পৌরসভা নির্বাচন-২০১৭ : বকশীগঞ্জে পাল্টে যাচ্ছে ভোটের হিসাব-নিকাশ

G M Fatiul Hafiz Babu

সেবা ডেস্ক:

জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ভোটের হিসাব ক্ষণে ক্ষণে পাল্টে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এই নির্বাচনকে নিজেদের মর্যাদার লড়াই বলে মনে করছেন।

নির্বাচনে জয়ী হতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। দিন-রাত প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র প্রার্থীরা।

 দলের ব্যানারে আসা প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিন দিন আগে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শাহীনা বেগমকে সমর্থন দিয়েছে স্থানীয় জাতীয় পার্টি।
অপরদিকে বিএনপির পক্ষে প্রকাশ্যে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের নেতা কর্মীরা মাঠে না নামলেও তাদের ভোট গড়াবে শেষ পর্যন্ত জোটের প্রার্থী ফকরুজ্জামান মতিনের ব্যালট বাক্সে।

বকশীগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়েছে কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সদস্য ও উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি শাহীনা বেগম। বিএনপির প্রার্থী রয়েছে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুজ্জামান মতিন।

এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছে পৌর যুবলীগের আহবায়ক নজরুল ইসলাম সওদাগর, আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত নেতা আনোয়ার হোসেন তালুকদার বাহাদুর , আরেক বহিস্কৃত নেতা এএম নুরুজ্জামান ও সোলায়মান হক।

আগামি ২৮ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে ভোটারদের মধ্যে। এই নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ প্রেস্টিজ ইস্যু হিসেবে দেখছে। তারা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হলেও বিএনপিতে রয়েছে নানা শঙ্কা।

 আওয়ামী লীগে কোন্দল থাকলেও নির্বাচন উপলক্ষে বিভেদ ভুলে সবাই মাঠে কাজ করছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ জেলার একটি টিম প্রতিদিন গণসংযোগ করে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন।

 এমনকি পৌর এলাকার বাইরে একটি গ্রামে গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী নির্বাচিত হলে একশ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে বলেও বক্তব্যে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। ধানের শীষে ভোট চেয়েছেন তারা।

এছাড়াও শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পৌর যুবলীগের আহবায়ক নজরুল ইসলাম সওদাগর।

 বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে প্রতিনিয়ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। একারণে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাথা ব্যাথা হয়ে দাড়িয়েছেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী ।

গত মঙ্গলবারের কর্মী সমাবেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম সওদাগরকে নিয়ে আক্রমণাত্বক বক্তব্য দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি।

নজরুল সওদাগরের সমর্থকদের দাবি , নির্বাচনে নিরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি জয়ী হবেন। তবে ওই কর্মী সমাবেশের পর থেকে ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের সকল নেতা কর্মী একযোগে মাঠে নেমে নৌকার পক্ষে কাজ করছে।

যেকোন মূল্যে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করায় এখন আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।
এদিকে উপজেলা জাতীয় পার্টি তাদের কোন প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শাহীনা বেগমক সমর্থন দিয়েছে।

 ইতোমধ্যে এই দলের নেতারা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে লিফলেট ও  প্রচারপত্র বিলি করেছেন। আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি মিলে কাজ করায় উৎসাহ-উদ্দীপনা বেড়ে সরকার সমর্থকদের মধ্যে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এমএ সাত্তারের বাড়ি বকশীগঞ্জে হওয়ায় তার ইমেজও কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।

বিএনপির প্রার্থী ফকরুজ্জামান মতিন স্বদল বলে এগিয়ে যাচ্ছে। জামায়াতকে প্রকাশ্যে না পেলেও ভোট পাবেন তারাই এমন হিসাবও কষছে বিএনপি।

তবে বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে নানা শঙ্কা। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ধানের শীষের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না এমন কথাও বলছেন বিএনপির নেতা কর্মীরা। তাই নির্বাচনে কি হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে সাধারণ ভোটারদের একমাত্র দাবি এই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও সর্বজনীন ও গ্রহণযোগ্য হয়। ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে এমনটাই দাবি পৌরবাসীর।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুঞ্জুরুল আলম জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যা যা করা প্রয়োজন তাই তাই করা হবে। তিনি জানান ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত সুন্দর পরিবেশ রয়েছে নির্বাচনী মাঠে।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top