স্কুল ব্যাংকিংয়ের জন্য বাংলাদেশ পুরস্কৃত

S M Ashraful Azom
0

স্কুল ব্যাংকিংয়ে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘চাইল্ড এন্ড ইউথ ফাইন্যান্স ইন্টারনাশনাল কান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। শিশুদের আর্থিক সেবায় অন্তর্ভুক্ত করায় চাইল্ড এন্ড ইউথ ফাইন্যান্স ইন্টারনাশনাল (সিওয়াইএফআই) এ পুরস্কার প্রদান করেছে।
 
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হাউজ অব লর্ডস-এ অনুষ্ঠিত চতুর্থ বার্ষিক চাইল্ড এন্ড ইউথ ফাইন্যান্স ইন্টারনাশনাল অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও হাউজ অব লর্ডস এর সদস্য র‌্যারোনেস হাওয়ার্থ অব ব্রেকল্যান্ড এর কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রহিম। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ পুরস্কার প্রাপ্তিতে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে ভারত ও ফিজিকে। 
 
উল্লেখ্য, আর্থিক শিক্ষা কর্মসূচিতে অবদান রাখায় গত বছর এ অঞ্চল থেকে সিঙ্গাপুরকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, পুরস্কার প্রদানের সময় লেডি হাওয়ার্থ বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির, বিশেষ করে প্রায় ১০ লাখ শিশুদের আনুষ্ঠানিভাবে আর্থিক ব্যবস্থায় নিয়ে আসার জন্যে ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই শিশুরা বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যাংকে সঞ্চয় করে। 
 
তিনি বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ আর্র্থিক অন্তর্ভুক্তির আন্দোলনে এখন রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত, বহুমাত্রিক উদ্ভাবনীমূলক কৌশল গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কর্মসূচিকে বিপুলভাবে সার্থক করেছে। এমনকি পথ শিশুদেরও এ কর্মসূচিতে সংযুক্ত করেছে।
 
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে প্রথম নির্দেশনা জারির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিংয়ে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে, যা দেশটির আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচির অন্যতম মূল উপাদান হিসেবে স্বীকৃত। এখন আঠারোর কম বয়সী ছাত্রছাত্রীরা মাত্র একশ টাকা জমায় যে কোনো ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে পারে। এসব হিসাবে কোনো চার্জ বা ফি নেয়া হয় না। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ ছাত্রছাত্রী স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খুলেছে। তাদের হিসাবগুলোতে জমার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে সাতশ কোটি টাকা। 
 
এছাড়া, ২০১৪ সালে কর্মজীবী পথশিশুদেরও প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবার আওতায় আনা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা এখন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে স্কুল-কলেজের বেতনাদী পরিশোধ করতে পারছেন।
 
এবারের পুরস্কার অর্জনের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, এটি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরেকটি মাইলফলক অর্জন, যা বাংলাদেশকে ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তির রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিত করবে। 
 
তিনি আরো বলেন, এই পুরস্কার আমাদের উন্নয়নমুখী কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং ধারণায় নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে এবং মননীয় প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্পে যেমনটি উল্লেখ করা আছে সেই ধারার ব্যাপকভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
 
উল্লেখ্য, চাইল্ড এন্ড ইউথ ফাইন্যান্স ইন্টারনাশনাল ইউরোপের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান যারা সারা বিশ্বে ১২৫টি দেশের তিন কোটি ৬০ লাখ শিশু ও যুবকদের নিয়ে কাজ করে। এদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি তাদের প্রধান লক্ষ্য। তারা বৃহৎ পরিসরে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখার জন্য ব্যক্তি, সরকারি সংস্থা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সুশীল সমাজের সংগঠনকে পুরস্কৃত করে থাকে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top