
কয়েকদিনের টানা বর্ষন ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, তিসত্মা, ধরলাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি ঢুকে পড়ছে নদ-নদী তীরবর্তী চরের নিম্নাঞ্চল গুলোতে।
পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বজড়া বিয়ারখাতা, খেরম্নয়ার চর, খেদাইমারী, ফেসকার চর, নাইয়ের চর, দুইশোবিঘাসহ প্রায় ২০টি গ্রাম, অষ্টমীরচর ইউনিয়নের মুদাফত কালীকাপুর, ডাটিয়ারচর, নটারকান্দি ও দিঘলকান্দিসহ প্রায় ১৫টি গ্রাম, চিলমারী ইউনিয়নের মানুষমারার চর, আমতলার চর, কড়াই বরিশালসহ প্রায় ১০টি গ্রাম ও সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের তিনহাজারীর চর, ভগবতীর চর, খেয়ার আলগার চর, চর যাত্রাপুর, চরপারবতীপুরসহ প্রায় ১২টি গ্রাম প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ। এছাড়াও নতুন জেগে উঠা চরের ঘর-বাড়িতে গুলো পস্নাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব গ্রামের প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
এ অবস্থায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দী মানুষেররা। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে জেলার নদ-নদী তীরাবর্তী প্রায় ২ শতাধিক চরাঞ্চল পস্নাবিত হয়ে পড়বে।
অন্যদিকে রৌমারী উপজেলার সাহেবের আলগা বিজিবি’র বিওপি ক্যাম্প সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের বামতীর রড়্গা প্রকল্পের ৯০ মিটার বাধ ধসে গেছে।
চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর ইউনিয়নের ডাটিয়ার চরের শাহাজাহান আলী জানান, বন্যার পানি বাড়িতে ঢুকে পড়েছে। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে মনে হয় বউ বাচ্চা নিয়ে আর বাড়িতে থাকা যাবে না।
চিলমারী উপজেলার নয়ারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হানিফা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আমার ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকতে শুরম্ন করেছে। নদের পানি এভাবে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পুরো ইউনিয়নের মানুষজন পানি বন্দী হয়ে পড়বে।
চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল জানান, এবছর প্রথম আমার ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের কিছু বাড়ি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করবে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ৩২ সেন্টিমিটার, ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার ও তিসত্মা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
