মুশফিক কিপিং করতে পারেন, তবে...

S M Ashraful Azom
গত কিছুদিন ধরে মুশফিকুর রহিমের উইকেট কিপিং নিয়ে কথা উঠলেই বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিরা বলেছেন, এটা খেলোয়াড়টির ওপরই নির্ভর করছে। মুশফিক সুস্থ মনে করলেই কিপিং করবেন। আবার তিনি চাপ মনে করলে এটা ছেড়ে দিতে পারবেন।
শুক্রবার জাতীয় দলের কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে অবশ্য বললেন ভিন্ন কথা। মুশফিকের ওপর নয়, তার কিপিং করা বা না করা নির্ভর করে টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর। তিনি শুধু বললেন, মুশফিক কিপিং করার মতো অবস্থায় গেলে একটা অপশন বাড়বে তাদের। তারপর তাকে দায়িত্বটা দেওয়া হবে কি না, সেটা তারা ঠিক করবেন, 'না, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে ওর আঙুলের ওপর। ও সুস্থ হলে আমাদের অপশন বাড়বে। তখন সিদ্ধান্তটা সবাই মিলে নেবো। এখন পর্যন্ত ওর আঙুলের অবস্থা ভালো। ফিজিও খুশী। ওর আঙুল দ্রুত সেরে উঠছে।'
এরপরই ব্যাখ্যাটা আরেকটু পরিষ্কার করে কোচ বললেন, 'দেখুন, মুশফিক যখনই মনে করবে, সে কিপিং করার মতো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে; আমাদের আরেকটা অপশন খুলে যাবে। আমরা সেভাবে দল সাজানোর সুযোগ পাবো। ও নিজের আঙুল নিয়ে যখনই আত্মবিশ্বাসী হবে, আমরা ওকে হয়তো সুযোগটা দেবো। ও গত কয়েকটা সেশন ধরে কিপিং করেছে। আর লিটন তো দলে আছেই।'
এর আগে ভারতের বিপক্ষে সিরিজেই টেস্টে ও ওয়ানডেতে উইকেটের পেছনে জায়গাটা মুশফিক ছেড়েছেন লিটন দাসের কাছে। ২০০৬ সালে খালেদ মাসুদ পাইলটের পর উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। শুরু থেকে তার এই অবস্থানটা চ্যালেঞ্জের মুখে কখনো পড়েনি। অবশেষে প্রায় এক দশক পর একে একে উইকেটের পেছনে জায়গাটা হারাতে শুরু করেছেন সব ফরম্যাটেই।
এর আগে ইনজুরির জন্য বিভিন্ন সময় শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। তবে টেস্টে তাকে রেখে ভারতের বিপক্ষেই আনুষ্ঠানিকভাবে উইকেটরক্ষক হিসেবে মাঠে নামানো হয়েছিলো লিটন দাসকে।
এরপর ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে ওয়ানডেতেও লিটন নিয়ে নিলেন সেই জায়গাটা।
২০০৬ সালে অভিষেক হয়েছিলো মুশফিকের বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে। অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচ থেকেই দায়িত্ব বুঝে নেন তিনি পাইলটের কাছ থেকে; লিটনও দ্বিতীয় ম্যাচে এসেই দায়িত্বটা পেলেন!
তবে সেই থেকে কার্যত মুশফিককে কখনোই উইকেটের পেছনে জায়গাটা নিয়ে চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হয়নি। এর মধ্যে ধীমান ঘোষ, সগীর হোসেন পাভেলরা আলোচনায় এলেও কখনো মুশফিককে সরিয়ে দেওয়ার ভূমিকাটা রাখতে পারেননি।
২০০৮ সালে অবশ্য ধীমান ঘোষ ওয়ানডেতে মুশফিককে একরকম সরিয়েই দিতে বসেছিলেন। সে বছর টানা ১৪টা ম্যাচে ধীমান শুধু কিপিং করেছিলেন তাই নয়, মুশফিককে একাদশ থেকেও ছিটকে দিয়েছিলেন।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়াতে দারুণ একটা সিরিজ কাটিয়ে ফেরার পরই আইসিএলে চলে গিয়ে সে অধ্যায়ের সমাপ্তি করে দেন ধীমান। ধীমানের ওই পর্বটার বিশেষত্ব ছিল এই যে, সে সময় মুশফিক একাদশে ছিলেন না। একাদশে থাকা অবস্থায় ১৫১ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এ ম্যাচ নিয়ে মাত্র ১০ ম্যাচে কিপিং করলেন না মুশফিক।
২০০৬ সালে তার ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই। এরপর চোটের কারণে ২০১০ সালে আয়ারল্যান্ডে একটি ম্যাচে কিপিং করেননি; সে ম্যাচে কোনোক্রমে দায়িত্ব সামলেছিলেন জহুরুল ইসলাম অমি। আর গত বছর আঙুলের চোটের কারণে কিপিং করেননি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ও পরে এশিয়া কাপে মোট সাতটি ম্যাচে কিপিং করতে পারেননি মুশফিক; সে সময় দায়িত্ব সামলেছিলেন এনামুল হক বিজয়।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top