সেবা ডেস্ক: চলমান উন্নয়ন বজায় রাখা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য সামনে রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট আজ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে।
বৈশ্বিক মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সফলভাবে মোকাবিলা করে চলমান উন্নয়ন বজায় রাখা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য সামনে রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট আজ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে 'টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা' শ্লোগান সম্বলিত এই বাজেট পেশ করেন।
(ads1)
বাজেট পাসের প্রক্রিয়া
আজ বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এই মঞ্জুরি দাবিগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়। বিরোধীদলের ৬ জন সংসদ সদস্য মোট ২৫১টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় খাতে ৩টি মঞ্জুরি দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করা হয়। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।
বাজেটের প্রধান উপাদান
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা। সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা দেখানো হয়েছে, যা জিডিপি’র ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
অর্থায়ন ও ঋণ পরিশোধ
এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক ঋণ থেকে ৯৫ হাজার ১শ’ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯শ’ কোটি টাকা আহরণ করা হবে। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ঋণ পরিশোধ খাতে ৩৬ হাজার ৫শ’ কোটি রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ১৫ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা, ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ২৩ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
(ads2)
বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা
বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৬ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৫.৯২ শতাংশ। ভৌত অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৭.১২ শতাংশ।
সামাজিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য খাতে বরাদ্দ
বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি, রাষ্ট্রায়ত্ত, বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৮৩ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা। সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫শ’ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৪.২৪ শতাংশ।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।