সেবা ডেস্ক: আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি “যাত্রা” শিল্প বাঁচাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। জাতীয় সংস্কৃতি নীতি সংশোধনের মাধ্যমে নাট্যশিল্পের সঙ্গে যাত্রাশিল্পের সার্বিক কল্যাণ, প্রচার ও প্রসারের কথা ভাবছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে প্রস্তুতকৃত সংশোধন খসড়া নীতিতে যাত্রা, পুতুলনাচ ও নাট্যচর্চার পরিধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হয়েছে।
-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের পর থেকেই যাত্রাপালা আয়োজনের ওপর বিধি-নিষেধ আসতে থাকে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাধা-নিষেধ ছিল না। তবে এ বিষয়ে সরকারের মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাত্রাশিল্পের চর্চায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে পারেনি। তাই যুগোপযোগী করে জাতীয় সংস্কৃতি নীতির সংশোধন খসড়া করা হয়েছে।
জাতীয় সংস্কৃতি নীতির সংশোধন খসড়ায় বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নাট্যচর্চা নিশ্চিত করতে নাটক মঞ্চায়নের সব সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত জাতীয় নাট্যমঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। পর্যায়ক্রমে প্রথমে বিভাগীয় শহরে এবং পরে জেলা শহরে স্থায়ী নাট্যমঞ্চ প্রতিষ্ঠা করাও প্রয়োজন।
একই সঙ্গে খসড়ায় জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় পেশাদার নাট্যদল পরিচালনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
যাত্রা ও পুতুল নাট্যের মান সংরক্ষণ এবং যাত্রা ও পুতুল নাট্যকে অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রণীত খসড়া নীতি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে ট্রাস্ট গঠন করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, যাত্রাশিল্পের সার্বিক কল্যাণ, প্রচার, প্রসার ও মানোন্নয়নের জন্য ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় যাত্রা একাডেমি ও পর্যায়ক্রমে জেলা ও উপজেলায় যাত্রা একাডেমি স্থাপন করা দরকার।
প্রান্তিক পর্যায়ে অবস্থানরত নাটক ও যাত্রাশিল্পীদের ভাতা ও প্রয়োজনে অর্থ বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। প্রতি দুই বছর অন্তর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব, যাত্রা উৎসব আয়োজন করতে হবে।
জাতীয় সংস্কৃতি নীতি সংশোধন প্রস্তাবের বিষয়ে যাত্রাশিল্পী জাহিদ হাসান বলেন, জেলা-উপজেলায় একাডেমি করে শিল্পী তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় যাত্রা মঞ্চ তৈরি করা প্রয়োজন। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যাত্রাশিল্পের উন্নয়নে প্রতিবছর অর্থ বরাদ্দ দেয়াও প্রয়োজন। জাতীয় পর্যায়ে শিল্পীদের সম্মাননা দিয়ে এই শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখা জরুরি।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল মান্নান ইলিয়াস বলেন, আবহমান বাংলার সংস্কৃতিকে যুগোপযোগী করার জন্য ২০০৬ সালের জাতীয় সংস্কৃতি নীতি সংশোধন করা হচ্ছে। সব শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের জনগণের নিজস্ব সংস্কৃতি, চিন্তা-চেতনা ও ধর্ম বিশ্বাসকে সমুন্নত রাখতে এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় সংস্কৃতি নীতি সংশোধনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। খসড়া নীতিতে যাত্রা ও নাট্যচর্চা বাঁচিয়ে রাখতেও কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।