সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান বলেছেন, যারা হতদরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত চাল চুরি করে তারা মানুষরূপী জানোয়ার। যারা হতদরিদ্রের চাল চুরি ও বিক্রি করে খায় তারা যেন নিজের সন্তান, পিতা-মাতার বা পরম আত্মীয়ের গোসত খাইলো। যারা হতদরিদ্র মানুষের চাল চুরি করে তাদের রাজনৈতিক কোন পরিচয় থাকতে পারে না। চাল চুরির সাথে জড়িতরা ১৪ হাত মাটির নিচে থাকলেও তাদের গ্রেপ্তার করে প্রচলিত আইনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান বলেন, মানুষের দু:সময়ে যারা চাল চুরির মত জঘন্য কাজ করতে পারে তাদের দলীয় পদ বা পরিচয় থাকতে পারে না। তার কোনো পরিচয় জানা দরকার নাই। সে চোর হিসেবেই সমাজে ও রাষ্ট্রে পরিচিত হবে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাল চুরির সাথে জড়িতদের ধরে দ্রুত মামলা দিয়ে আইনের আওতায় আনা হবে। চাল চোরদের গ্রেপ্তারের পর মিডিয়ার সামনে হাজির করা হবে। তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে ভিডিও ধারণ করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। চুরির সাথে যুক্ত কেউ রাজনৈতিক পরিচয় বহন করলে তাকে তাৎক্ষণিক দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। চাল চোরদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জামালপুর জেলার প্রত্যেক ওএমএস ডিলার সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল বিক্রি করবে। এক ছটাক চাল নিয়ে কেউ নয়-ছয় করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জামালপুরের প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চাল বিক্রিরর সময় সরকারি একজন কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজ রাখবেন সঠিকভাবে সরকারের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না। খবর রাখবেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। চাল নিয়ে কোন ডিলার যাতে নয় -ছয় করতে না পারে সে জন্য বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের তদারকির কথাও বলেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ওএমএস কর্মসূচি। ওএমএস চাল বিতরণের সময় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে চাল বিতরণ করতে হবে। গোলবৃত্ত নিশ্চিত করতে হবে। কেউ গাদাগাদি করে দাঁড়ালে চাল বিতরণ বন্ধ থাকবে। চাল বিতরণ করতে গিয়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে আমি ঠেলে দিতে পারি না।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, জামালপুরের ২৬ লাখ মানুষের জীবন আমার কাছে অমূল্য। মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে জামালপুরে চাল বিতরণ চলবে না। জামালপুরের যেসব স্থান থেকে চাল চুরির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেপ্তার করার কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে বরাদ্দ দেওয়া চালের হিসাব নিশ্চিত করে চাল বিতরণ করতে হবে। প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি ও গণমাধ্যমের কাছে চাল উত্তোলন ও বিতরণের হিসাব দিতে খাদ্য কর্মকর্তার প্রতি নির্দেশ দেন।
মুরাদ হাসান বলেন, স্থানীয় প্রশাসন চাল চোরদের ধরতে ব্যর্থ হলে তিনি নিজে ও তাঁর নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মির্জা আজম সাথে নিয়ে জামালপুরে যে কোনো সময় আসবেন। তিনি বলেন, জামালপুর হবে দুর্নীতি ও চোরমুক্ত।
প্রতিমন্ত্রী জামালপুর জেলার ডাক্তার ও নার্সদের উদ্দেশে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব পালনে কারোর যেন কোন ধরনের গাফেলতি না থাকে।
তিনি জামালপুর জেলার জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই দু:সময়ে সবাইকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। দায়িত্ব পালনের এখনই উপযুক্ত সময়। সবাইকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় থেকে বিপদে থাকা মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী জামালপুরের সকল গণমাধ্যম কর্মীদের স্যালুট জানিয়ে বলেন, তারা বিনা স্বার্থে কাজ করছেন। তারা সাতটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খবর রাখছেন, গণমাধ্যমে তুলে ধরছেন। সংবাদকর্মীদের কাজে প্রশাসন বা কেউ বাঁধা দেবে না। কিন্তু ঘর থেকে বের হবার আগে কাপড়ের মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার ও আইডি কার্ড গলায় ঝুলিয়ে রাখবেন। আর মাস্ক ব্যবহার শেষে ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। কাপড়ের মাস্ক সবচেয়ে ভালো বলেও তিনি বলেন।