আগামী বৃহস্পতিবার বকশীগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনের ভোট গ্রহণ

S M Ashraful Azom



নির্বাচন ডেস্ক:  জমে উঠেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন । শেষ মুহূর্তে তুঙ্গে রয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। কে হবেন বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের প্রথম মেয়র তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। পোস্টারে ছেয়ে গেছে বকশীগঞ্জ পৌর শহর। এছাড়াও পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও চলছে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা। নির্ঘুম রাত কাটছে প্রার্থীদের । চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে নির্বাচন নিয়ে। আগামি ২৮ ডিসেম্বর বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ , বিএনপি ও স্বতন্ত্র সহ ছয় জন মেয়র প্রার্থী দিন রাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৮ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও । শেষ মূহর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র প্রার্থীরা। কথার ফুলঝুড়ি ও নানা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন তারা। বকশীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন মূলত লড়াই হবে ত্রিমুখী। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শাহীনা বেগমের নৌকা , বিএনপির ফকরুজ্জামান মতিনের ধানের শীষ ও শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম সওদাগরের জগ প্রতীকের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বাকি তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী এএম নুরুজ্জামান (জামান) , আনোয়ার হোসেন তালুকদার বাহাদুর ও সোলাইমানও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

দুুই হাজার ৩৮০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভায় এবারই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে ৩০ হাজার ৫৯১ ভোটার ভোট দেবেন।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শাহীনা বেগম ও বিএনপির প্রার্থী ফকরুজ্জামান মতিনের কর্মী সমর্থকরা দল ভাগ করে প্রতিদিন দিন নির্বাচনী মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শাহীনা বেগমকে জেতাতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দ প্রতিদিন গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা ও ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির প্রার্থী ফকরুজ্জামান মতিতের পক্ষেও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মর্যাদার লড়াই মনে করা হচ্ছে এই নির্বাচনকে। তাই কোমর বেধে মাঠে নেমেছে দুই দলের প্রার্থীরা।

 আওয়ামী লীগে কোন্দলের কারণে অস্বস্তিতে রয়েছে নৌকার প্রার্থী শাহীনা বেগম। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচাল রয়েছে আওয়ামী লীগের মধ্যে । তবুও নিজ দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠে কাজ করছে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। বিএনপির একটি অংশও তাদের প্রার্থীর পক্ষে না থাকায় নানা সমালোচনা রয়েছে নির্বাচনী মাঠে। বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে জোড়ালোভাবে কাজ করছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম সওদাগর। বকশীগঞ্জ শহরের সওদাগর পাড়ায় তার বাড়ি হওয়ায় ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর। সাবেক যুবনেতা নজরুল ইসলাম সওদাগরের কারণে দুশ্চিন্তায় রয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা। প্রতিদিন বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে মাঠে কাজ করছেন তিনি। জগ প্রতীক নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চেয়ে যাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল সওদাগর।

সবগুলো কেন্দ্রের মধ্যে তার নিজ কেন্দ্রে ভোট বেশি হওয়ায় ভাবিয়ে তুলেছে অন্যান্য প্রার্থীকে। নজরুল সওদাগরের ভোট ব্যাংক নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থী।
তবে নির্বাচন নিয়ে নানা শঙ্কা রয়েছে স্থানীয় ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে । বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। জনগণকে নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।


তবে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতীক দেখে নয় ব্যক্তিকে ভোট দেবেন তারা। যিনি আপদে বিপদে সাধারণ মানুষের পাশে থাকে তাকেই মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করবেন। যিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে বকশীগঞ্জকে এটি উন্নত পৌরসভায় রূপান্তর করবেন তাকেই নির্বাচিত করা হবে এমন কথা ভোটারদের। আর এ জন্য অপেক্ষা করতে আগামি ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
নির্বাচনের শেষ মূহর্তে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশর সচিব সকল প্রার্থীদের সাথে মতিবিনিময় করেছেন। নিয়োগ করা হয়েছে প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার।


এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুঞ্জুরুল আলম জানান, নির্বাচন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন বিপুল সংখ্যক ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে করবেন।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top