ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টটা এ অর্থে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন এক ঘটনা ছিলো।
এই
দিন অবশ্য বদলাচ্ছে। গত আট-নয় মাসে বাংলাদেশ নিজেই বড় দল হয়ে উঠছে। ফলে
আশা করা যেতে পারে পরের দফা এফটিপির ক্ষেত্রে র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকা
দলগুলোর সঙ্গে দরকষাকষির ক্ষমতাও বিসিবির বাড়বে।
সেই
প্রথম জুন-জুলাইতে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হলো টেস্ট ক্রিকেট। আসলে
টেস্ট বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দূরে থাক, এই বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে কখনো
ঘরোয়া ক্রিকেটও খুব একটা অনুষ্ঠিত হয় না। মৌসুম পরবর্তী ছুটির সময় এটা। এই
সময়ে খেলা আয়োজন করলে যে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ ম্যাচ ভেসে যাবে বৃষ্টিতে,
তা সবাই বোঝেন।
তারপরও
এই সময়েও কেন এবার একটার পর একটা টেস্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে? আসলে এ ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড অনেকটাই নিরুপায় একটা অবস্থানে পড়ে গিয়েছে। এইভাবে
হতাশা তৈরি হওয়ার একটা বড় দায় অবশ্য আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের ওপরই যায়, তা
বোঝেন বোর্ড পরিচালক ও জাতীয় দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও। জেনেশুনে
এমন ঘোর বর্ষকালে খেলা ফেলাটা উচিত হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন
বলছিলেন, ‘আসলে এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না। বড় দলগুলোর খেলার
সময়সূচি মিলিয়েই আমাদের খেলার সময় নির্ধারণ করতে হয়। এক্ষেত্রে কিছু করার
থাকে না আমাদের।’
এই
পুরো ঘটনাটা ঘটেছে ২০১৪ সালে আইসিসির ভবিষ্যত্ সফরসূচি (এফটিপি) আইন বাতিল
হয়ে যাওয়ায়। আগে আইসিসির মধ্যস্থতায় বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক সফরসূচি তৈরি হতো
দুই দেশের সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনা করে। কিন্তু গত বছর থেকে কার্যকর হওয়া
নিয়মে বলা হয়েছে, এখন থেকে দুই আয়োজক দেশই ঠিক করবে এফটিপি কী হবে। ফলে
দুর্বল শক্তির দেশ বাংলাদেশের দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় বড় দেশগুলোর কাছ থেকে
সফরের প্রতিশ্রুতি পেতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) অত্যন্ত
প্রশংসনীয়ভাবে অনেকগুলো সফরের প্রতিশ্রুতিও নিয়ে নেয় বিভিন্ন দেশের কাছ
থেকে।
কিন্তু
সমস্যা হলো, ভেতরে যেহেতু আইসিসির মধ্যস্থতা নেই, তা বড় দেশগুলো তাদের
সূচির আকর্ষণীয় সময়গুলো অন্য বড় দেশগুলোর বিপক্ষে খেলার জন্য রেখে দেয়। আর
আমাদের ভাগে বরাদ্দ পড়ে এসব ‘অসময়’।