ভেজাল দুধে গর্ভপাতের আশঙ্কা!

S M Ashraful Azom
0
ভেজাল দুধে গর্ভপাতের আশঙ্কা!
সেবা ডেস্ক: আমাদের শরীরে আমিষের চাহিদা পূরণে দুধের ভূমিকা অপরিহার্য। তবে আসল দুধ আমরা কতটুকু পাচ্ছি? বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দুধের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে স্টার্চ, ডিটার্জেন্ট, ইউরিয়া, সিন্থেটিক মিল্ক সহ নানা কৃত্রিম উপাদান।

এছাড়াও নানাবিধ কেমিক্যাল, যেমন- সোডিয়াম কার্বোনেট, ফর্মালিন এবং অ্যামোনিয়াম সালফেট বাচ্চাদের শরীরে প্রবেশ করতে করতে নানাবিধ জটিল রোগকে ডেকে আনছে।

শুধু তাই নয়, এমন ভেজাল দুধ খাওয়ার কারণে হবু মায়েদের গর্ভপাতের আশঙ্কাও বাড়ছে চোখে পরার মতো। তাই এখন থেকেই যদি সাবধান হাওয়া না য়ায়, তবে ভিষণ বিপদ! এখন প্রশ্ন হলো, খালি চোখে কীভাবে বুঝবেন, আপনার কেনা দুধ আসল না-কি ভেজাল আছে?

দ্য ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অ্যাথোরিটি অব ইন্ডিয়া (এই এস এস এ আই) এসব ঘরোয়া পদ্ধতিগুলোকে মান্যতা দিয়েছে। তাই আর দেরি না করে নিজের এবং পরিবারের বাকি সদস্য়দের শরীরের কথা ভেবে এখনই জেনে নিন ভেজাল দুধ চেনার সহজ কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে-

পরীক্ষা ১: আজকাল দুধে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে বনস্পতি বা ডালডা মেশানো হয়। আপাত দৃষ্টিতে এই দুই উপাদান ক্ষতিকারক মনে না হলেও একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, বেশি মাত্রায় ডালডা বা বনস্পতি জাতীয় উপাদান শরীরে প্রবেশ করলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ডলডায় উপস্থিত ট্রান্স ফ্যাটের কারণে ব্রেস্ট এবং ইন্টেস্টাইনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

তাই তো এই ধরণের ভেজাল দুধ খাওয়া শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল ন। কিন্তু প্রশ্ন হল, বুঝবেন কীভাবে যে দুধে ডালডা বা ওই জাতীয় কোনো উপাদান মেশানো আছে? একটা সহজ উপায় আছে বৈকি! ১ চামচ দুধ নিয়ে তাতে ২ চামচ হাইড্রোক্লরিক অ্যাসিড এবং ১ চামচ চিনি মেশান। কিছু সময় পরে যদি দেখেন মিশ্রণটি লাল রঙের হয়ে গেছে তাহলে বুঝবেন ওই দুধে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ডালডা মেশানো ছিল।

পরীক্ষা ২: দুধকে অনেকক্ষণ তাজা রাখতে অনেকেই এতে ফরমালিন নামে একটি উপাদান মিশিয়ে থাকেন। এই ফরমালিনের প্রভাবে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। যেমন- চোখ থেকে পানি পরা, গলায় এবং নাকে জ্বালা করা, কাশি, মাথা ঘোরা, ত্বকে মারাত্মত জ্বালা ভাব প্রভৃতি। এক্ষেত্রে মাত্র ১০ এম এল দুধে ২-৩ চামচ সালফিউরিক অ্যাসিড মিশিয়ে নিন। কিছু সময় পরে যদি দেখেন মিশ্রণটির উপরের দিকে নীল রঙের মতো গোলাকার অবয়ব তৈরি হয়েছে তাহলে সেই দুধ একেবারেই খাওয়া চলবে না।

পরীক্ষা ৩: পরিমাণ মতো দুধ একটা বাটিতে নিয়ে অল্প আঁচে কম করে ২-৩ ঘন্টা ধীরে ধীরে ফোটাতে থাকুন। এমনটা করলে দেখবেন, নিদির্ষ্ট সময়ের পর দুধটা আর তরল থাকবে না। সেটা খোয়া ক্ষীরে পরিণত হয়েছে। তখন যদি দেখেন ক্ষীরটা খুব শক্ত হয়ে গেছে, তাহলে বুঝবেন দুধটা ভেজাল ছিল। আর যদি দেখেন ক্ষীরটা একটু তেল তেলা মতন হয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে সেই দুধে কোনো ভেজাল উপাদান মেশানো ছিল না।

পরীক্ষা ৪: দুধে অনেকে নানা ধরনের স্টার্চও মিশিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ৫ এম এল দুধ নিয়ে তাতে ২ চামচ নুন ফেলে দেখুন তো দুধটা নীল রঙের হয়ে যাচ্ছে কিনা। যদি দেখেন এমনটা হচ্ছে, তাহলে মনে কোনো সন্দেহ রাখবেন যে ওই দুধটা ভেজাল।

পরীক্ষা ৫: আজকাল দুধে নানা ধরণের কেমিকেল, এমনকি সাবান মিশিয়েও দুধকে ঘন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই ধরণের দুধকে সাধারণত ‘ক্যামিকেল দুধ’ বলে চিহ্নিত করে থাকেন চিকিৎসকেরা। এমন দুধ ফোটালেই হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে যায়। এবার থেকে তাই দুধ ফোটানোর সময় যদি দেখেন দুধের সাদা ভাব ধীরে ধীরে বদলে ফ্যাকাসে হলুদ রঙের হয়ে গেছে তাহলে ভুলেও সেটি মুখে তুলবেন না।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top