ডা: জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ খোরশেদ আলম। ১৯৬৪ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানোর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে কতিপয় ব্যক্তি নিজ স্বার্থ হাছিল করতে না পেরে নানা গুজব ছড়াচ্ছেন।
সরেজমিন জানা যায়, অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু ছালেক গত ১৫/১০/২০২০ইং তারিখে অবসর গ্রহণ করেন। প্রধান শিক্ষক অবসর গ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে গত ১৪/১০/২০২০ইং তারিখ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হলে সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে দিন হতেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ খোরশেদ আলম ম্যানেজিং কমিটিকে লিখিত ভাবে জানান, আমি প্রধান শিক্ষক পদে প্রার্থী হবো। যার কারণে জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে ১৫/১০/২০২০ইং অত্র বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সভার রেজুলেশন অনুযায়ী গত ১৯/১০/২০২০ইং তারিখ বিধি মোতাবেক “দৈনিক সমকাল” ও “দৈনিক কুড়িগ্রাম খবর” পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যথানিয়মে প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন ৮ জন প্রার্থী। অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ খোরশেদ আলম ম্যানেজিং কমিটির নিকট লিখিত অনুমতি নিয়ে তিনি প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করেছেন। নিয়োগ পরীক্ষা চূড়ান্ত পর্যায়ে আশার পূর্ব মুহুর্তে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অত্র ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন খান ও বীর মোহাম্মদ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশক্রমে সংশ্লিষ্ট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক রয়েছে মর্মে ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এদিকে, সহকারী প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলম ও বীর মোহাম্মদ বিদ্যালয় এলাকায় কিছু বহিরাগত লোকজনকে এনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার হীন ষড়যন্ত্র করছেন। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই প্রধান শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। মিডিয়া কর্মীদের ভুল তথ্য দিয়ে স্থানীয় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় মনগড়া সংবাদ ছাপিয়ে নিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে সরেজমিনে এই সংবাদের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে সংবাদ প্রকাশ করায় স্থানীয় ব্যক্তিরা নিন্দা জ্ঞাপন করেন। বিদ্যালয় এলাকার সংশ্লিষ্ট ফরিদুল ইসলাম, ফজলুল হক, সোলায়মান আলী সহ একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা হয়। এই বিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে কোন জটিলতা নেই। সরকারী বিধি মেনেই বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ খোরশেদ আলম একটি হত্যা মামলার প্রধান আসামী। তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। এখন জামিনে মুক্ত হয়েছেন। এই বিদ্যালয়ে তিনি নিয়মিত নন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন খান তিনি স্থানীয় এক বিধবা মহিলার সাথে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন- আমরা যথা নিয়মে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করবো। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যিনি উত্তীর্ণ হবেন তাকেই প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হবে। উলিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুর রব গত ১৬/১১/২০২০ইং তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনে বলেন- সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ খোরশেদ আলম প্রধান শিক্ষক পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে লিখিত পত্র দাখিল করেন এবং প্রার্থীত পদে আবেদন করেন। সেক্ষেত্রে পরবর্তী জ্যৈষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ রায়কে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এর দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সেহেতু বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এর মাধ্যমে বিধি মোতাবেক প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।