এখনও বিপজ্জনক টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডে বিস্ফোরণের ১০ বছর

S M Ashraful Azom
জেলায় টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডে বিস্ফোরণের ১০বছর পরও বিপদজ্জনক অবস্থায় বসবাস করছে এখানের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। গ্যাস ফিল্ড এলাকার বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাটের ফাটল, ক্ষেতের জমি, পুকুর এবং টিউবওয়েল দিয়ে এখনো বুদবুদ আকারে অনবরত গ্যাস বের হয়ে আসছে। মাঝে-মধ্যে গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পেলে এলাকা জুড়ে আতংকের সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার বাপেক্সের ভূ-তত্ত্ব বিভাগীয় প্রধান মিজানুর রহমান ও ডিজিএম ওহিদুল ইসলাম টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্র এবং টেংরা গ্রামসহ আশপাশ এলাকা পরিদর্শন করেন।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এখানে উদগিরীত গ্যাস স্থানীয় প্রযুক্তিতে বিপদজ্জনকভাবে ব্যবহার করছে কিছু লোক। রান্নার কাজে পুকুর ও খাল থেকে পাইপ দিয়ে গ্যাস উঠিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। ছোট-ছোট পাইপের সাহায্যে নেয়া গ্যাস টেংরাটিলা গ্রামের বাড়িতে-বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রযুক্তিতে রান্নার কাজে প্রথম এ উদগিরীত গ্যাস ব্যবহার করে টেংরা গ্রামের কাসেম মিয়া। পরে এ পদ্ধতিতে গ্রামের অনেকেই রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার করছেন। কাসেম মিয়ার প্রথম প্রযুক্তির কারণেই এলাকার সকলেই এ গ্যাসকে কাসেম গ্যাস নামে চিনে।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের রশীদ আলীর বাড়ির একটি টিউবওয়েলে অনবরত গ্যাস উঠছে। পাশাপাশি বিনা চাপেই টিউবওয়েল দিয়ে পানি পড়ছে। গত ৩০ মে গ্রামের ইব্রাহীম হোসেনের ছেলে মোক্তার হোসেন সিগারেট নিয়ে টয়লেটে গেলে সিগারেটের আগুন থেকে আগুন ধরে তিনি দগ্ধ হয়েছেন। গ্রামের বাবর আলী জানিয়েছেন, টেংরা গ্রামের প্রায় সকল বাড়ি-ঘরের ফাটল দিয়ে গ্যাস উদগিরণের কারণে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের পাতা ঝরে পড়ছে এবং গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। টেংরাটিলা রক্ষা আন্দোলন কমিটির তত্কালীন আহবায়ক আজিম উদ্দিন মাস্টার জানান, গ্রামের প্রায় অর্ধ শতাধিক পরিবারের লোকজন অপরিকল্পিতভাবে পুকুর ও খালের উদগিরণকৃত গ্যাস পাইপ দিয়ে রান্নার কাজে বিপদজ্জনকভাবে ব্যবহার করছে। এতে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
 
তিনি বলেন, গ্যাস ক্ষেত্র এলাকার কয়েকটি গ্রাম জুড়েই পুকুর, খাল, ক্ষেতের জমির ফাটল ও টিউবওয়েল দিয়ে অনবরত বুদবুদ আকারে গ্যাস বেরুচ্ছে। প্রায় সময় গ্যাসের চাপ ও বুদবুদ বৃদ্ধি পেলে এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম এ ব্যাপারে জানান, সচেতনতার জন্য গ্যাসফিল্ড এলাকায় কয়েকটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাপেক্স বা জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
 
উল্লেখ্য, কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকো কূপ খননকালে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ডের প্রোডাকশন কূপে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। দুই দফা  বিস্ফোরণে মাটির উপরে ৩ বিসিক গ্যাস পুড়ে  অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়। ৫.৮৯ থেকে কমপক্ষে ৫২বিসিক গ্যাসের রিজার্ভ ধ্বংস হয়ে যায়। গ্যাস ফিল্ড এলাকার টেংরাটিলা, আজবপুর, গিরীশনগর, কৈয়াজুরী, শান্তিপুর গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি,ফসল ও পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে।
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top