
মো. শাহ্ জামাল, জামালপুর সংবাদদাতা: ১৯৭১ সাল। সারাদেশে তুমুল যুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং শেষে বুকের উপর ধর্মগ্রন্থ দিয়ে দেশ মুক্তির শপথ বাক্য পাঠ। দেশ প্রেমের চেতনায় উদ্ধোদ্ধ হয়ে যুদ্ধ এবং শহীদের স্বাদ একমাত্র মুক্তিযোদ্ধারাই উপভোগ করেছেন। বিশ^বিবেকের জানান দিল, দেশজুড়ে পাকসেনাদের লুট-তরাজ, নারী নির্যাতনের বিভিষিকার ঘটনা। ভূক্তভোগিরা নিজেদের সংবরণ-বাকশক্তি হারিয়ে যাবার মুহুর্তটি। অবশেষে বাংলার দামাল ছেলেরা দলে দলে যোগ দিতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধে। যুদ্ধ চলতে চলতে কেটে গেল ৮মাস। নবম মাস ডিসেম্বরে দু’এক জায়গায় মুক্ত হবার খবর আসছে। সারাদেশের ন্যায় জামালপুরের মেলান্দহের চিত্রটি ছিল ঐতিহাসিক অধ্যায়। যা মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রে বিস্তর বিবরণ নাআসলেও খন্ড খন্ড ঘটনা স্থান পেয়েছে। আবার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা অন্তরালেই রয়েছে।
এরমধ্যে জামালপুর-শেরপুরের প্রথম অপারেশন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ২৫জুন/৭১ মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, মজিবুর রহমান ফারাজী, আলম, রইচ উদ্দিন, আ: কুদ্দুস, আসাদুল্লাহ, মানিকুল ইসলাম মানিকসহ ৭জনে এই অপারেশন করেন। তাঁরা জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ের দাগি-বানিপাকুরিয়া নামক রেলওয়ে ব্রিজটি ধ্বংশ করেন। ব্রিজটি ধ্বংশের পর এলাকায় অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। আশপাশের এলাকায় বাড়ি-ঘর পুড়ে দেয়।
এ সময় মুক্তিফৌজের গুপ্তচর সন্দেহে বানিপাকুরিয়া গ্রামের দু’সহোদর ওমর আলী-সৈবালিকে দেওয়ানগঞ্জে কয়লা ইঞ্জিনে আটকে রাখে। সন্ধ্যায় দু’ভায়ের সামনে জীবন্ত একজনকে জ্বলন্ত কয়লা ইঞ্জিনে ফেলে হত্যা করে। এরপর দুই ভাইকে পুড়ে মারার জন্য এক ড্রাইভারকে পাহারায় রাখা হয়। ওদিকে ওমর আলীর কুলের শিশু শাহ্ জামালকেও মায়ের কাছ থেকে কেড়ে ক্যাম্পে নিয়ে পাথরে নিক্ষেপ করে। বানিপাকুরিয়ার আ: সামাদ ডাক্তার, মালঞ্চ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আ: করিমের পিতা শমসের, আ: মজিদ রিলিফ চেয়ারম্যান এবং ডাক্তার মুকুন্দ লাল রায়ের বাড়ি পুড়ে দিয়েছে। আ: মজিদের বছরবান্ধা কামলা ওমর আলীকে হত্যা শেষে শমসের আলী মন্ডলকে ধরে নিয়ে যায়। এ খবরে শিশুর মা-সালেহা বেগম, দাদি হাজিরণ বেওয়া এবং বড় বোন রমিছা খাতুন অজ্ঞান হয়ে মারা যান। পরে দিনমজুর জালাল উদ্দিনের সহায়তায় শিশুকে উদ্ধার করে মায়ের বুকে ফেরত পেলেও; দাদি-বোন চির বিদায় নেন। মৃত্যুর শোকে আকাশ-বাতাস ভারী করে তোলেছে।
অপরদিকে বাঙ্গালী ড্রাইভারের সহায়তায় রাতের অন্ধকারে দুই ভাই ভোরে বাড়িতে এসে এ নির্মম মৃত্যুর শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতি শব্দ করে কান্নাকাটি করারও সাহস ছিল না। কাফনের কাপড়ের অভাবে তাঁদেরকে কাঁথামোড়া দিয়ে দাফন করা হয়। দেশ স্বাধীনের পরে জানাজানি হয়, দেওয়ানগঞ্জে কয়লার ইঞ্জিনে পুড়িয়ে মারা ব্যক্তির নাম ছিল তুফানু। অপারেশনে অংশগ্রহণকারি আবুল হোসেন ও আ: কুদ্দুস জানান-অপারেশন শেষে রাতে বাঘাডোবা গ্রামের সুলতান পুলিশের বাড়িতে রাত যাপন করেছেন। পরদিন সকালে কবুতর ভাজি দিয়ে নাস্তা করেন। সুলতান পুলিশ দেশ স্বাধীনের আগে মুক্তিবাহিনীদের মেলান্দহ উমির উদ্দিন পাইলট স্কুল মাঠে গেরিলা ট্রেনিং করাতেন। ২৯জুন/৭১ হাটুরেদের সাথে মিশে পায়ে হেঁটে তারা ভারতের পৌছেন। বিএসএফ’র ক্যাপ্টেন ধন বাহাদুর এই ৭জনকে হাবিলদার নিয়োগীর কাছে নেয়া হলে; নিয়োগী বলেন-তোমাদের কৃতিত্বের সংবাদ বিবিসি-স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার হয়েছে।
