
হত্যার আগের রাতে গৌরিপুরে একটি বাসায় বৈঠকে ঘাতকরা হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যার সময় ১৫-১৬ জনের ওই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে একটি গ্রুপ গাড়ি থামানো ও ঘেরাও এবং অপর একটি গ্রুপ গুলি চালানো ও চা-পাতি দিয়ে কমান্ডো আক্রমণে অংশ নেয়। সিএনজি স্ট্যান্ডের লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গুলি চালায় জুলহাস বাহিনী। ওই নৃশংস হত্যায় অংশ নেওয়া গ্রেফতার বেলাল হোসেন ওরফে বাবুল গতকাল বৃহস্পতিবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আরাফাত উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ডিবির নিকটও বাবুল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে ডিবি সূত্রে জানা গেছে। গত বুধবার ডিবি পুলিশ দাউদকান্দির রায়পুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে। জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেছেন, এ হত্যার মাস্টারমাইন্ডদের সহসাই খুঁজে বের করা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দাউদকান্দির গৌরীপুর সিএনজি স্টেশনটি নিহত ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেনের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর জুলহাসের সাথে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। মনিরের বিশ্বস্ত লোক শাহ আলম নামের এক কর্মী ওই সিএনজি স্টেশনটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় জুলহাস ও তার লোকজন। জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল ডিবি পুলিশকে জানায়, সে জুলহাসের একজন কর্মী। হত্যার আগের দিন তারা গোপন বৈঠক করে। তার (বাবুল) দায়িত্ব ছিল রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যানজট সৃষ্টি করে চেয়ারম্যান মনিরকে বহনকারী গাড়িটি থামিয়ে দেওয়া।
মনির হোসেনের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার এঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। আসামিরা হচ্ছে- জুলহাস, রাসেল ওরফে টেপা রাসেল ওরফে তামা রাসেল, মোহাম্মদ আলী, নূর মোহাম্মদ, হাসান, সাইফুল, রুবেল মিয়া, আবু সাঈদ, ইয়াছিন, বাবুল, আল-আমিন, সুমন, তিতাস উপজেলার শাকিল ওরফে ছোট শাকিল।
ডিবি সূত্র জানায়, বাবুল পুলিশকে জানায়, গাড়িটি থামানোর পর গাড়ির গ্লাস ভেঙে ভেতরে জুলহাস, টেপা রাসেলের নেতৃত্বে পিস্তল থেকে গুলি চালানো হয়। ঘটনার সময় সন্ত্রাসীরা সাদা রংয়ের একটি মাইক্রোবাস দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই মো. শাহ কামাল আকন্দ জানান, অস্ত্র সরবরাহকারী ও নেপথ্যে অন্য কেউ আছে কি-না তা নিশ্চিত হতে অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন বলেন, এ মামলার ১, ২ ও ৩ নম্বর আসামির বিরুদ্ধে ৪/৫টি করে মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে ২নং আসামিসহ অন্যরা সদ্য জামিনে বেরিয়ে এ ঘটনা ঘটায়।
কুমিল্লার আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার মনির ও তার সহযোগী মহিউদ্দিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।-ইত্তেফাক।