গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের আলোচনা সভা

S M Ashraful Azom
0
গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের আলোচনা সভা



সেবা ডেস্ক: ‘বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চেতনা নির্মূলের চেষ্টা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

গতকাল বিকাল ৩.৩০ ঘটিকায় দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর খুলনাস্থ ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের আয়োজনে জাদুঘর প্রাঙ্গনে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ‘বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চেতনা নির্মূলের চেষ্টা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ও লেখক গৌরাঙ্গ নন্দী। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন গণহত্যা জাদুঘরে ট্রাস্টি শঙ্কর কুমার মল্লিক। 

অনুষ্ঠানে সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন গণহত্যা জাদুঘরের উপদেষ্টা শ্রদ্ধেয় সৈয়দ মনোয়ার আলী। 

স্বাগত বক্তব্য দেন জাদুঘর ট্রাস্টি অমল কুমার গাইন। সঞ্চালনা করেন গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক রিফাত ফারজানা। 

প্রাবন্ধিক গৌরাঙ্গ নন্দী তার প্রবন্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পটভূমি ব্যাখ্যা করেন। ৪৭ এর দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে যে বাঙালি জাতীয়তাবোধের জাগরণ দেখা দেয় তাতে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়। 

স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত সংক্ষেপে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়। তিনি দেখান যে, যে কারণে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল, অর্থাৎ এই জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য, সেটা তারা অনেকাংশে করতে সক্ষম হয়েছে। 

যুদ্ধাপরাধ ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের জন্য তিনি বর্তমানের সরকারের প্রশংসাও করেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশে যে সংখ্যালঘু নিপীড়ন চলছে সেটাও তার আলোচনাতে উঠে আসে। 

প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন শঙ্কর কুমার মল্লিক। সভাপ্রধান সৈয়দ মনোয়ার আলী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত পাকিস্তানি জেনারেল ও তাদের মনোভাব নিয়ে আলোচনা করেন।   

আজ থেকে অর্ধশতাব্দী পূর্বে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও তাদের দোসররা তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে শেষবারের মত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালিদের ওপর। 

তবে বিজয়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তের সেই আক্রমণ ছিল অনেক পরিকল্পিত ও প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। যে রাষ্ট্র কিছুদিন পরে জন্মগ্রহণ করতে যাচ্ছে, যে জাতি আর কিছুদিন পরে দুনিয়ার বুকে তার আগমণ জানান দিতে যাচ্ছে, সেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদেরকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় বধ্যভূমিতে। উদ্দেশ্য ছিল পুরো একটা জাতিকে পঙ্গু করে দেয়া। 

তবে, কেবল শেষবেলাতেই যে বুদ্ধিজীবীদের ওপর আক্রমণ হয়েছে তা নয়, বরঞ্চ পচিশ মার্চ থেকে একাত্তরের পুরো নয় মাসই বুদ্ধিজীবীদেরকে দমন পীড়ন করা হয়েছে। আজ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড দিবসে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেই সূর্যসন্তানদের। 

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শুরুতেই এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। দর্শকরা প্রশ্নোত্তর পর্বে সরাসরি প্রাবন্ধিকের কাছে তার প্রবন্ধের বিষয়ে প্রশ্ন করেন, এবং প্রাবন্ধিক উত্তর প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটি সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। 

 


শেয়ার করুন

-সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন
ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top