সেবা ডেস্ক: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ও অর্থপাচার দেশের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করেছে, তবে তা কতটা কার্যকর হবে?
অর্থপাচার ও মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে বাংলাদেশের অর্থনীতি: অন্তর্বর্তী সরকার কী করতে পারবে?
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অর্থপাচার ও মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনামলে গোষ্ঠীতন্ত্র তৈরি হওয়ায় এবং অর্থপাচারকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা না হওয়ায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি চরম সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এখন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই মাসের সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।
অর্থপাচারের ভয়াবহতা
বাংলাদেশ শীর্ষ অর্থপাচারকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২ লাখ কোটি টাকার বেশি অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এর ফলে, দেশের আর্থিক সঙ্কট আরও ঘনীভূত হয়েছে। পাচার হওয়া অর্থের বেশিরভাগই যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে জমা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার সরকারের উদ্যোগ
বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট পাচার রোধে কাজ করছে, তবে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ করছে এবং কিছু দেশে ইতিমধ্যেই চিঠি চালাচালি শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, সাবেক সরকারের মন্ত্রী সাইফুজ্জামানসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিদেশে থাকা সম্পদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চ্যালেঞ্জ
অর্থপাচার ঠেকানো গেলেও পাচার করা অর্থ ফেরত আনা খুবই জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রক্রিয়া। পাচার হওয়া অর্থের গন্তব্য দেশগুলোর সহায়তা পাওয়া, বিশেষ করে তাদের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদিও সরকার অর্থপাচারকারীদের সম্পদ জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে, তবে তা কতটা কার্যকর হবে, তা এখনও অনিশ্চিত।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
অর্থপাচার ঠেকাতে রাজনৈতিক সুশাসনের ঘাটতি এবং অর্থনৈতিক মাফিয়াদের সাথে ক্ষমতাসীন দলের কিছু গোষ্ঠীর জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে। বিশেষ করে, চট্টগ্রামের বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমের নামও বারবার উঠে আসছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন এবং এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্ঞান ছিল।
সমাধান ও ভবিষ্যৎ করণীয়
যদিও পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা কঠিন, কিন্তু সম্পদগুলো ফ্রিজ করে রাখার মাধ্যমে পাচারকারীরা তাদের সম্পদ ফেরত আনতে না পারার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে, পাচারকারীরা যদি অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে থাকেন, তবে আইনি জটিলতা বাড়তে পারে। এর জন্য আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে হবে।
খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।