যারা মূল্যবান
ধাতু স্বর্ণ কিনে জমিয়ে রেখেছেন তাদের জন্য বড় দুঃসংবাদ। বিশেষ করে ২০১১
সালের মাঝামাঝি যারা সোনা কিনেছেন তাদের জন্য দুঃসংবাদের মাত্রাটা আরেকটু
বড়। চলতি বছরের শেষে তাদের জমানো সোনার দাম নেমে আসবে প্রায় অর্ধেকে।
বিশ্ববাজারে বর্তমানে প্রতি আউন্স (৩১ গ্রাম বা ২ ভরি সাড়ে ১০ আনা) সোনার
দাম নেমে এসেছে ১১শ চার মার্কিন ডলারে। বছর শেষে তা এক হাজার ডলারে নেমে
যেতে পারে বলে পূর্বাভাস মিলেছে। উল্লেখ্য, সামপ্রতিক সোনার সর্বোচ্চ মূল্য
ছিলো ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে। সে সময়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে
১৯শ মার্কিন ডলারে।
সোনার
দাম পড়ে যাবার মূল কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল
রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়ে দেয়ার ঘোষণা। বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণ বিক্রি করে
মার্কিন ডলার এবং সে দেশের বন্ডে বিনিয়োগ করার জন্য মুখিয়ে আছেন।
এর
বাইরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম পড়ে যাবার পেছনে চীনের কারসাজিও আছে। চলতি
বছর দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন সোনা কেনার ঘোষণা
দিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা সে ঘোষণা থেকে সরে এসে ১৬শ ৫৮ মেট্রিক টন সোনা
কেনার কথা জানিয়েছে। চীনের এ ঘোষণা সোনার বিশ্ববাজারে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে।
বিশ্ব
মুদ্রাবাজারে সোনার দাম কমে যাবার পেছনে শক্তিশালী মুদ্রা মার্কিন ডলারের
অবদানও কম নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার সাথে গত বছর মার্কিন ডলারের
দাম বেড়েছে ২০ শতাংশের মতো। বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলার শক্তিশালী হলে সোনার
দাম কমে যায়। আবার ডলারের দাম পড়ে গেলে সোনার দাম বেড়ে যায়। কারণ
বিশ্ববাজার থেকে মার্কিন ডলারের বিনিময়ে সোনা কিনতে হয়।
এদিকে,
সোনার দাম ক্রমাগত পড়তে থাকায় চীন গত কয়েকদিনে তাদের রিজার্ভ থেকে সোনা
বিক্রি শুরু করেছে। গত কয়েকদিনে তারা ৩৩ মেট্রিক টন সোনা খোলাবাজারে বিক্রি
করেছে। এতে সোনার কারবারিরা অনেকে আতংকে সোনা বিক্রি করে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
বিশ্ববাজারে
সোনার দাম পড়তে শুরু করায় বাংলাদেশের বাজারে এর প্রভাব পড়বে। এখানেও গত
কয়েক মাসে ক্রমান্বয়ে দাম কমে আসছে। এ বিষয়ে আপন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী
গুলজার আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রতি ভরি সোনা বিক্রি হচ্ছে
৪২ হাজার টাকায়। সে হিসাবে প্রতি আউন্স সোনার দাম এক লাখ ১২ হাজার টাকা।
তিনি জানান, বাংলাদেশে সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিলো প্রতি ভরি ৬১ হাজার টাকা।
ক্রমান্বয়ে তা কমে এসেছে। আরো কমবে। কারণ বিশ্ববাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে
দাম ঠিক না করলে চোরাচালান বাড়বে। তবে দেশীয় বাজারে সোনার দাম কি হবে তা
ঠিক করে জুয়েলারি এসোসিয়েশন।