রৌমারীতে ৮ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা

Seba Hot News
0

শফিকুল ইসলাম: একটি ব্রীজ ও ৮ কিলোমিটার রাস্তা পাঁকাকরণ না করায় দূর্ভোগে পড়েছে ১৩ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। 

রৌমারীতে ৮ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশা



বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একাধীকবার আবেদন দিলেও কোন কাজ হয়নি। দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এই এলাকায়। 

জীবনের উপর ঝুকি নিয়ে বাঁশের সাকোঁ পারাপার হচ্ছে ওই এলাকার মানুষ। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বিভিন্ন হাটে বাজারে নিতে অতিরিক্ত খরচ ব্যয় করতে হচ্ছে তাদের। ব্যহত হচ্ছে বিজিরি’র টহল। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের সায়দাবাদ সংলগ্ন রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে সংযোগ বিকরিবিল, লালকুড়া, বকবান্দা নামাপাড়া, বকবান্দা, খেওয়ারচর, উত্তর আলগার চর দক্ষিণ আলগার চর, বংশির ভিটা, লাঠিয়ালডাঙ্গা সহ বিভিন্ন গ্রাম হয়ে বালিয়ামারী খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। 
(ads1)
দীর্ঘদিন থেকে এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক কর্মচারি, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারি সহ শতশত মানুষ যাতায়াত করেন। 

বর্তমানে ধুলোর কারনে রাস্তাটি দিয়ে পায়ে হেটে যেতে পাথচারিদের অতিকষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। তাছাড়াও বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল দিয়েও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে যেতে অতিরিক্ত পরিবহন খরচ করতে হয়। 

এক মন ওজনের একবস্তা মালামাল আট কিলোমিটার পাঁকা রাস্তার পরিবহণ খরচ হতো ২০ থেকে ২৫ টাকা। এসব কাঁচা রাস্তায় খরচ হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত। স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা তাদের পায়ের সেন্ডেল জুতা হাতে নিয়ে প্রায় ঘন্টাব্যাপী পায়ে হেটে যাচ্ছে স্কুলে। ধুলাবালির কারণে অধিকাংশ শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 
(ads2)
দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকেই। বৃষ্টি ও বন্যার সময়ে ঠিক একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। অপর দিকে বালিয়ামারী জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁশের সাকোঁ দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে পারপার হচ্ছে অত্র এলাকার মানুষ। স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও নির্মিত হয়নি একটি পাঁকা ব্রীজ। 

স্থানীয়রা তাদের কষ্টের উপার্জিত টাকা ও স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে প্রতিবছর এই বাঁশের সাকোঁ তৈরি করেন। সাকোঁটি দেখাশোনার জন্য নিদিষ্ট একজন শ্রমিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

তিনি জনপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা নেন পথচারিদের কাছ থেকে। বালিযামারী জিঞ্জিরাম নদীতে একটি পাঁকা ব্রীজ ও রাস্তাটি মেরামতের জন্য একাধীকবার আবেদন দিলেও জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসেনি। 

এ নিয়ে কয়েকবার উপজেলা পরিষদে সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। তাতেও কোন কাজ হয়নি। অথচ প্রতিবছর লজিক, টিআর, কাবিটা, কাবিখা, এলজিইডি, মঙ্গা সহ কোটি কোটি টাকার প্রকল্প দেওয়া হচ্ছে উন্নয়নের জন্য। তবুও অবহেলিত রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক।
(ads1)
লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিম উদ্দিন বলেন, কি বলবো আর দুঃখের কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। তিনি আবেগের সাথে বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের সবকটি অঞ্চলে উন্নয়ন করেছেন কিন্ত দুঃখের বিষয় এঅঞ্চলটিতে উন্নয়ন কেন করছেন না জানিনা। 

তিনি আরও বলেন দেশ স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম হতে যাচ্ছে এই বয়সে নড়বড়ে বাশেঁর সাকোঁতে যাতয়াত করছি জীবনের ঝুকি নিয়ে। এর সমাধান কার কাছে গেলে পাওয়া যাবে জানতে ইচ্ছে করছে। 

আমি সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা এবং লাঠিয়াল ডাঙ্গা দুই গ্রামের মাঝখান দিয়ে ভারত থেকে বয়ে আসা জিঞ্জিরাম নদী- এই নদের উপর একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করে দিলে এই অঞ্চলের মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখতে পাবে। 

আলগারচর গ্রামের আলহাজ্ব হাসেন আলী বলেন, আরো কত দিন বাশেঁর সাকোঁ ও কাঁচা রাস্তা দিয়ে কষ্টে যাতায়াত করবো। দেশ স্বাধীন করেছি শান্তিতে থাকার জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে নদীর উপর ব্রীজ ও পাঁকা রাস্তাটি এক নজর দেখে যেতে চাই। 
(ads2)
চর লাঠিয়াল ডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস ছাত্তার দেওয়ানী বলেন, অনেক কষ্টে আমাদের সন্তানরা যাতায়াত করে স্কুলে যায় এবং বাশেঁর সাকোঁ পার হয়। ব্রীজটি নির্মিত হলে দূর্ভোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। সরকারের কাছে প্রাণের দাবী ব্রীজ ও রাস্তাটি যেন মেরামত করে দেন। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, এইসব এলাকার রাস্তাগুলো উন্নতি হলে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে। তিনি আরও বলেন আমি এসকল রাস্তার বিষয় অবগত আছি বরাদ্দ আসলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

0Comments

খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top