কোন জ্যোতিষী দিয়ে
যদি দিন-ক্ষণ গণনা করে ভাগ্য বিচার করতে বলা হতো তবে তাতে কিছু গরমিল হয়তো
হতেই পারতো। কিন্তু স্বচক্ষে না দেখলে বলাই সম্ভব নয় যে একটি দিন একজন
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য কতটা পরিপূর্ণ হতে পারে। হ্যাঁ সেদিন ছিল
গতকাল রবিবার। আর দিনটি বোধকরি বাংলাদেশ পুলিশের পরিপূর্ণ ভাগ্যই
নির্ধারণের দিন ছিল।
সকাল
থেকে দুপুর আর দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই আরেকটি শুভ খবর। তাও পুলিশের জন্যই।
সচিব কমিটির সভা। সেখানেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড.
মোজাম্মেল হক খান। পুলিশের জন্য সাত হাজার নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব। সচিব
কমিটি সেটিও অনুমোদন করে দিয়েছে এমনই জানান জ্যেষ্ঠ সচিব। সুতরাং সবকিছু
মিলিয়ে দিনটি এতটাই শুভ বোধকরি তা কোন জ্যোতিষীর পক্ষেও অনুমান করা বা
বিচার করা কঠিনই হতো।
ঠিক
একইদিনে পদ সৃষ্টি, পদোন্নতি, সিলেকশন গ্রেড আর টাইমস্কেল প্রদানের নজির
নিকট অতীতে কোন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঘটেছে এমনটি ঠাওর করতে পারলেন
না-প্রশাসনের কেউই। শুধু কী তাই-গতকাল যখন পদোন্নতি বোর্ডের সভা হওয়ার
কথা-তার আগমূহূর্তেও আসছে প্রস্তাব। আর সে প্রস্তাব সভায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
সাধারণভাবে কোন প্রস্তাব আসলে তা যাচাই-বাছাই করে সভায় উত্থাপন করতে
সাতদিন সসয় লাগে। কিন্তু ভাগ্য এমনই সুপ্রসন্ন যে সময়তো লাগেনিই-বরং
পদোন্নতি দেয়ার জন্য লোক পাওয়া যায়নি। যখন পদোন্নতির বঞ্চনায় জনপ্রশাসন
কাঁদে।
সকালের
দিকে পদোন্নতির বোর্ড সভা বসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান এতে সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত
ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুল হক, যুগ্ম সচিব (পুলিশ) আ শ ম
ইমদাদুল দস্তগীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পরিদর্শক
থেকে সহকারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতির জন্য ৮৭ জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত
করা হয়েছে। এমনকি যাদের চাকরির বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে কিছুটা বিরূপ
মন্তব্য আছে তাদেরকেও মূল্যায়ন করা হয়েছে।
ওই
একই সভায় একই পদে চার বছর পূর্ণ করায় ১৯৫ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে
সিলেকশন গ্রেড প্রদান করার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া পুলিশ সুপার ও ঊর্ধ্বতন
পর্যায়ের ৬০ জন কর্মকর্তাকে টাইম স্কেল প্রদান করা হয়।
জাতীয়
বেতন স্কেল সুপারিশ কমিটি ও সচিব কমিটির সুপারিশ ঠিক থাকলে পুলিশের জন্য
এটি এক অনন্য ভাগ্য হয়ে থাকবে। কারণ নতুন বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম
স্কেল প্রথা বাতিলের সুপারিশ রয়েছে।