সেবা ডেস্ক: হুট করে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে অধিকাংশ মানুষ কী করে? দৌড়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করে। মুখে ফুটে ওঠে বিরক্তির ছাপ:
► “উফ! বৃষ্টি হচ্ছে।”.
► “বৃষ্টি আসার আর সময় পেলো না?”
► “ধ্যাৎ! মরার বৃষ্টির জন্য দিনটাই মাটি।”
কোনোরকমে গা বাঁচিয়ে বাসায় গিয়ে হাই ভলিউমে গান শুনে বাঙালিরা বৃষ্টিবিলাস করে। একটু শৌখিন হলে হয়তো ভুনা খিচুড়ি খেয়ে ঝাড়া ঘুম।
.
আচ্ছা! বৃষ্টি এলে রাসূলুল্লাহ (সা.) কী করতেন? তিনি কিন্তু মোটেও পালিয়ে যেতেন না; বরং প্রচণ্ড খুশি হতেন। খুব সাবধানতার সাথে তিনি তাঁর পবিত্র দেহের কিছু অংশ উন্মুক্ত করে বৃষ্টির পরশ বোলাতেন।
.
আনাস (রাঃ) বলেন, “আমরা যখন রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাথে ছিলাম, তখন বৃষ্টি এলো। তিনি শরীরের কিছু অংশ উন্মুক্ত করে বৃষ্টিকে অনুভব করলেন। আমরা বললাম, “হে রাসূলুল্লাহ ﷺ, আপনি এমন কেনো করলেন?”
তিনি বললেন, “এটা (এই বৃষ্টি) এক্ষুণি আমার রবের পক্ষ থেকে এসেছে।” (সহীহ মুসলিম: ৮৯৮)
.
ইমাম নববী (রহঃ) এ হাদিসের ব্যাপারে বলেন, “এই হাদিসটি তাদের জন্য দলিল যারা বলে, বৃষ্টির শুরুতে নিজের সতর ছাড়া শরীরের অন্য কোনো অংশ উন্মুক্ত করতে বলা হয়েছে। যাতে করে শরীরে বৃষ্টির পরশ বোলানো যায়।” (শরহু মুসলিম: ৬/১৯৬)
.
ইমাম কুরতুবী (রহঃ) এই হাদিস সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “আমাদের নবী ﷺ বৃষ্টির বারাকাহ পেতে এমনটা করতেন। এর দ্বারা আরোগ্য লাভ করতেন। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বৃষ্টিকে রহমত, মনোরম এবং সংশোধক বলে বর্ণনা করেছেন। এটি জীবন আনয়নকারী। আযাব দূরকারী। এই হাদিস আমাদের আরও শেখায় যে, প্রত্যেকেরই এই বর্ষণকে সম্মান করা উচিত এবং এর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।” (আল-মুফহিম: ২/৫৪৬)
.
সাহাবিরা এই সুন্নাহ অনুসরণে খুবই আগ্রহী ছিলেন। উসমান (রাঃ) বৃষ্টির শুরুতে নিজেকে উন্মুক্ত করতেন। আব্বাস (রাঃ)-ও একই কাজ করতেন। আলী (রাঃ) বৃষ্টির মধ্যে বসে থাকতেন আর বলতেন, “এটা অবশ্যই আরশের (অধিপতির নির্দেশে) এই মাত্রই এসেছে।” (ইবনে আবি শাইবা: ২৬১৭৮)
.
রাসূলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টি শুরু হলে দু‘আ করতেন, “হে আল্লাহ, মুষলধারায় উপকারী বৃষ্টি বর্ষণ করুন।” (সহীহ বুখারী: ১০৩২)
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।