টাঙ্গাইলে নিজেদের তৈরি শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালো শিশুরা

S M Ashraful Azom
0
টাঙ্গাইলে নিজেদের তৈরি শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালো শিশুরা
সেবা ডেস্ক: আজ ২১ ফেব্রুয়ারী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। যে ভাষার জন্য শহীদ হয়েছিল রফিক উদ্দিন, আবদুল জব্বার, আবুল বরকতের আরও অনেকে। তাদের আজকের এই দিনে স্মরন করি আমরা, জানাই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা, তারা আমাদের পুরস্কার দিয়েছে আন্তর্জাতিক মর্যদা। এই দিনটির জন্য টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গ্রামে গ্রামে শিশুরা কাদামাটি, কলাগাছ, বাঁশের কঞ্চি ও রঙিন কাগজ দিয়ে শহিদ মিনার তৈরি করেছে। শহিদ মিনার করতে সময় লেগেছে ২-৩ দিন।

শুক্রবার সকালে সে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

শিশুদের বয়স ৫-১২ বছরের মধ্যে। দ্বিতীয় থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তারা।

শিশুরা জানায়, গত মঙ্গলবার ওরা পরিকল্পনা করে। বুধবার ভোর থেকে শহিদ মিনার গড়ার কাজে লেগে পড়ে। স্কুলে যাওয়ার কারণে সকাল থেকে দুপুরে বিরতি দিতে হয়েছে তাদের।
The children paid their respects at the Shaheed Minar, which he built in Tangail
বৃহস্পতিবার বিকেলেই গড়ে ওঠে শহিদ মিনার। শুক্রবার ভোর হওয়ার সঙ্গে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে তারা। পরে যুবক ও প্রবীণরাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কাগমারা, এনায়েতপুর, বেড়াডোমা, দাইন্যা ইউপির বাইমাইল, বাসারচর, চিলাবাড়ি, বাঘিল ইউপির ধরেরবাড়ী, দুরিয়াবাড়ি, বানিয়াবাড়ি, কৃষ্ণপুর ও গালা ইউপির ভাটচান্দা, সদুল্লাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে শিশুদের উদ্যোগেই শহিদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। কলাগাছের তিনটি খুঁটি মাটিতে পুঁতে তৈরি করা শহিদ মিনার চোখে পড়ে।

প্রতিটি মিনারের ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট কলাগাছের আরো তিনটি টুকরা তির্যকভাবে আটকে দেয়া হয়েছে। রঙিন কাগজ ও নানা রঙের ফুল দিয়ে প্রতিটি মিনার মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। চারপাশে সুতা টানিয়ে তাতে রঙিন কাগজ ও বেলুন দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহিদ বেদিতে বুনোফুল ছাড়াও কিছু গাঁদা ও গোলাপফুলও চোখে পড়েছে। পাশেই সাউন্ড সিস্টেম বাজছে। সাউন্ড সিস্টেমে দেশাত্মবোধক গান বাজানো হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও বড়দের কাছ থেকে শহিদ দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে জেনেছে। তাই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহিদ মিনার বানিয়েছে তারা।

কাগমারা এলাকার চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদ মিয়া বলে, তাদের গ্রামে শহিদ মিনার নেই। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে হলে যেতে হয় তিন কিলোমিটার। তাই শহিদ মিনার তৈরি করেছে তারা। তাদের কাজ দেখে প্রথমে কেউ উৎসাহ না দিলেও পরে বাড়ির দাদি, নানি, মা, চাচি ও বড় ভাইবোনেরা সাহায্য করেছেন।
The children paid their respects at the Shaheed Minar, which he built in Tangail
ধরেরবাড়ী গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. মানিক বলে, আমরা শিক্ষকদের কাছে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস জেনেছি। তাই শহিদ মিনারের আঙিনায় জুতা খুলে খালি পায়ে প্রবেশ করেছি।

ধরেরবাড়ী গ্রামের মোছা. নার্গিস নামের এক অভিভাবক বলেন, গ্রামে স্থায়ীভাবে কোনো শহিদ মিনার নেই। শহীদ মিনার থাকলে সবাই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম। এতে শিশুরা দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হতো।

কাগমারা গ্রামের বাসিন্দা মো. মামুন মিয়া বলেন, এই শিশুদের দেশপ্রেম দেখে অভিভূত হয়েছি। মিনারটিতে প্রত্যেকের দেয়া একেকটি ফুলে মিশে রয়েছে তাদের শ্রদ্ধা আর অগাধ ভালোবাসা।

মো. মনির হোসেন নামে এক শিক্ষক জানান, সকাল থেকেই তিনি দেখছেন শহিদ মিনারে শিশুদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা গেছে। গ্রামে যে ফুল পাওয়া যায়, সে ফুলই তুলে এনে শিশুরা শহিদ মিনারে দিচ্ছে।

 -সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top