পাঁচ বছরেও ওয়ার্ড বিভাজন সম্ভব হয় নি
দুই ইউপি সদস্য দিয়ে চলছে বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম
জানা গেছে, ২০১১ সালে জুন মাসে বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি নেতা ফকরুজ্জামান মতিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। এরপর ২০১৩ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে বকশীগঞ্জ পৌরসভা গঠন করা হয়। এর মধ্যে বকশীগঞ্জ পৌরসভায় ৯ জন সদস্যকে পৌরসভার কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। দুই জন সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করতে থাকে বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের।
২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন ফকরুজ্জামান মতিন । বাকি দুইজন সদস্য হলেন এক নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হাসান ও চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এলাবার্ট হোসেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ফকরুজ্জামান মতিন পদত্যাগ করে মেয়র নির্বাচন করায় চেয়ারম্যানের পদটিও শূন্য হয়ে পড়ে।
এমতাবস্থায় বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হাসান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান।
বর্তমানে একজন সদস্য ও একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে কোনো রকমে চলছে এই ইউনয়ন পরিষদের কাজ।
অভিযোগ রয়েছে, বকশীগঞ্জ পৌরসভা গঠনের সময় নিয়মনীতি না মেনে পৌর এলাকায় কয়েকটি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে করে আট টি গ্রামের সাড়ে সাত হাজার ভোটার নিয়ে নতুন করে বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা হয়।
এ কারণে বকশীগঞ্জ পৌরসভার গঠনের পর পাঁচ বছর পার হলেও বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বার বার বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা নির্ধারণ , ওয়ার্র্ড বিভাজন করার নির্দেশনা দিলেও স্থানীয় প্রশাসন অদ্যাবধি সীমানা নির্ধারণ করতে পারেন নি।
ফলে একদিকে যেমন নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অন্যদিকে উন্নয়ন বঞ্চিত ও নাগরিক সেবা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের।
এ ছাড়াও বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় বকশীগঞ্জ পৌরসভার ভবনে তাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হাসান জানান, বকশীগঞ্জ পৌরসভা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আজও সীমানা জটিলতা নিরসন , ভোটার সংশোধন ও ওয়ার্ড বিভাজন করা সম্ভব হয় নি। তবে স্থানীয় নাগরিকরা শতভাগ সুবিধা পাচ্ছেন বলে দাবি করেন এই জনপ্রতিনিধি।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু হাসান সিদ্দিক জানান, বকশীগঞ্জ পৌরসভা গঠন করতে গিয়ে ইউনিয়নটি এতো ছোট করা হয়েছে যে এখন ওয়ার্ড বিভাজন ও সীমানা নির্ধারনে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ঈদের পর গণসমাবেশ করে সীমানা নির্ধারণ সহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।
অবিলম্বে এই ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণ, ওয়ার্ড বিভাজন ও ভবন নির্মাণ করে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করার দাবি জানিয়েছেন অবহেলিত বকশীগঞ্জ ইউনিয়নের সচেতন মানুষ। একই সঙ্গে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ জরুরী হয়েছে।