
রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): অদম্য মেধাবী সবুজ হোসেন শত বাঁধা পেরিয়ে লেখাপড়ায় সাফল্য অর্জন করেছেন। এবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগও পেয়েছে সবুজ। কিন্তু অর্থের অভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তার মুখের হাসি মলিন হয়ে গেছে। সবুজ হোসেনের বাবা বেলাল হোসেন পেশায় ভ্যান চালক। তার মা ফুলেরা বেগম গৃহিনী। সবুজ হোসেনের বাড়ি বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার জিঞ্জিরতলা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন ছেলে এবং স্ত্রীকে নিয়ে জীর্ণশীর্ণ ঘরে বসবাস করেন ভ্যানচালক বেলাল হোসেন। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। তার সামান্য আয়ে ৫ সদস্যের ওই পরিবারের তিনবেলা দু’মুঠো ভাত খাওয়াই দায়। এ অবস্থায় ছেলের মেডিকেল কলেজে ভর্তির টাকা কিভাবে যোগাড় করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন বেলাল হোসেন।
তিন ভাইয়ের মধ্যে সবুজ দ্বিতীয়। বড় ভাই ফারুক হোসেন ধুনট সরকারি ডিগ্রী কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ছোট ভাই সৈকত ইসলাম ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। বেলাল-ফুলেরা দম্পতি নিজেরা লেখাপড়া না জানলেও লেখাপড়ার মর্ম তারা বোঝেন। তাই শত কষ্ট মাড়িয়ে ৩ ছেলেকে লেখাপড়ার যোগান দিচ্ছেন।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী সবুজ হোসেন। ২০১১ সালে জিঞ্জিরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি তে জিপিএ ৪.৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। এরপর ২০১৪ সালে ধুনট সরকারি এনএই পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসিতে জিপিএ ৫ এবং ২০১৭ সালে একই বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পায় সে। ২০১৯ সালে ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে পাশ করে। চলতি বছর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছে সবুজ। কিন্তু ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যোগাড়ের নূন্যতম সামর্থ্যও নেই তার পরিবারের।
সবুজ হোসেনের বাবা বেলাল হোসেন বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করেও ছেলেদের খেলাপাড়ার খরচের যোগান ঠিকমতো দিতে পারেননি। ছেলে ডাক্তারি কলেজে চান্স পেয়েছে শুনেছেন। কিন্তু অতবড় কলেজে লেখাপড়ার করানোর সামর্থ্য তার নেই। এলাকার বিত্তবানেরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে তবেই তার ছেলের স্বপ্ন পুরণ হবে।
সবুজ হোসেন জানান, ছোটবেলায় এলাকার বড়ভাইদের মুখে মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করে সফলতার গল্প শুনেছেন। তখনই সেখানে ভর্তির সুপ্ত বাসনা মনের মধ্যে তৈরী হয়। নিত্য অভাবী সংসারে তার পথচলা কখনোই মসৃণ ছিল না। শত কষ্টের পর অবশেষে সুবজের মনের সুপ্ত বাসনা পূরণ হয়েছে। ভবিষ্যতে দেশ এবং এলাকার মানুষের পাশে থেকে সেবা করতে চায়। তার লেখাপড়ার খরচ যোগাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা চেয়েছে। (তার বিকাশ নম্বর-০১৭৭৪২৯৬৪০৭)।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।