সেবা ডেস্ক: জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ইলিয়াস হোসেনের ভেরিফায়েড পেজ।
![]() |
| উস্কানিমূলক পোস্টের জের: মেটা থেকে উধাও সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ |
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত থেকে তাঁর প্রায় ২২ লাখ অনুসারীর (ফলোয়ার) পেজটি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে, সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উস্কানিমূলক ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ পোস্ট দেওয়ার কারণেই ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। হাদির মৃত্যুর পর উত্তেজিত জনতা দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম—দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। এছাড়া বাঙালির সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান ছায়ানট ও উদীচীর মতো সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানেও ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটে।
এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাতে ইলিয়াস হোসেন তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে একাধিক স্ট্যাটাস দেন। অভিযোগ রয়েছে, তাঁর এসব স্ট্যাটাসে হামলাকারীদের পরোক্ষভাবে সমর্থন জানানো হয়েছিল এবং আরও সহিংসতা ঘটাতে উস্কানি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর এসব পোস্ট মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয় এবং তা সহিংসতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে বলে মনে করছেন অনেকে।
শুক্রবার রাত থেকে হঠাৎ করেই ইলিয়াস হোসেনের পেজটি দৃশ্যপটের বাইরে চলে যায়। ফেসবুকে সার্চ দিলে পেজটির লিংকে ‘কনটেন্ট নট ফাউন্ড’ বা ‘পেজটি উপলব্ধ নয়’ বার্তা দেখাচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে মেটার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি ফেসবুকের ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ফেসবুকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা পেজ যদি সহিংসতা উসকে দেয়, ঘৃণা ছড়ায় (Hate Speech) অথবা জননিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কনটেন্ট প্রচার করে, তবে সেটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ‘সহিংসতা ও প্ররোচনা’ (Violence and Incitement) বিষয়ক নীতিমালার আওতায় ইলিয়াস হোসেনের পেজটি ‘আনপাবলিশ’ বা স্থায়ীভাবে ডিলিট করা হয়ে থাকতে পারে।
ইলিয়াস হোসেনের পেজ সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একপক্ষ একে বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বললেও, অপরপক্ষ মনে করছে জাতীয় সংকটের সময় দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উস্কানিমূলক আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলার মতো সংবেদনশীল ঘটনায় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের আরও সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল।
উল্লেখ্য, ইলিয়াস হোসেন দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে অবস্থান করে অনলাইন অ্যাক্টিভিজমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর পেজ বাতিলের ফলে তিনি তাঁর বিশাল সংখ্যক অনুসারীর সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যমটি হারালেন।
সূত্র: /সেবা হট নিউজ: সত্য প্রকাশ্যে আপোষহীন
- নিয়ে আরও পড়ুন


খবর/তথ্যের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, সেবা হট নিউজ এর দায়ভার কখনই নেবে না।