রমজানে ডায়াবেটিক রোগীদের করণীয়

Seba Hot News
diabeticসেবা ডেস্ক: 

 আর চার-পাঁচদিন পর থেকেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। রমজানে রোজাদারদের খাবার-দাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর রাখতে হয়। তা না হলে সারাদিন রোজা শেষে উল্টা পাল্টা খাবার গ্রহণে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন ডায়াবেটিক, হার্টের সমস্যা ও বেশি রক্তচাপে ভুগছেন তাদেরতো রমযানে আরো বেশি সতর্ক থাকতে হয়। নিচে রমযানে ডায়াবেটিক রোগীদের ডায়েট কী হবে ও কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো :
রোজা পালনকালে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে যাওয়া (হাইপোগ্লাইসিমিয়া), সুগার অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া (হাইপারগ্লাইসিমিয়া), পানি শূন্যতা, ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস ইত্যাদি জটিলতা হতে পারে। তাই পুরো রমজান মাসে সঠিকভাবে রোযা পালনে ডায়াবেটিকের রোগীদের বিশেষ প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ দরকার।
এ সময় খাদ্য গ্রহণ, ব্যায়াম ও ওষুধের পরিবর্তন বিষয়ে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন ও আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সুনির্দিষ্ট চার্ট রয়েছে। এর ভিত্তিতে ডায়াবেটিক রোগীরা রক্তে শর্করার পরিমাণ, ডায়াবেটিকজনিত জটিলতার মাত্রা ইত্যাদি বিবেচনায় নতুন নিয়মসূচির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
ইফতারি : রমজান মাসে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্যালোরির চাহিদা পরিবর্তন হয় না। তবে খাবার এবং সময়ের পরিবর্তন হয়। তাই ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার গ্রহণ করতে হবে। সারাদিন রোজা পালন শেষে ইফতারের খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইফতারের সময় বিকল্প চিনি দিয়ে ইসবগুলের ভুষি, তোকমা, লেবু কাঁচা আম বা তেঁতুল শরবত ডায়াবেটিক রোগীর জন্য উপকারী। টক এবং মিষ্টি ফলের মিশ্রণে তৈরি সালাদও বেশ উপকারী। এতে খনিজ লবণ ও ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়। তবে ডাব ছাড়া অন্য কোনো মিষ্টি জাতীয় ফলের রস খাওয়া উচিত না। কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদাকুচি, টমেটো কুচি, পুদিনা পাতা ও লবণের মিশ্রণ সুস্বাদু স্বাস্থ্যসম্মত একটি খাবার। কাঁচা ছোলা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তবে ইফতারে একসঙ্গে অনেক কিছু না খেয়ে সেহরি পর্যন্ত সময়ে ধাপে ধাপে ভাগ করে খেলে ডায়াবেটিক রোগীরা ভালো থাকবেন। এতে রক্তে হঠাৎই শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে না।
রাতের খাবার: সাধারণত রমজান মাসে অনেকেই রাতের খাবার খান না। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের রাতের খাবার একেবারে বাদ দেওয়া উচিত নয়। অল্প করে হলেও খেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে রাতের বেলায় পরিমাণমতো ভাত খেলে রোগীরা ভালো থাকতে পারবেন। রাতের খাবারের তালিকায় প্রতিদিন হালকা মসলায় রান্না যেকোনো ছোট-বড় মাছ এবং সবজি রাখা উচিত।
সেহেরি: ভোররাতে ভাত খেলে সারাদিন রোজা পালনে ক্লান্তি আসবে না বলে মনে করেন অনেকেই। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সেহরির সময় রুটি অথবা ভাত যাই হোক না কেন- সেটার পরিমাণ যেন ঠিক থাকে। খাবার তালিকায় অবশ্যই মাছ, সবজি ও ডাল থাকতে হবে। ভাত বা রুটি খাওয়ার পর দুধ খাওয়া উচিত।
ওষুধ ও ইনসুলিন: রোজা খাবারের সময়সূচি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ ও ইনসুলিনের সময় ও মাত্রা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। সন্ধ্যায় ইফতারের পর পূর্ণমাত্রায় সকালের ওষুধ ও ইনসুলিন নিতে হবে। অন্যদিকে রাতের ওষুধ ও ইনসুলিন অর্ধেক মাত্রায় ভোররাতে ব্যবহার করা হবে। তবে এটি রক্তে শর্করার পরিমাণের ওপর নির্ভর করবে। তাই ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন প্রসঙ্গে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ব্যায়াম : প্রতিদিন ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটি করেন এমন ডায়াবেটিক রোগীদের রুটিন রমযান মাসে পরিবর্তন করতে হবে। রোজা পালনকালে ব্যায়াম ও বেশি হাঁটা ঠিক হবে না। তবে ইফতারের একঘণ্টা পর ও সেহরির আগে ব্যায়াম করে নিতে পারেন। রমজানে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কিছু নমুনা খাবার তালিকা দেওয়া হল। প্রয়োজন হলে নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার তালিকা ঠিক করে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় অতি ভোজন এবং শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করতে হবে। সবকিছুই পরিমাণ মতো নেওয়া উচিত।
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top