প্রায় শেষের পথে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প

S M Ashraful Azom
0
প্রায় শেষের পথে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প
সেবা ডেস্ক: ময়মনসিংহের সুতিয়াখালীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের পথে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই সৌরবিদ্যুৎ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।

সরকারের ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রায় ১৭৪ একর জমির উপর চলমান এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের বিদ্যুৎ খাত যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি সুফল পাবেন ময়মনসিংহবাসী।

এই প্রকল্পের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে প্রায় ১.৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে ওই এলাকার মানুষ। এরইমধ্যে এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যে উৎসাহ বেড়েছে। প্রকল্পটি চালু হলে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানসহ ব্যবসা বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সদর উপজেলার সুতিয়াখালীতে ৫০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। প্রশাসনিকভাবে প্রকল্প স্থানটি গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নে অবস্থিত। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের যৌথ প্রতিষ্ঠান এইচডিএফসি সিন-পাওয়ার লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে। তবে কাজ তদারকি করছে বাংলাদেশ সরকার।

সম্প্রতি ওই মেগা প্রকল্পে বিদ্যুৎ জ্বলানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিপিএমআই) সরকারি বিভিন্ন সেক্টরের ৩২ জন প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তাদের অন জব প্রশিক্ষণের জন্য সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রজেক্টের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য সোয়েল টেস্ট ইরেক্টরস অ্যান্ড স্ট্রাকচারাল ইসুজ অব সোলার পাওয়ার জেনারেশন সিস্টেম বিষয়ে সম্যক ধারণা প্রদান করা হয়।

এখানকার ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে ময়মনসিংহ শহরের কেওয়াটখালীর জাতীয় গ্রিডে। প্রকল্প স্থান থেকে জাতীয় গ্রিডের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। এর মধ্যে এক কিলোমিটার যাবে টাওয়ারের মাধ্যমে। বাকি চার কিলোমিটার যাবে মাটির নিচ দিয়ে। ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় প্রকৌশলীদের সঙ্গে আছেন বিদেশি প্রকৌশলীরাও।

বর্তমানে প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু এর আগেই কাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা করছেন। তবে করোনাভাইরাসের কারণে চীন থেকে শ্রমিক না আসতে পারার কারণে কাজের গতি একটু কমে গেছে বলে জানা গেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে বেঁধে দেয়া সময়ের আগেই প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার মির্জা গালিব।

এইচডিএফসি সিন-পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ মো. শফিকুল ইসলাম পিএসসি (অবসরপ্রাপ্ত) জানান, সরকারের সব নিয়মনীতি মেনে এ কাজ চলছে। পরিবেশবান্ধব এই বিদ্যুৎ প্রকল্পে দু-তিন মাসের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে। প্রকল্পটির কারণে স্থানীয়ভাবে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তি এখানে কাজ করছে। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে চলমান সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়।

সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আছেন ময়মনসিংহ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (দক্ষিণ) নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিত দেবনাথ। তিনি বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ ও সরকারি তদারকিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎকে গ্রিন এনার্জি বলা হয়। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহের গ্রাহকরা সুবিধা পাবেন।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top