ডায়াবেটিস ও ডিপ্রেশন খুব পরিচিত দুই রোগ। অনেক সময় একই ব্যক্তির একই সাথে ডায়াবেটিস এবং ডিপ্রেশন থাকে। বর্তমানে গবেষণায় দেখা গেছে ডায়াবেটিস থাকলে যেমন ডিপ্রেশন হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে তেমনভাবে দীর্ঘদিন ডিপ্রেশন থাকলে ডায়াবেটিস ত্বরান্বিত হয়।
ডায়াবেটিসের অনেক কারণ আছে। জীনগত কারণে যেমন ডায়াবেটিস হয় আবার মানুষের অনিন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্যও ডায়াবেটিস হয়। উদহারনস্বরুপ অতিরিক্ত খাবার খেলে এবং শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরে মেদ জমা হয়। আর মেদ জমলে ইনসুলিন ঠিকমত কাজ করতে
পারেনা। ফলে দেখা দেয় ডায়াবেটিস। যাদের বাবা মা দু’জনরই ডায়াবেটিস তাদের ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী। এক্ষেত্রে ছোট বেলা থেকেই যদি তারা সাবধান হয়ে চলে, নিয়ম মানে তবে তাদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। অপরদিকে ডিপ্রেশনের অনেক কারণ আছে। আত্মীয়-স্বজন হারানো, মানসিক বা শারীরিক আঘাত, পারিবারিক দ্ব্বন্দ, মনের দ্বন্দ, বেশ কিছু ওষুধ, বড় কোন অুসখ, মানসিক চাপ, নেশা, জীনগত কারণ এবং চাকুরিজনিত জটিলতা ইত্যাদি কারণে ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ। একবার হয়ে গেলে আর ভাল হয়না। সারাজীবন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। আবার ডায়াবেটিস নিয়ে অনেক কুসংস্কার আছে। কেউ কেউ ভাবেন ডায়াবেটিস মানে জীবন শেষ। এভাবে চিন্তা করতে করতে তারা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হন। অন্যদিকে যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন এবং অত্যধিক চিন্তা করেন তাদের শরীরে ষ্ট্রেস হরমোন ইনসুলিনকে ঠিকমত কাজ করতে দেয়না এবং শরীরে চর্বি জমতে
সাহায্য করে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় ডায়াবেটিস।
গবেষণা করে দেখা গেছে যদি ডায়াবেটিসের তীব্রতা বেশী থাকে তবে সে রোগী ডিপ্রেশনে দ্রুত আক্রান্ত হন। আবার ডিপ্রেশনের তীব্রতা বেশী থাকলেও একই কথা প্রযোজ্য। আশার কথা হছে বিজ্ঞানীরাও বসে নেই। প্রতিদিনই নতুন নতুন আবিস্কার হচ্ছে। গবেষণাও হছে প্রচুর। এখন ডায়াবেটিসের যেমন অনেক ওষুধ আছে তেমন ডিপ্রেশনের ভাল ভাল ওষুধ সর্বত্র পাওয়া যায়। ডায়াবেটিস চিকিত্সায় ভাল না হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আর ডিপ্রেশন চিকিত্সায় ভাল হয়। সুতরাং ডায়াবেটিস বা ডিপ্রেশন হলে বসে না থেকে দ্রুত চিকিত্সকের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ একটার সাথে অপরটি সম্পর্কিত।

