গেল অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে দেড় লাখ কোটি টাকার রেকর্ড

S M Ashraful Azom
0
গেল অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে দেড় লাখ কোটি টাকার রেকর্ড

সেবা ডেস্ক: প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনা (কোভিড-১৯) মহামারীর প্রভাবে আমদানি-রফতানি তলানিতে নেমে এলেও রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় বেড়েছে।

সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রিজার্ভও। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে (২০১৯-২০) এক হাজার ৮২০ কোটি মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে- যা স্থানীয় মুদ্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এটি দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ছয় কারণে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স এবং রিজার্ভ জমেছে। অবৈধ পথে রেমিটেন্স আসা বন্ধ (হুন্ডি), রেমিটেন্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা, আমদানির চাপ কমে যাওয়া, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম হ্রাস, করোনায় দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তা বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি নীতি সহায়তার কারণে রেমিটেন্স এবং রিজার্ভে এই উল্লম্ফন ঘটেছে।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, রেমিটেন্স বাড়ছে দুই কারণে। বিদেশ থেকে যারা সব কিছু গুটিয়ে দেশের পথে, সে সঙ্গে তাদের সঞ্চয়ের সব অর্থও আসছে। আর কোনো কোনো দেশে করোনার প্রভাব কমে আসছে কিংবা লকডাউন তুলে দিচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এসব কারণে রেমিটেন্স বাড়ছে।

অন্যদিকে রিজার্ভ বাড়ছে দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তার কারণে। এরই মধ্যে সব দাতা সংস্থা দেড় বিলিয়নের বেশি অর্থসহায়তা দিয়েছে। এছাড়া আমদানির খরচ কমে গেছে। রেমিটেন্স বাড়ছে। সব মিলিয়ে রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে।

এই সময়ে রেমিটেন্স বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন কারণে রেমিটেন্স এবং রিজার্ভ বাড়ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বিদেশি মিশনগুলোর বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা এবং আমদানির চাপ কমে যাওয়া। এছাড়া করোনাভাইরাসের মহামারীকালে পরিবার-পরিজনের প্রয়োজনে সর্বশেষ জমানো টাকাও অনেকে পাঠাচ্ছেন।

তিনি বলেন, জুন মাসেই প্রবাসী আয় এসেছে ১৮৩ কোটি ডলার। বিশ্বজুড়ে মহামারী চলার মধ্যেও রেমিটেন্স বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। ৩০ জুন দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬১৬ কোটি ডলার- যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রায় ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৭ কোটি ডলার এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, বিশ্বজুড়ে মহামারী চলায় রেমিটেন্সে তার প্রভাব না পড়ার জন্য হুন্ডি বন্ধ হওয়া অন্যতম কারণ। এছাড়া প্রণোদনা থাকায় প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাচ্ছেন। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা ১ কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স।

জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। এবার করোনাভাইরাস মহামারীতে মার্চ থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ওলটপালট হয়ে যাওয়ায় রেমিটেন্সও কমে গিয়েছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে রেমিটেন্সে ঊর্ধমুখী ধারা ছিল।

ভিডিও নিউজ


-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top