
আমাদের সকলের প্রিয় মো. আব্দুল বাতেন ভাই (ইন্না লিল্লাহি ও ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। তিনি নিবেদিত সংবাদকর্মী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। সমাজের অন্যায় অত্যাচার আর অঙ্গতি দূর করতে চালিয়েছেন নিরলস প্রচেষ্টা। সবার সাথে মিশে ছিলেন সহজেই, এভাবেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন অসংখ্য লোকের ভালবাসার প্রাচীর দারিদ্র্যতার নির্মম কষাঘাত। কখনোই তাকে হার মানাতে পারেনি, অবিচল ছিল তার চলার গতি, এগিয়ে ছিলেন নির্ভিক কলম সৈনিক হিসেবে। তবে হতবাক করে গেলেন সবাইকে তিনি কর্মক্ষেত্র থেকে নিয়েছেন মহা প্রস্থান, ছেড়ে গেছেন দূর থেকে বহু দূরে, না ফেরার দেশে, যেখান থেকে কেউ আর কখনো ফিরে আসেনা ।
২৩ ডিসেম্বর সারাদিন সাথেই ছিলেন সংবাদ সংগ্রহে সন্ধ্যায় তিনি বিদায় নেন বাসায় যাওয়ার জন্যে। এটা ছিল তার সাথে আমার জীবনের শেষ দেখা পৌর শহরের তাতিহাটি এলাকায় নিজ বাসায় যান তিনি। এটা ছিল তার জীবনের শেষ বাসায় যাওয়া, খাবার খেয়ে আবারো আসেন শহরের চৌরাস্তা মোড়ে। সন্ধ্যা পনে সাতটার দিকে শুরু হয় তার মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা, এর পরই তাকে নেয়া হয় উপজেলা সদর হাসপাতালে। দিশেহারা হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন, সেখানে তার অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে দ্রুত নেয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাত ১১টার দিকে খবর আসে তিনি আর নেই। সকলের সাথে সমস্ত লেনদেন চুঁটিয়ে মহা প্রস্থানের ডাকে সাঁড়া দিয়েছেন, এ প্রস্থান যেন আরেকটি মধ্যাহ্নের বিদায়।
তিনি মাঝে মধ্যে বলেছিলেন, আমাদের দেশ ও সমাজকে বদলাতে হলে সকলের এক হয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু এখানেই থেমে যাবেন তিনি, তা সবারই অপ্রত্যাশিত। বয়সই বা কতটুকু হয়তো পঞ্চাশের কাছাকাছি। এই দেশ প্রেমিকের স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার চেতনায় বেড়ে উঠকু নতুন প্রজন্ম, আলোকিত হোক বাংলাদেশ।
তার মৃত্যুতে শোকাহত এ কলম সৈনিকের পরিবার, আত্মীয় স্বজন, তার সহকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনসহ শ্রীবরদীবাসী তার কর্মময় জীবন কতোটা বর্ণাঢ্যময় ছিল, তা জানিনা। তবে দৈনিক ইত্তেফাক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ কয়েকটি মফস্বল পত্রিকায় দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছেন। তার বাবা মৃত হাফেজ শমসের আলী, তারা ৫ ভাই ২ বোন, তার মধ্যে তিনি সবার ছোট।
তার ৩ ছেলে বড় ছেলে ব্যানবেইজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে, আর মেঝো ছেলে নৌবাহিনীতে চাকরি করে। ছোট ছেলে সপ্তম শ্রেণীতে। তিনি ৩ ছেলে স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আমি একজন রিপোর্টার হিসেবে তার কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। তিনি আমার বয়সে বড় হলেও সব সময় বন্ধুর ভালবাসা দিয়েছেন। আমিও তাকে খুব শ্রদ্ধা করতাম, কিন্তু মাঝে মধ্যে ভয় পেতাম তার সাহস আর স্পষ্টভাষী বক্তব্যকে, যা মিথ্যা কুৎসিত তা মুখের উপরেই বলে দিতেন। কোনো পিছুটান ছিলনা তার, এ স্বভাব আর আর বৈশিষ্ট্য কখনো আমার ওপর মৃদু প্রভাব ফেলতো। কিন্তু রাতে মুঠোফোনে ভেসে আসে বাতেন ভাই আর নেই, তিনি সবার সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে গেছেন, ঘন কুয়াশায় ছেয়ে গেছে আকাশ, রাত গভীর সারারাত মনে হচ্ছিল বুকের ভিতর যেন চাল কর্তনের শব্দ যন্ত্রনায় বয়ে চলা নিরব নদী।
আমার মুখে ভাষা নেই ভোরে তার মরদেহ ওঠানে খাটের ওপর পড়ে থাকতে দেখে নিজের অজান্তের চোখে জল আসে।
এ সময় পাশে তার সাংবাদিক বন্ধুরাসহ সবার চোখে জল, বেলা আড়াইটার দিকে তাকে পৌর শহরের মথুরাদী কবরাস্থানে দাফন করা হয়।
তার মৃত্যুতে শোকাহত
রেজাউল করিম বকুল,
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।