করোনাকালে বাংলাদেশ বিমানের আয় ২৫০ কোটি

S M Ashraful Azom
0
করোনাকালে বাংলাদেশ বিমানের আয় ২৫০ কোটি

সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব এয়ারলাইন্স বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে এখন ১৮টি উড়োজাহাজ। কিন্তু আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালু আছে শুধু লন্ডনে। তাও আবার প্রতি সপ্তাহে রোববার। তবে করোনায় গোটা বিশ্বের এভিয়েশন খাত গুটিয়ে রইলেও বিমান অল্পস্বল্প আয় করছে। শতাধিক পণ্যবাহী ও চার্টার্ড ফ্লাইট চালিয়ে গত তিন মাসে প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা আয় করেছে বিমান। ২০১৯ সালে ২১৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল বিমান। ওই বছরের শেষ দিকে একাধিক নতুন উড়োজাহাজ কিনে আন্তর্জাতিক রুট ১৭টি থেকে বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। লক্ষ্য ছিল চীন, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও কানাডায় উড়াল দেওয়ার। একই সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে ফ্লাইট সংখ্যাও ২১৮টি থেকে বাড়িয়ে নেওয়ার। বিমানের সব উদ্যোগে হোঁচট খাইয়ে দেয় করোনাভাইরাসের মহামারি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায়। তাই উড়াল দেওয়ার বদলে গুটিয়ে যায় বিমান। মার্চের শেষ দিকে বিমানের সব রুট বন্ধ হয়ে যায়। তবে রুট বন্ধ হলেও বিমানের খরচ কমেনি। উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণ, বেতন, অফিস খরচ সবই আছে। এর সঙ্গে যোগ হয় বিক্রি হওয়া টিকিটের মূল্যও শোধ করার দায়িত্ব। সব মিলিয়ে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে গড়ে বিমানের যাত্রী কমে ৩৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এপ্রিলের শুরুতে এটি একেবারে শূন্যে নেমে আসে। অথচ বিমানের প্রতি মাসে ১৮টি উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ে প্রয়োজন হয় ২৬৬ কোটি টাকা। এপ্রিলের মধ্যে বিমান ১ হাজার ২৭৯ কোটি টাকার আর্থিক চাপে পড়ে যায়। তাই সরকারের কাছ থেকে এক হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা নিতে হয় বিমানকে।

হজ ফ্লাইট বন্ধে ক্ষতি
২০১৯ সালে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন মানুষ বাংলাদেশ থেকে হজ করতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। এর মধ্যে বিমানের হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে যান ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন। বাকি অর্ধেক হজযাত্রী গিয়েছেন সৌদি এয়ারলাইনসে। দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৬৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান। চলতি বছর হজ ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমানের ৩০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সৌদি আরব এবার বাইরের দেশের হজযাত্রীদের সে দেশে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই বাংলাদেশসহ বাইরের দেশের মুসল্লিরা এবার সৌদি আরবে গিয়ে পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন না। এ কারণে বিমানের হজ ফ্লাইট থেকে বড় আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে।

ক্ষতি পোষাতে বেতন কর্তন
রুট ও আয় কমে যাওয়ায় বিমানের সব কর্মকর্তার ওভারটাইম ভাতা বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে ষষ্ঠ থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাসহ ককপিট এবং কেবিন ক্রুদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। গত ২২ মার্চ বিমানের পরিচালক প্রশাসন এ-সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে।

তবে মধ্য এপ্রিল থেকে আয়ের পথে যেতে শুরু করে বিমান। ওই সময় থেকে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনায় নামে তারা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত আনা শুরু করে বিমান। শুরুতে ভারত, এরপর মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, জাপান থেকে যাত্রী নিয়ে আসে। একই সঙ্গে ঢাকা থেকেও ইতালি, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, স্পেনে একাধিক চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন রুটে পণ্য পরিবহন শুরু করে বিমান। বিমানের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত তিন মাসে ১০৯টির বেশি চার্টার্ড ও কার্গো পণ্যবাহী ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বিমান। এসব ফ্লাইট থেকে প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা আয় করেছে। এর মধ্যে এপ্রিলে ৪০ কোটি, মে-তে ৯৪ কোটি এবং ২৫ জুন পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে বিমান। জুলাইয়ে এই আয় বাড়তে পারে বলে জানান বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মহিবুল হক। তিনি বলেন, চার্টার্ড ও কার্গো ফ্লাইট থেকে আড়াই শ কোটি টাকা আয় হয়েছে। কিন্তু বিমানের প্রতি মাসে খরচ রয়েছে ২৬০ কোটি টাকা। তবে বেতন কামানো হলেও বিমানের কারও চাকরি যায়নি। আর ১০০০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা পাওয়া গেছে, তার থেকে ২৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বিমান এখন অন্যভাবে আয়ের পথ খুঁজছে।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top