বর্ষবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পুলিশ।
বর্ষবরণে নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সোমবার জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমন বক্তব্য দিলেও তা অস্বীকার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
নিপীড়কদের গ্রেফতার নিয়ে সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, 'চিহ্নিত ব্যক্তিদের ধরার বিষয়ে আমাদের আইজি সাহেব পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন। কয়েকজনকে আমরা ধরেছি। তাদের আইনের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। দুই-একজন বাকি আছে। তাদেরও ধরব।'
তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তিনি বলেন, ঘটনার পর বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে কয়েকজনের ছবি প্রচার করে তাদেও দোষী বলা হয়। কিন্তু এদের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী পুলিশের কাছে এসে বলেছেন, তারা ঘুরতে গিয়েছিলেন, তারা নিপীড়নে জড়িত নয়। পুলিশও তাদের কথার সত্যতা পেয়েছে।
এছাড়া নিপীড়নে জড়িত সন্দেহে একজনের সম্পর্কে তথ্য পেয়ে পুলিশ বরিশালে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু সেখানে গিয়ে এক বৃদ্ধকে পাওয়া যায়, যিনি গত পাঁচ বছরেও ঢাকায় আসেননি।
গত ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের উৎসবের সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে ভিড়ের মধ্যে একদল যুবক নারীদের ওপর চড়াও হয়। তাতে বাধা দিতে গিয়ে আহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকজন। সে সময় চার নিপীড়ককে ধরে দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে দেয়া হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকেও বিষয়টি স্বীকার করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। এক মাসেও কাউকে গ্রেফতার করতে না পেরে ছবি ও ভিডিও দেখে চিহ্নিত আটজনের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য গত ১৭ মে এক লাখ টাকা করে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। ঐ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে- তা উচ্চ আদালতও জানতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে রুল পাওয়ার পর গত ১৯ মে পুলিশের মহাপরিদর্শক আদালতে একটি প্রতিবেদন দেন। তবে ঐ প্রতিবেদনে কি আছে, তা গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি।