সেবা ডেস্ক: জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনা-ব্রক্ষপুত্র নদ-নদী বিধৌত অঞ্চলে ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত উপজেলা।
প্রায় ৫ লাখ মানুষের বসবাস। এ উপজেলা ৫০শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একমাত্র ভরসা। সকল বাসিন্দা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্ভরশীল হলেও চিকিৎসক সংকট,সরকারী চিকিৎসার পরিবর্তে অতিরিক্ত লাভের আশায় প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো,দালালদের খপ্পর ও দায়িত্বরতদের গাফলতির এবং অফিস সময়রে আগেই কর্মরতরা অফিস ত্যাগ করার কারণে প্রতি নিয়তই ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের। অন্যদিকে অনুপস্থিত থেকেও প্রতি মাসে এসে বেতন উত্তোলন করছে। এ যেন এক রহস্যময় অধ্যায় যেন দেখার কেউ নেই।
হাসপাতাল সুত্রে জানায়, ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালসহ ৩টি স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের কনসালটেন,জুনিয়র কনসালটেনসহ মোট ৩৩টি পদ থাকলেও ৮জন মেডিক্যাল অফিসার ও ৬জন কনসালটেন্ট কর্মরত রয়েছেন । এতে ৯জন পদায়ন, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ২জন, বনিয়াদি প্রশিক্ষনে ১জন,অর্জিত ছুটিতে ১জন, ডেপুটেশনে ২জন ও প্রেশনে ২জন ও উচ্চতর প্রশিক্ষনে দুইজন আবেদিত থাকায় দুইজন দিয়ে চলছে পার্শবর্তী উপজেলা সহ প্রায় ৬লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা। এছাড়াও মেডিক্যাল অফিসার সংকটের কারনে আন্তঃ বিভাগে ভর্তি রোগীদের ছাড়পত্র ,রেফার্ডসহ লেবার ওয়ার্ডে রাউন্ড মাতৃত্ব সেবা অনেক বিড়াম্বনা হচ্ছে। কর্মরত ছয়জন জুনিয়র কনসালটেন্ট থাকলেও কর্মফাকি সহ অফিস চলাকালনি সময়ে নিয়মতি না থাকায় উপ সহকারী মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এছাড়াও সার্জারী, মেডিসিন,কাডিওলজিষ্ট,ডেন্টাল সাজর্ন,এমটি ফিজিওথেরাপি, চিকিৎসক না থাকায় স্বাস্থ্য সেবা চরম ভাবে বিঘিœত হচ্ছে। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি স্টাফ নার্স, ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্নকর্মী সংকট সহ নানান সমস্য জর্জরিত হয়ে অনিয়ম নিয়মে পরিনত হয়েছে হাসপাতালটিতে।
জানাগেছে,উপজেলার পশ্চিমঞ্চলের দূর্গম যমুনার উপারে প্রায় ৪০টি গ্রাম কুলকান্দি ইউপির জিগাতলা, বেড়কুশা, হরিনধরা, চর হরিনধরা, চর কুলকান্দি, বেলগাছার মন্নিয়া, বরুল, সিন্দুরতলী, প্রজাপতি,চর মন্নিয়া,শিলদহ,সাপধরী সম্পূন্ন ইউনিয়ন চিনাডুলী ইউনিয়নের চর নন্দনের পাড়া,বীর নন্দনের পাড়া,ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কিছু অংশ বিভিন্ন দিক থেকেই বঞ্চিত মানুষের বসবাস। এসব এলাকার মানুষ গুলো স্কুল ও কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে তারা খুব বেশী বঞ্চিত। দূর্গম যমুনার চরাঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো বেশীর ভাগ বন্ধ থাকায় সময়ের প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে দালালদের খপ্পরে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়তই চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের হয়রানী স্বীকার হতে হচ্ছে। কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে দুর্ভোগের শিকার রোগীদের যেতে হয় বাইরের কোন ক্লিনিক বা জামালপুর সদর হাসাপাতালে। এতে চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে চরাঞ্চলের নিন্ম আয়ের মানুষদের।
অভিযোগ উঠেছে, সরকারী চিকিৎসার পরিবর্তে অতিরিক্ত লাভের আশায় প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো হচ্ছে। এতে অসহায় রোগীরা চিকিৎসার নামে হয়রানীর স্বীকার হয়ে বাড়ি ফিরছে। উৎ পেতে থাকা দালালরা সাধারন রোগীদের হাসপাতাল গেইটে প্রবেশ করা মাত্রই সেবার নামে ডেকে নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত টেষ্ট সহ অন্যান সুবিধার প্রতিশ্রæতি দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা না পেয়ে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে বাড়ি ফিরে। সিডিউল টাইম মাফিক ডাক্তার না থাকারও অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাথরুম গুলো অস্বাস্থ্যকর থাকলেও ভর্তি বিভাগের অবস্থা আরো নাজেহাল। নোংরা পরিবেশে থেকে আরো অসুস্থ্য হয়ে পরেছেন বলে রোগীদের ও স্বজনদের অভিযোগ রয়েছে। তীব্র তাপদাহে যখন অতিষ্ঠ জন জীবনে তখন সেবা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই ।
এছাড়াও আধুনিক সয়ংকৃত একটি অপারেশন থিয়েটার দেশী-বিদেশী কোটি-কোটি টাকার যন্ত্রপাতি রয়েছে। দীর্ঘ দিন যাবত সার্জিকেল ডাক্তার ও এন্থেসিয়া ডাক্তারের অভাবে অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে। ফলে অপারেশন থিয়েটারের কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে। বন্যা ও নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা এ’অঞ্চলের মানুষের।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এএএম আবু তাহের জানান, চিকিৎসক সংকটসহ নার্স অনুপস্থিতের বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি। আশা রাখছি দ্রæত সময়ের মধ্য ব্যবস্থা হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।