নিজের মায়ের কাছে না ফেরার আকুতি কিশোরী রুমার

Unknown
সেবা ডেস্ক: ‘আপনাদের পায়ে ধরি, আমার মায়ের কাছে ফিরাইয়া দিয়েন না। যার জন্যে পালাইয়া আইলাম, সেইখানেই ওরা আমারে নিয়ে যাবে। ওরা আমারে বাঁচবার দ্যাবে না। ওখানে গ্যালে আমি মরি যাব।’ এইভাবে আকুতি জানাচ্ছিল বারো বছরের কিশোরী রুমা। মাগুরার আড়পাড়া মোল্লাবাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকার আহছানিয়া মিশনের যশোরের ‘ঠিকানা হোমে’ আশ্রয় মিলেছে তার। পালিয়ে আসার পর কয়েকজনের সহায়তায় পুলিশের মাধ্যমে গত শুক্রবার রাতে তার ঠাঁই হয়েছে ওই হোমে। 
 
গতকাল শনিবার সকাল থেকে রুমার মা, সৎ বাবা আর নির্যাতনকারী পরিবার পিছু নেন তাকে ফিরিয়ে নেয়ার। আর এতেই আতঙ্কিত রুমা মায়ের কাছে না ফেরার কথা বারবার অনুরোধ জানাতে থাকে। এমনকি হোমে আসা মায়ের সাথেও সে দেখা করেনি। গতকাল দুপুরে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের মাধ্যমে হোমে কথা হয় রুমার সাথে। রুমা জানায়, তার বাড়ি বরিশালের চামড়া শালিখাখালী গ্রামে। তার বাবা আনিস ঢাকায় থাকেন। কিন্তু কী করেন তা সে জানে না। পাঁচ বছর আগে তার মা হাওয়া অন্যখানে বিয়ে করে চলে যান। সেই সময় তার সৎ বাবা রুমাকে মাগুরার আড়পাড়া মোল্লাবাড়ির বাসের চেকার আকিব খানের বাড়িতে রেখে আসেন। 
 
সেই থেকে গৃহকর্তা-গৃহকর্মী আর তার সন্তানদের নির্যাতনের শিকার রুমা। কয়েকমাস আগে তাকে মারধোর করে এতটাই জখম করা হয় যে, হাতে ও মাথায় ৫টি করে সেলাই দিতে হয়েছে। পিঠে কালসিটে দাগ জমে রয়েছে। সেসব ক্ষত এখনও দগদগে। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ৭-৮ দিন আগে রুমা বাড়ির পাশের একটি অনুষ্ঠান দেখার কথা বলে পালিয়ে যায়। সেখানে একজন নারী তাকে আশ্রয় দেন। এরপর সুযোগ বুঝে তাকে পুলিশের মাধ্যমে হোমে পাঠান। 
যশোর কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, 'আমরা মেয়েটিকে হোমে দিয়েছি। এটুকুই আমাদের দায়িত্ব। পরবর্তী করণীয় ওরা নির্ধারণ করবেন।'
 
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের হোম ম্যানেজার লাবনী সুলতানা জানান, 'আমরা কাউন্সিলিং করে তার প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করব। সে পরিবারে ফিরতে চাইলে ফিরিয়ে দেয়া হবে। না হলে তার উপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সহায়তা করা হবে।'
ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top