্পর্শকাতর একটা প্রেক্ষাপটে এটা আরও কঠিন। আমরা এজন্য এ মূহুর্তে ছোট একটি কাহিনী এবং গেমপ্লে নিয়ে গেমটা তৈরি করেছি। গেমারদের চাহিদা এবং সাড়া পেলে গেমটাকে পরের সংস্করণগুলোতে পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
‘পোর্টব্লিস গেমস’-এর গেমটি নির্মাণে কাজ করেছেন রাকিবুল আলম সুলভ, অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী, আরিফুর রহমান, পাপন জিত দে, রিহাব উদ্দীন শাওনসহ আরও অনেক তরুন গেম নির্মাতা । গেমটি ১৬ ডিসেম্বর গুগল প্লে’তে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তবে দ্রুতই উইন্ডোজ ফোন ও অ্যাপলের আইওএস অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য এর সংস্করণ আনা হবে বলে জানানো হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে।

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।