ধুনট হাসপাতালে রোগীর বেডে আয়েশি বিড়াল

S M Ashraful Azom
0
ধুনট হাসপাতালে রোগীর বেডে আয়েশি বিড়াল

রফিকুল আলম,ধুনট (বগুড়া): প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কে বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (হাসপাতাল) এখন রোগী নেই বললেই চলে। এই সুযোগে হাসপাতাল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিড়ালের দল। রোগীদের বিছানায় অবলীলায় শুয়ে থাকে আয়েশি বিড়াল।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার। করোনাক্রান্তিকালে দিনের পর দিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কর্মরত চিকিৎসকরা হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকায় কমে গেছে রোগীর সংখ্যা। সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় উপজেলার একমাত্র এ হাসপাতালের প্রতি বিমুখ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

হাসপাতালে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও নার্সরা মিলে কোনো রকম চালাচ্ছেন চিকিৎসা পরিষেবার কাজ। একেবারে নিরুপায় হয়ে যে কজন রোগী হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন, তাদের অধিকাংশ রোগীকেই আবার রেফার্ড করা হয় বগুড়া মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য হাসপাতালে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রায় সব শয্যা ফাঁকা। রোগীদের কোন আনাগোনাও নেই। দর্শনার্থীদের দেখাও মেলেনি। অবস্থা দেখে মনে হয় এটি এখন বিড়ালেরও আবাসস্থল। রোগীর বিছানায় ঘুমাচ্ছে আয়েশি বিড়াল। বিড়ালগুলো বেশ হৃষ্টপুষ্ট। এখানেই তারা থাকে। বিড়ালে সংক্রমণ ঝুঁকি রয়েছে। হাসপাতালের বিড়াল ডাস্টবিনে ঘোরে। সেখান থেকে জীবাণু নিয়ে বিছানায় উঠে বা খাবারে মুখ দিয়ে জীবাণু ছড়াতে পারে। এ ছাড়া বিড়ালের আঁচড় থেকেও রোগ হতে পারে।

হাসপাতালের মেঝেতে ছত্রখান হয়ে আছে নানা ধরনের ময়লা আবর্জনা। বেডগুলো এলোমেলো। বেডে বিছানো কাপড়গুলো অপরিষ্কার, ময়লা ও রক্তমাখা। সব সময়ই এমন থাকে। বিছানা রোগীদের পরিষ্কার করতে হয়। মেঝেতে কাগজ, তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, ওষুধের প্যাকেট ছড়ানো অবস্থায় পড়ে আছে। আর শৌচাগারের সামনে দিয়ে সবাইকে নাকে কাপড় দিয়ে চলতে হচ্ছে।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন এক রোগী। তার পাশেই মেঝেতে বসে খাচ্ছিলেন রোগীর এক স্বজন। তার পাশ দিয়ে একটি বিড়াল ঘুরছে। তিনি বলেন, এগুলোকে পাশে নিয়েই তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিড়ালের জন্য কিচ্ছু রাখা যায় না। সব কিচ্ছু নষ্ট করে ফেলে। বিড়ালের উপদ্রবের অভিযোগ করেও লাভ হয়নি।

হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডা জনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হওয়া একজন রোগীর মা বলেন, হাসপাতালে আমি তিনদিন ছিলাম। আর পুরো শিশু ওয়ার্ডে আমি একাই ছিলাম, হাসপাতালে শুনশান নিরবতা। কোন হইচই নেই। লোকের সমাগম নেই। এ কারণে অনেকটা ভয় হয়। তাই হাসপাতাল ছেড়ে চলে এসেছি।

ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হাসানুল হাছিব বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সব গুলো পদ শুণ্য। এ কারণে একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। করোনাক্রান্তিকালে ভর্তি রোগী স্বল্পতার কারণে ফাঁকা ওয়ার্ডে বিড়াল প্রবেশ করতে পারে। পর্যায়ক্রমে এ সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top