সেবা ডেস্ক: খুলনা জেলার রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলায় প্রায় ছয় লাখ মানুষের বাস। এসব উপজেলার প্রায় সব টিউবওয়েলের পানিতে রয়েছে আর্সেনিক। তাই বিশুদ্ধ পানি পেতে বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করেন এসব উপজেলার ১৭ ইউপির বাসিন্দারা। তবে সেই কষ্ট লাঘবের সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছে। সম্প্রতি তিন উপজেলায় সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য একটি প্রকল্প একনেকে পাঠানো হয়েছে।
রূপসার টিএস বাহিরদিয়া, ঘাটভোগ, নৈহাটি, আইচগাতী, শ্রীফলতলা ইউপির আংশিক, দিঘলিয়ার সেনহাটি বারাকপুর, গাজিরহাট, দিঘলিয়া, যোগীপোল, আড়ংঘাটা, তেরখাদার আজগড়া, মধুপুর, ছাগলাদাহ, বারাসাত, তেরখাদা, সাচিয়াদাহ ইউপির ৮০ শতাংশ অগভীর নলকূপের পানি আর্সেনিকযুক্ত। বিশেষ করে রূপসার খাজাডাঙ্গা, তেরখাদার পারখালী, কোদলা, আদমপুর, আদালতপুর, আড়পাঙ্গাশিয়া গ্রামে বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষ বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করেন।
এদিকে ছয় ইউপির ৪৬ রোগী আর্সেনিকে আক্রান্ত রয়েছেন। আক্রান্ত রোগীদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ওষুধ সরবরাহ নেই। আর্সেনিক আক্রান্তরা হলেন- উপজেলা সদরের ইখড়িকাটেঙ্গা গ্রামের হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী মুন্নী, বারাসাত ইউপির হাড়িখালী গ্রামের ফজলুল কবীর মোল্লার ছেলে আজিজুর রহমান মোল্লা, নাচুনিয়া গ্রামের আতিয়ার রহমান খানের ছেলে কবির খাঁসহ অনেক।
অন্যদিকে উপকূলবর্তী উপজেলা পাইকগাছায় গভীর নলকূপ স্থাপনে সফল হচ্ছে না। পাইকগাছা, দাকোপ ও কয়রায় ৫০ শতাংশ মানুষ বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে। এসব এলাকার মানুষ বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল। পাইকগাছার শামুকপোতা ও বটিয়াঘাটার সুরখালী ইউপির মানুষদের বছরের আট মাস পানি কিনে খেতে হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যানুযায়ী, গত ১০ বছরে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে দিঘলিয়া ও রূপসার ১২ নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আর্সেনিকযুক্ত নলকূপ ব্যবহার না করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ পারভেজ জানান, বিশুদ্ধ পানি সব ধরনের মানবাধিকারের ভিত্তি। সবার জন্য বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে রয়েছে। এবার খুলনার তিন উপজেলায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের লক্ষ্যে তিন হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার এক হাজার ৫০০ পানির ট্যাংক, ৩০টি কমিউনিটি ল্যাট্রিন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নতমানের ল্যাট্রিন, দুই হাজার ২০০ গভীর নলকূপ, এক হাজার ৫০০ ফুট গভীরের ২২৩টি গভীর নলকূপ ও দুই ইঞ্চি ব্যাসের ৫০টি হস্তচালিত পরীক্ষামূলক গভীর নলকূপ স্থাপনের লক্ষ্যে ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে আগামী বছরের শুরুতে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।