সেবা ডেস্ক: দেশের পরিস্থিতি আবার অশান্ত হয়ে উঠেছে। ২১ জুলাই পর্যন্ত যে তাণ্ডব, নাশকতা তাঁর প্রেক্ষিতে সরকার দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করেছিলো।
সেনা মোতায়েনের পর পরিস্থিতি আস্তে আস্তে শান্ত হতে শুরু করে। এক সপ্তাহ পরিস্থিতি শান্ত থাকার পর সরকার কারফিউ অনেকটাই শিথিল করে দিয়েছিলো এবং কর্মজীবন স্বাভাবিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
কিন্তু আগস্ট মাসের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়েছে আবার উত্তপ্ত পরিস্থিতি। গত ২ আগস্ট দ্রোহের পদযাত্রা এবং ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে এক দফা ঘোষণা করে এবং আজ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হয়। এই অসহযোগ আন্দোলনে আজ উত্তপ্ত হয়ে পড়েছিলো সারাদেশ। সারাদেশে এখন পর্যন্ত ৯০ জনেরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্র বলছে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি।
এদিকে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আবার অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করেছে এবং তিন দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এমন বাস্তবতায় দেশ কোন পথে যাচ্ছে। দেশের পরিস্থিতি কি হচ্ছে সেটি নিয়ে এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার উপক্রম। নিম্ন আয়ের মানুষ দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। অগ্নিসংযোগ, নাশকতার মধ্য দিয়ে এক আতঙ্ক পুরীতে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ। এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে দেশ ধাবিত হচ্ছে।
এসময় সাধারণ নাগরিকদের প্রশ্ন দেশ কোথায় যাচ্ছে? দেশে কি হচ্ছে? সামনের দিনগুলোতে কি হবে?
রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা কাউন্সিলের ঘোষণা করেছে এবং সেখানে সন্ত্রাস, সহিংসতা কঠোরভাবে দমনের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নেমেছে। তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে, এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে তিনটি বিকল্প রয়েছে।
প্রথমত, সরকারকে কঠোরভাবে নাশকতা দমন করতে হবে। এখন এটি স্পষ্ট, যে সন্ত্রাস এবং তাণ্ডব চালানো হচ্ছে সেটি শিক্ষার্থীদের সৃষ্টি নয়। এটি একটি গোষ্ঠীর তাণ্ডব এবং নাশকতা। এই সন্ত্রাসী তৎপরতাকে দমন করার জন্য সরকারের যা যা করার প্রয়োজন সেটি করতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি সরকার মনে করে, জরুরী অবস্থা জারি করতে হবে সেটিও করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দ্বিতীয়ত, কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদেরকে প্রকৃত বাস্তবতা বোঝাতে হবে। তাদের শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সাথে কথা বলতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন বিভ্রান্তির চোরাবালিতে আটকে না যায় সেকারণে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
তৃতীয়ত, সংকট নিরসনের উপায় উদ্ভাবনের জন্য একটি জাতীয় সংলাপের সূচনা করতে হবে। শুধুমাত্র আওয়ামী পন্থি বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক নয়। সমাজে যারা নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছেন তাদের সকলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে বৈঠকে মিলিত হতে হবে। এবং একটি রাজনৈতিক সমঝোতার পথে দেশকে নিয়ে আসতে হবে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
এঅবস্থায় দেশ বেশিদিন চললে যেকোন অশুভ শক্তি দানা বেঁধে উঠতে পারে এবং অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটতে পারে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।