রৌমারীতে অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়ের অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও

S M Ashraful Azom
0

 : কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চৌকিদারি ট্যাক্সের নাম করে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেন এলাকাবাসী। 

রৌমারীতে অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়ের অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও



 অবস্থার বেগতিক দেখে বিশাল নামের অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়কারীকে চরথাপ্তর ও কিলঘুষি মারেন ইউপি চেয়ারম্যান ও যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেও সরকার। ট্যাক্সের অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে বলে জানান তিনি। পরে ট্যাক্স আদায় বন্ধ করে দেন চেয়ারম্যান। রবিবার সাড়ে ১১ দিকে উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের চৌকিদারি ট্যাক্স নেওয়ার জন্যে ৭জন ব্যক্তি রৌমারী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদে এ চুক্তির মাধ্যমে চৌকিদারী ট্যাক্স আদায়কারী হিসেবে কাজ করছেন কিছু দিন থেকে। এদিকে উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার খানা পরিবার রয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের বসতরঘর অনুযায়ী চৌকিদারী ট্যাক্স আদায় করছেন ৩জন ব্যক্তি। একজন সুপারভাইজার ও দু’জন মাঠকর্মী রয়েছেন। তারা হলেন, সুপারভাইজার তারিকুল ইসলাম, বিশাল ও আব্দুর রহিম। আদায়কারীরা ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন বাসিন্দাদের কাছ থেকে বসতঘরের ওপর চৌকিদারী ট্যাক্স আদায় করে ১০০% মধ্যে আদায়কারী হিসেবে ২০% ট্যাক্সের আদায়ের অর্থ নিবেন। বাকি ট্যাক্সের ৮০% অর্থ পরিষদকে দিবেন আদায়কারীরা। কিন্তু প্রতিটি পরিবার থেকে ট্যাক্সের নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠে আদায়কারীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় রবিবার বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদ ঘেড়াও করেন এলাকাবাসী। পরে ইউপি চেয়ারম্যান এলাকাবাসীকে শান্ত করে ইউপি সচিব ও আদায়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

খঞ্জনমারা গ্রামের সাইদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ছোট চারটি ঘরের ৫শ ২০ টাকা চৌকিদারী ট্যাক্স নিয়েছেন আদায়কারীরা। আমি এ অর্থ না দিলে পুলিশের ভয় দেখান তারা। পরে বাধ্য হয়ে ওই টাকা পরিশোধ করেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা গরীব মানুষ এমনিতে বাজার জিনিসপত্রের দাম বেশি তাঁর উপর বাড়তি এ চৌকিদারী ট্যাক্স নিচ্ছেন।

একই গ্রামের হারুন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার দুটি ভাঙাচুড়া ঘর রয়েছে। ঘর দুটি জন্যে ৩০০ টাকা ট্যাক্স নিয়েছেন। কিন্তু পরিষদে এসে শুনি আমার নামে ১৪০ টাকা মাত্র ট্যাক্স। এভাবে প্রকাশ্যে আমাদের বোকা বানিয়ে গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষের কাছে ট্যাক্সের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন তারা। এ জন্যে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করেছি।

অভিযোগের ব্যাপারে চৌকিদারী ট্যাক্স আদায়কারী সুপারভাইজার মো. তারিকুল ইসলাম সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাঠকর্মীরা চেয়ারম্যানের নির্দেশে ট্যাক্সের নির্ধারিত ফি’র বাইরে কিছু অর্থ অতিরিক্ত নিয়েছেন। এ অর্থ তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। 

ইউপি সচিব আমিনুল ইসলাম অভিযোগ বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, ট্যাক্স আদায়কারীদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে আমি কিছুই বলিনি। তবে বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেব জানেন। তিনি আরও বলেন, আমার যদি অভিযোগ তদন্ত করে সত্য পায় তাহলে আমার যে ব্যবস্থা নেবে সেটা আমি মেনে নিবো।

ট্যাক্সের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. আব্দুল কাদের সরকার বলেন, ট্যাক্সের নির্ধারিত ফি’র বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগে সকাল থেকে এলাকাবাসী পরিষদ ঘেরাও করেন তা সত্য। কিন্তু পরে এলাকাবাসীকে শান্ত করে আদায়কারী ও ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাদের জানিয়ে ঘেরাও বন্ধ করে চলে যান এলাকাবাসী। তিনি আরও বলেন, আমি কোন ট্যাক্সের নামের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কোন অনুমতি দেয়নি। কেউ বললে তা মিথ্যা। 

প্রসঙ্গগত, দ’ুমাস আগে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরবেশ আলী অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়কারীদের এভাবে চরথাপ্তর মেরে পরিষদ থেকে বের করে দেন। পরে তাঁর ইউনিয়নে ট্যাক্স আদায় বন্ধ রয়েছে।



শেয়ার করুন

সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশে আপোষহীন

ট্যাগস

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top