শফিকুল ইসলাম: ভারি বর্ষণে ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে ব্রম্মপুত্র নদের পানি । ফলে বর্ষার শুরুতেই ব্রম্মপুত্র নদের পানি প্রখর ¯্রােতের রূপ ধারন করছে। এতে ব্রম্মপুত্র নদের বামতীর রক্ষাবাঁধের কাজ বন্ধ থাকলে ভাঙ্গন সৃষ্টি হবে। ফলে বিলীন হয়ে যাবে বামতীর রক্ষাবাঁধের কাজ, ঘরবাড়ি ও জমিজমা। পানিতে ভেস্তে যাবে বামতীর রক্ষাবাধেঁর বরাদ্দকৃত সরকারের কোটি কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সকালের দিকে বন্দবেড় ইউনিয়নের বলদমারা, বাইশ পাড়া, ও ফলুয়ারচর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ভারি বর্ষণে ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ব্রম্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। ফলে উপজেলার ঘুঘুমারী, চর ঘুঘুমারী, খেরুয়ারচর, খেদাইমারী, চর খেদাইমারী, সাহেবের আলগা, বলদমারা, বাইশ পাড়া, ফলুয়ারচর,যাদুরচরের দিগলা পাড়া, ধনারচর, রাজিবপুরের চর রাজিবপুর, কোদালকাটি ও মহনগঞ্জ ব্রম্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে কৃষকের চিনা, কাউন, তিল, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে গেছে।
ব্রম্মপুত্র নদের পারে বসবাসরত বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামান বদি, আবু বক্কর মাষ্টার, (অব:) সেনা হাবিল, কুদুর ব্যাপারি, রাশেদ, লাল মিয়াসহ বলদমারা ঘাটে থাকা আরো অনেকে মনের মাঝে দু:খ ও অঝরা কান্নার চোখে বলেন, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ব্রম্মপুত্র নদের বামতীর রক্ষাবাঁধের কাজ ৭.৩ কিলো মিটারের বিপরিতে ৪৭৯ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত মূল্য ব্যয়ে ১৫ টি প্যাকেজের মধ্যে আরএফএল কোম্পনির ৪টি, স্টার্ন্ডাড কোম্পানির ৪টি, তাজ মঞ্জিলের একটি, জেডিএমএম বিল্ডার্স একটি, মের্সাস ডন করপোরেশন এন্ড সানফ্লাওয়ার কোম্পানি একটিসহ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজগুলি পায়। বামতীর রক্ষায় ঠিকাদারগণ আংশিক কাজ করে বর্ষা ও বন্যার আগ মূহুর্ত এসে আর এফএল কোম্পানি কিছু বস্তা ডাম্পিং করলেও বাকী সব ঠিকাদারগণ কাজ বন্ধ রেখেছে। নদে যে ভাবে পানি বৃদ্ধি হচ্ছে, এতে বামতীর রক্ষাবাঁধটির কাজ শেষ করতে না পারলে নদের পারের মানুষ ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে শতশত ঘরবাড়িসহ আবাদি জমি। পানিতে ভেস্তে যাবে সরকারের শতশত কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, সামনে বর্ষাকাল এবং বন্যা শুরু হবে। এর আগে কাজটি শেষ করতে না পারলে নদী ভাঙ্গণ থেকে রক্ষা পাবে না এলাকাবাসী। এতে ক্ষতি হয়ে যাবে সরকারের বরাদ্দের অর্থ। অন্যদিকে মানুষের ঘরবাড়ি ও জমাজমি। আমি বিভিন্ন দপ্তরে মোবাইলের মাধমে যোগাযোগ করে কাজের গতি বাড়ানোর অনুরোধ করছি। তাতেও কাজে আসছে না।
তীর সংরক্ষণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডন কর্পোরেশন এন্ড সানফ্লাওয়ার কনস্ট্রাশন লিমিটেডের তদারকিতে থাকা দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী/ শাখা কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, কিছু কাজ করার পর গত ৫ মাস যাবত এ কোম্পানির কাজটি বন্ধ রয়েছে। আমরা অফিসিয়াল ভাবে বারবার তাগিদ দিলেও কোন কাজ ধরছেন না। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বালুর বস্তা ভর্তি ও বøকের কাজ শুরু করবো।
জেডিএমএম বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এসকে এমদাদুল হক আল মামুন ও মেসার্স তাজ মঞ্জিল জেডি) ইয়ামিন রসুল চৌধুরীর তদারকিতে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী চঞ্চল কুমার শর্মা বলেন, বর্তমানের সরকারের দেয়া করোনাকালীন সময় লোকডাউনের কারনে পাথর বন্ধ থাকার কারনে কাজে অগ্রসর হতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টায় আছি লোকডাউন শেষ হওয়ার সাথে সাথে কাজ পুরাদমে শুরু করবো।
আরএফএল কোম্পানির দায়িত্বরত (পিডিএল) প্রজেক্ট ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কোম্পানিতে মোটামোটি ভাবে বাঁধ রক্ষার দায়ে এবং এলাকাবাসীর রক্ষায় বস্তা ফেলে যাচ্ছি। বøক ফেলানোর অর্ডার পেলেই আমরা কাজ শুরু করবো। তবে ইনশাআল্লাহ আগামী বছরেই কাজ শেষ করার চেষ্টা করবো।
কুড়িগ্রাম জেলা পানি উন্নয়ন বোড নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলামকে মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।