কাজিপুর প্রতিনিধি: ‘আইসেন আইসেন বইসেন বইসেন গো? খেলমু খেলমু মাদারেরও সাথে গো’- এমনি করে নিজ ঘরের মধ্যে নেচে গেয়ে যাচ্ছেন পোষাক শ্রমিক রিপন মিয়া। গত চারদিন যাবৎ তিনি নিজ বাড়ির টিন শেড ঘরের মধ্যে নেচে যাচ্ছেন।
নাচের সাথে সাথে সুর করে মাদারের গানও করেন। এরকম নাচ রিপনের ফুপু জরি পাগলীও করতো। এই নাচ দেখার জন্যে এলাকার মানুষ ভিড় করছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের পাঁচগাছি দক্ষিণপাড়া রিপনের বাড়িতে। রিপনের পিতার নাম হবিবর রহমান । তিনি পেশায় ভ্যান চালক।
এলাকার প্রবীণ মুরব্বী আলহাজ্ব আব্দুর রহমান জানান, সাধারণত এলাকায় বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের এই সময়ে স্থানীয়ভাবে মাদারবাঁশ ওঠে। মাদারপীরের স্মরণে বাঁশের সাথে চোমর ও লাল সালু কাপড় পেচিয়ে এই বাঁশ নিয়ে ঢোলের তালে তালে লাঠিবাড়ি খেলা হয় ।
এলাকা এলাকায় ঘুরে ঘুরে কয়েকদিন যাবৎ চলে এই খেলা। যখন এই মাদার ওঠে তখন এলাকায় অনেকেই নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে কেউ চপুচাপ বসে থাকে, কেউবা নাচানাচি করে, কেউ দৌড়ে মাদার যেদিক থেকে আসে সেদিকে চলেও যায়। তখন তাকে স্বজনরা ঘরবন্দী করে রাখে। এরপর এক সপ্তাহ চলে গেলেআবার সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।
রিপনের প্রতিবেশি পাঁচগাছি গ্রামের সার্ভেয়ার মামুনুর রশিদ মামুন জানান, ‘রিপন ঢাকায় পোষাক কারখানায় চাকুরি করে। ছুটিতে এবার বাড়িতে এসেছে। ওর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। এবারই প্রথম সে নিজ ঘরের মধ্যে নাচানাচি শুরু করেছে।
এই সময়টায় দিনে একবেলা সামান্য কিছু খাবার খেলেও মাছ মাংস কিংবা আমিষ জাতীয় কিছু খাচ্ছে। মজার ব্যাপার হলো কেউ যদি মাছ মাংস খেয়ে রিপনের ঘরের নিকট যায় তাহলে সে বুঝতে পেরে তেড়ে তাকে মারতে আসে।
রিপনের পিতা হবিবর রহমান জানান, ‘ আগে আমার বোনেরও মাদার ধরতো। এহন আমার ব্যাটার ধরছে। পাঁচদিন পর এমনই ভালো হয়া যাইবো।
এদিকে এমন পরিস্থিতি দেখে রিপনের স্ত্রী তার দুই সন্তান নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেছে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।