⇘সংবাদদাতা: মো. শাহ্ জামাল
এরমধ্যে জামালপুর-শেরপুরের প্রথম অপারেশন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ২৫জুন/৭১ মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, মজিবুর রহমান ফারাজী, আলম, রইচ উদ্দিন, আ: কুদ্দুস, আসাদুল্লাহ, মানিকুল ইসলাম মানিকসহ ৭জনে এই অপারেশন করেন। তাঁরা জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ের দাগি-বানিপাকুরিয়া নামক রেলওয়ে ব্রিজটি ধ্বংশ করেন। ব্রিজটি ধ্বংশের পর এলাকায় অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। আশপাশের এলাকায় বাড়ি-ঘর পুড়ে দেয়।
এ সময় মুক্তিফৌজের গুপ্তচর সন্দেহে বানিপাকুরিয়া গ্রামের দু’সহোদর ওমর আলী-সৈবালিকে দেওয়ানগঞ্জে কয়লা ইঞ্জিনে আটকে রাখে। সন্ধ্যায় দু’ভায়ের সামনে জীবন্ত একজনকে জ্বলন্ত কয়লা ইঞ্জিনে ফেলে হত্যা করে। এরপর দুই ভাইকে পুড়ে মারার জন্য এক ড্রাইভারকে পাহারায় রাখা হয়। ওদিকে ওমর আলীর কুলের শিশু শাহ্ জামালকেও মায়ের কাছ থেকে কেড়ে ক্যাম্পে নিয়ে পাথরে নিক্ষেপ করে। বানিপাকুরিয়ার আ: সামাদ ডাক্তার, মালঞ্চ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আ: করিমের পিতা শমসের, আ: মজিদ রিলিফ চেয়ারম্যান এবং ডাক্তার মুকুন্দ লাল রায়ের বাড়ি পুড়ে দিয়েছে। আ: মজিদের বছরবান্ধা কামলা ওমর আলীকে হত্যা শেষে শমসের আলী মন্ডলকে ধরে নিয়ে যায়। এ খবরে শিশুর মা-সালেহা বেগম, দাদি হাজিরণ বেওয়া এবং বড় বোন রমিছা খাতুন অজ্ঞান হয়ে মারা যান। পরে দিনমজুর জালাল উদ্দিনের সহায়তায় শিশুকে উদ্ধার করে মায়ের বুকে ফেরত পেলেও; দাদি-বোন চির বিদায় নেন। মৃত্যুর শোকে আকাশ-বাতাস ভারী করে তোলেছে।
অপরদিকে বাঙ্গালী ড্রাইভারের সহায়তায় রাতের অন্ধকারে দুই ভাই ভোরে বাড়িতে এসে এ নির্মম মৃত্যুর শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতি শব্দ করে কান্নাকাটি করারও সাহস ছিল না। কাফনের কাপড়ের অভাবে তাঁদেরকে কাঁথামোড়া দিয়ে দাফন করা হয়। দেশ স্বাধীনের পরে জানাজানি হয়, দেওয়ানগঞ্জে কয়লার ইঞ্জিনে পুড়িয়ে মারা ব্যক্তির নাম ছিল তুফানু। অপারেশনে অংশগ্রহণকারি আবুল হোসেন ও আ: কুদ্দুস জানান-অপারেশন শেষে রাতে বাঘাডোবা গ্রামের সুলতান পুলিশের বাড়িতে রাত যাপন করেছেন। পরদিন সকালে কবুতর ভাজি দিয়ে নাস্তা করেন। সুলতান পুলিশ দেশ স্বাধীনের আগে মুক্তিবাহিনীদের মেলান্দহ উমির উদ্দিন পাইলট স্কুল মাঠে গেরিলা ট্রেনিং করাতেন। ২৯জুন/৭১ হাটুরেদের সাথে মিশে পায়ে হেঁটে তারা ভারতের পৌছেন। বিএসএফ’র ক্যাপ্টেন ধন বাহাদুর এই ৭জনকে হাবিলদার নিয়োগীর কাছে নেয়া হলে; নিয়োগী বলেন-তোমাদের কৃতিত্বের সংবাদ বিবিসি-স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচার হয়েছে।
⇘সংবাদদাতা: মো. শাহ্ জামাল
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।