প্রায় ৭ হাজার গাছে পূর্ণ বিদ্যালয়টি প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার পেল

S M Ashraful Azom
0
প্রায় ৭ হাজার গাছে পূর্ণ বিদ্যালয়টি প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার পেল
সেবা ডেস্ক: বৃক্ষ রোপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃক তৃতীয় বারের মতো জাতীয় পদক অর্জন করলো রাউজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুরো এলাকাবাসী। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের উত্তরে চারাবটতল বাজারের পাশেই জংগল রাউজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। হঠাৎ দেখলে মনে হবে সবুজে ঘেরা কোনো বন। কিন্তু গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই ভেঙে যাবে ভুল। রাস্তার দু’পাশে গাছের সারি। এর মাঝে ঝুলছে বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড। এ রাস্তা ধরে কয়েক মিনিট হাঁটার পর দেখা যায় স্কুলের মূল ক্যাম্পাস। এখানে অপেক্ষা করছে আরও বিস্ময়। আম, জাম, লিচু থেকে শুরু করে শতাধিক ফলদ গাছ শোভা পায় সারিবদ্ধভাবে।

বিদ্যালয়ের অতিথিকে স্বাগত জানাতে সেজেগুজে আছে যেন গোলাপ, গাঁদা, কৃষ্ণচূড়া। এভাবে স্কুল প্রাঙ্গণকে বাগান বানানোয় মিলেছে দারুণ এক স্বীকৃতি। এবার প্রধানমন্ত্রী পদক পেয়েছে জংগল রাউজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

গত ২০ জুন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে বিদ্যালয় ক্যাটগরিতে প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ। প্রতিবছর বৃক্ষরোপণে ১০ ক্যাটাগরিতে প্রধানমন্ত্রী পদক দেয়া হয়। এবার ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানসহ মোট ২৬ জনকে দেয়া হয় এ পদক। শুধু প্রথম স্থান অধিকারী ১০ জনকে ওই দিন পুরস্কার দেয়া হয়। বাকি পুরস্কারপ্রাপ্তদের বৃক্ষমেলার সমাপনী দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার দেয়া হবে। প্রথম পুরস্কার বিজয়ীদের দেয়া হয় ৩০ হাজার টাকা ও সনদ, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ীকে ২০ হাজার এবং তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ীকে ১৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন, আমি এর আগে আরও দুইবার বৃক্ষরোপণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছি। চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আমি। বৃক্ষের প্রতি ভালোবাসার কারণে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সবুজায়নের প্রতি নজর দিই। আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও এসব প্রতিষ্ঠানের বাগানের জন্য খরচ করে থাকি। সবাই যদি এভাবে এগিয়ে আসে তাহলে সবুজে কমতি হবে না দেশে।

জানা যায়, স্কুলের দুটি ভবনের সামনে রয়েছে সবুজ মাঠ। মাঠের চারদিকে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আবার সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য টবে করে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারাও। এভাবে বিভিন্ন প্রজাতির সাড়ে ছয় হাজার বৃক্ষরোপণের জন্য এবার বিদ্যালয়টি পায় প্রধানমন্ত্রীর পদক।

২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিদ্যালয় এবং সড়কের ধারে প্রায় ৩ হেক্টর পরিমান জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগান শুরু করা হয়। বাগানে রয়েছে ৬ হাজার ৬০০ টি ফলদ, বনজ, ভেষজ, শোভাবর্ধনকারী, দেশিয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায়, দেশি-বিদেশি প্রজাতির মধ্যে দেবদারু, অর্জুন, বকুল, কদম, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, রাধাচূড়া, আগর, বৈলাম, সিভিট, গর্জন, সেগুন, গামার, মেহগিনি, চিকরাশি, কড়ই, আকাশমনি, সরিফা, জলপাই, আমড়া, আতা, লিচু, হরিতকি, আমলকি, বহেরা, বেল, নিম, তুলশী, পেয়ারা, জাম, আম, কাঁঠাল ইত্যাদি বৃক্ষরাজী, লতা, গুল্ম। বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত পরিচর্যা করেন এ বাগানের।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নকশাকার দেবাশীষ দত্ত বলেন, দচট্টগ্রাম থেকে প্রতিবারেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর পদক পেয়ে থাকেন। এবারও চট্টগ্রাম থেকে বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার পাচ্ছেন বিদ্যালয়টি। আমরা অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেখান থেকে চূড়ান্তভাবে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top