প্লাস্টিক শিল্প দেশের অর্থনীতিতে নতুন চালিকা শক্তি

S M Ashraful Azom
প্লাস্টিক শিল্প দেশের অর্থনীতিতে নতুন চালিকা শক্তি

সেবা ডেস্ক:  প্লাস্টিক পণ্য বাংলাদেশের অর্থনীতির বিকাশমান শিল্পখাত। প্রযুক্তি ও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেশ পরিবর্তন ঘটেছে বাংলাদেশের প্লাস্টিক শিল্পে। প্লাস্টিক পণ্যের বৈচিত্র্য ময় উৎপাদনে বিশাল স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। এক সময়ের আমদানি নির্ভর এসব পণ্যের প্রায় সবই এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে। ফলে অ্যালুমিনিয়াম, সিরামিক পণ্যকে পেছনে ফেলে প্লাস্টিক পণ্য খুব সহজেই দেশীয় ক্রেতাদের মন জয় করে নিচ্ছে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশেই রপ্তানি হচ্ছে। হাজার কোটি টাকা রপ্তানি আয় আসছে এ খাত থেকে।

দেশের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ইতোমধ্যে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে প্লাস্টিক। প্লাস্টিক শিল্পনগরী ও এ খাতে দক্ষ কর্মী তৈরি করতে পারলে বিশ্ববাজার দখল করাও এখন অসম্ভব কিছু নয়।

এ দেশে প্লাস্টিক শিল্পের যাত্রা শুরু সেই পঞ্চাশ দশকের শুরুতে। পঞ্চাশ দশকের শুরুতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে প্লাস্টিক শিল্প। নব্বই দশক পর্যন্ত এ দেশে নিম্নমানের প্লাস্টিক পণ্যই উৎপাদিত হতো। নব্বই দশক থেকে পোশাক শিল্পের পাশাপাশি প্লাস্টিক শিল্পেও নীরব বিপ্লব ঘটেছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১২তম প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিকারক দেশ। উদ্যোক্তারা বলছেন, পোশাক শিল্পের মতো আনুকূল্য পেলে প্লাস্টিক পণ্য দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাতে পরিণত হবে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, সরকারের সহায়তা পেলে ২০২১ সালের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করে ৮ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। দেশের প্লাস্টিক জগতে আরএফএল, বেঙ্গল, পারটেক্স ও হ্যামকোসহ অনেক কোম্পানিই বিশ্বে প্লাস্টিক পণ্যের আস্থার নাম। এবার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যে ২৬.৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্লাস্টিক খাত থেকে ধরা হয়েছে।

বর্তমান বিশ্বে আসবাবপত্র থেকে অটোমোবাইল, মেডিসিন, কিংবা রপ্তানিমুখী শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ, এমন কোনো খাত নেই, যেখানে ব্যবহার নেই প্লাস্টিকের। প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নিত্য নতুন প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা। বড় অঙ্কের এই চাহিদা পূরণে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের প্লাস্টিক খাত।

বাংলাদেশের এই খাত থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলার আয় হয়। ২০২১ সালের মধ্যে প্লাস্টিক খাত থেকে রপ্তানি আয় ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার। বর্তমানে ছোট বড় ও মাঝারি মিলিয়ে প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৫ লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এই খাতে ২৫ লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।

প্লাস্টিক কাঁচামালের আমদানি নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার এই প্রথম দেশী ও বিদেশী কোম্পানীর সহযোগিতায় মহেশখালীর অর্থনৈতিক অঞ্চল-৩ এ প্লাস্টিক কাঁচামাল উৎপাদনের কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।

অপার সম্ভাবনার এই প্লাস্টিক খাতে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আগামী পাঁচ বছর বজায় থাকলে এই খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অন্যতম মূল চালিকাশক্তি হয়ে।


ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top