জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে লাখো দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো আবহমান বাংলার ঐহিত্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা। দুই দিনব্যপী আয়োজিত নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতায় বিজয় ছিনিয়ে নেয় অপর একটি নৌকার ধাক্কায় ভেঙ্গে যাওয়া নৌকা সোনমূখী রকেট।
ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতি, জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জামালপুর পৌরসভা যৌথভাবে শহরের ছনকান্দায় ব্রহ্মপুত্র নদে দুই দিনব্যাপী নৌকা বাইচের আয়োজন করে। শুক্রবার প্রতিযোগীতার প্রথম দিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশেপাশের জেলা থেকে আগত মোট ১৫টি নৌকার মধ্যে ৮টি নৌকা দ্বিতীয় রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়। শনিবার বিকেলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উত্তীর্ণ ৮টি নৌকা থেকে ৪টি নৌকা সেমি ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। সেমি ফাইনালে অংশ নেয় ইসলামপুর উপজেলার সোনামুখি রকেট, মনিরাজ, মেলান্দহ উপজেলার শাহপরান ও ময়ুরপঙ্খী বাইচের নৌকা। সেমি ফাইনালে বিজয়ী হয়ে চূড়ান্ত পর্বের ফাইনালে অংশ নেয় সোনামূখী রকেট ও মনিরাজ নামে দুইটি নৌকা। মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া থেকে নৌকা বাইচ উপভোগ করতে আসা দর্শক সোলায়মান কবির সেলিম জানান, সেমিফাইনালে অংশ নেয়ার আগ মূহূর্তে নৌকা ঘুরানোর সময় ব্রহ্মপুত্র নদে চলাচলরত একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকার সাথে ধাক্কা লেগে সোনমূখী রকেটের সামনের গলুইয়ের অনেকটুকু অংশ ভেঙে যায়। পরে তাৎক্ষনিকভাবে মেরামত করে সেমি ফাইনালে অংশ নেয় সোনামূখী রকেট। ফাইনালে অংশ নিয়ে ইসলামপুর উপজেলার সোনামূখী রকেট ভাঙ্গা নৌকা নিয়েই মনিরাজকে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে, মেলান্দহ উপজেলার শাহপরান ও ময়ুরপঙ্খী নৌকার মধ্যে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা অনুষ্ঠিত হয়, এতে ময়ুরপঙ্খীকে পরাজিত করে তৃতীয় স্থান অর্জন করে শাহপরান। নৌকা বাইচ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো: মোজাফফর হোসেন এমপি, পুলিশ সুপার মো: কামরুজ্জামান, ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতির মহাসচিব গ্রæপ ক্যাপ্টেন (অব:) শফিকুল ইসলাম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মির্জা জিল্লুর রহমান শিপনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, গ্রামাঞ্চলে সচরাচর নৌকা বাইচের আয়োজন করা হলেও শহরাঞ্চলের মানুষ নৌকা বাইচের উন্মদনা থেকে বঞ্চিত ছিলো। জামালপুর শহর ঘেষা ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা বাইচের এই আয়োজনে লাখো দর্শকের উপস্থিতি প্রমাণ করে নির্মল বিনোদনের কোন বিকল্প নেই। সকলের সহযোগীতা পেলে ভবিষ্যতেও এ ধরণের নৌকা বাইচের আয়োজন করা হবে।
পরে নৌকা বাইচে বিজয়ী ইসলামপুর উপজেলার সোনামূখী রকেট নৌকার দলকে দেড় লক্ষ টাকা, একই উপজেলার রানার্সআপ মনিরাজকে এক লক্ষ টাকা ও তৃতীয় অবস্থানে থাকা মেলান্দহ উপজেলার শাহপরানকে ৭৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। নৌকা বাইচ দেখতে ব্রহ্মপুত্র নদের দুই তীরে ছিলো লাখো মানুষের ভীড়।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।