নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছেনা দেওয়ানগঞ্জে কাঁচা বাজারগুলোতে

S M Ashraful Azom
নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছেনা দেওয়ানগঞ্জে কাঁচা বাজারগুলোতে

মোঃ হারুন অর রশিদ হারুন, বিশেষ প্রতিনিধি: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাজারের দুরবস্থা।

নভেল করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব রোধে মানুষকে ঘরে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছেন না সচেতন নাগরিকরা।

তবে করোনার আতঙ্কে দেশজুড়ে সবকিছু অঘোষিত লকডাউন থাকলেও জামালপুর জেলার বাজার গুলোর চিত্র ভিন্ন। জনগণ একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বাজার করছেন। বাজার করতে এসে শারীরিক দূরত্বের তোয়াক্কা করছেন না কেউই।

আজ রোববার ১৯ এপ্রিল জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে সাপ্তাহিক বাজার ছিল। লকডাউন থাকার আগে যেমন জনসমাগম হত এখন তেমনই আছে। মানছেন না কেউই। দেওয়ানগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা এতো কিছু করার পরেও জনগণকে কোনভাবেই ঘরে রাখতে পারছি না। তারা অনেকটা অসচেতনভাবে বাজার গুলোতে জটলা করছেন। আমি এখন এই বাজারেই আছি। ইউএনও স্যার আমার সাথেই আছেন। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম স্থান স্থানীয় কাচাজার গুলো। এসব বাজারে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না সাধারণ মানুষ। একইসঙ্গে অনেকেই মুখে মাস্ক পর্যন্ত পড়ছেন না।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে শারীরিকভাবে একে অন্যের তিন ফুট দূরত্বে অবস্থান করতে বলা হলেও সেটা মানছে না ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। তবে কেউ কেউ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। দূরত্ব বজায় রাখতে পারছে না।

দেওয়ানগঞ্জ বাজারে কিনতে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুমন আহমেদ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন সবাই যেন  রমজানের আগাম বাজারঘাট সেরে নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করার লক্ষ্যে পৌর বাজার এখানে স্থানান্তর করা হলেও মানুষের মাঝে কিছুতেই সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না। মানুষ যেন ঈদের আগাম বাজার করতে এসেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা রাজিয়া এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান ওই বাজারে গিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাজারে তার পুরোটাই উল্টো দেখছি। শারীরিক দূরত্ব কেউ মানছেন না। গায়ে গা ঘেঁষে বাজার করছেন। একটু সরতে দাঁড়াতে বললে অনেকেই আড়চোখে তাকাচ্ছেন। এতে করে নিজেই বিব্রত হচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা কোনো বিকল্প নেই। তাই এক্ষেত্রে সরকারকে আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে বিক্রেতারাও কেউ সরকারি নির্দেশনা মানছেন না। ক্রেতা পেয়েই খুশি তারা। ক্রেতাদের ভিড়ে করোনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে এড়িয়ে যাচ্ছেন তারা।

অপরদিকে, করোনা ভাইরাসজনিত কোভিড-১৯ রোগ বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নিয়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার নাগরিকদের ঘরে অবস্থান করতে বলছে। আর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই ছুটি বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতেও বলা হয়েছে। প্রশাসনও এ ব্যাপারে তৎপর রয়েছেন। বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও চলছে এক ধরনের অঘোষিত লকডাউন।

তবে অঘোষিত লকডাউনের কারণে বিপাকে পড়েছেন নগরীর খেটেখাওয়া মানুষ। পেটের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বের হলেও জীবিকার সন্ধান না পাওয়ায় এখন তাদের কোনো আয় নেই। এ অবস্থায় খাদ্য সহায়তার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ভিড় করতে দেখা গেছে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষদের।

উল্লেখ্য যে, এই উপজেলায় ইতিমধ্যে করোনায় তিনজন আক্রান্ত হয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আইসোলেশন সেন্টারে আছেন। অনেকে ঢাকা নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন বলে উপজেলা সূত্রে জানা গেছে। সেখানে এই জনসমাগম মানুষকে করোনা ঝুঁকিতে ফেলবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top