মাদকাসক্ত পুত্রকে বদলাতে ব্যর্থ ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ স্লোগানের জনক মতিউর!

S M Ashraful Azom
মাদকাসক্ত পুত্রকে বদলাতে ব্যর্থ ‘বদলে যাও, বদলে দাও

সেবা ডেস্ক: "মতিউর রহমান" বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতে অনেক আলোচিত এবং সমালোচিত একটি নাম। মতিউর রহমান বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা ‘প্রথম আলো’র সম্পাদক। ‘বদলে যাও, বদলে দাও’ স্লোগানের তকমা লাগিয়ে দেশবাসীকে বদলানোর সবক দিলেও প্রথম আলোর সম্পাদক তার নিজের মাদকাসক্ত ছেলেকে বদলে দিতে ব্যর্থ হয়ে রয়েছেন।

সম্প্রতি সারাদেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে অনুসন্ধানে মতিউরের ছেলে মাহমুদুর রহমান শাসার বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে মাদকাসক্ত থাকার তথ্য উঠে এসেছে।

অনুসন্ধান করে জানা যায়, রাজধানীর শুক্রাবাদের ‘এরাম হোটেল অ্যান্ড বার’-এর রাতের পরিবেশটা ভীষণ পছন্দ মাহমুদুর রহমান শাসার। রুমজুড়ে মদের ঝাঁঝালো গন্ধ উপভোগ এবং মদ পান করতে তাই রাতের আঁধারে নিয়িমিতই সেখানে যাতায়াত করেন তিনি।

শাসা সম্পর্কে ঐ বারের একজন ওয়েটারের মূল্যায়ন ‘স্যার অনেক ভালো মানুষ! মদ খাইতে আসলে একশ টাকার নিচে কখনো বকশিশ দেয় না। তিনজন দাঁড়ালে তিনজনকেই বকশিশ দেয়।’

আরেকজন ওয়েটার শাসার ভালো(!) দিক মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেন, ‘স্যার ৬/৭ পেগ খেলেও স্বাভাবিক থাকে। শুধু চোখগুলান লাল হয়।’

শাসার এ মদপানের কথা স্বীকার করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাসার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী। শাসার পক্ষ(!) নিয়ে অবশ্য তিনি বলেছেন, ‌‘স্যার মদ খেলেও আপনি তাকে কোনোভাবেই মাদকাসক্ত বলতে পারবেন না। উনিতো ভালো জায়গায় গিয়ে ড্রিংক করে।’

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় মদ ছাড়াও ইয়াবা, ফেনসিডিল এবং গাঁজার প্রতিও শাসার যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান টেকনাফের এক কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ীর সাথে সখ্যতা রয়েছে শাসার, ওই ইয়াবা ব্যবসায়ী প্রতি সপ্তাহে নিজ দায়িত্বে মতিউর পুত্রের কাছে ইয়াবা পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

কাশি নিরাময়ের অজুহাতে নিজের বিজ্ঞাপনী সংস্থার অফিসে এক প্রকার প্রকাশ্যেই ফেনসিডিল পান করেন শাসা। তিনি অফিসে থাকাকালীন সময়ে তার রুম ফেনসিডিলের উদ্ভট গন্ধে ভরপুর থাকে বলা জানান তার প্রতিষ্ঠানের ঐ কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাসার এক কাছের বন্ধুর বরাত দিয়ে জানা গেছে গাঁজার সাথে শাসার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল মূলত স্কুল জীবনের শেষের দিকে। তখন এক প্রকার তথাকথিত ‘স্মার্টনেস’ এবং আধুনিকতার অংশ হিসেবে গাঁজা সেবন শুরু করলেও পরবর্তীতে তা ভয়ানক নেশা হয়ে দাড়ায় শাসার জীবনে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে শাসার ব্যক্তিগত গাড়ীর ড্রাইভারই মূলত তার গাঁজার যোগানদাতা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, মাদকাসক্ত শাসাকে নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন মতিউর রহমান। অনেকবার ফেরাতে চেয়েছেন শাসাকে, কিন্তু শাসা বাবার শাসন কিছুতেই মানছেন না। অনেক আগে থেকেই শাসা মদপান করে আসছেন। কয়েক বছর আগে শাসাকে ত্যাজ্যপুত্র করার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শাসা বাবার কোনো কিছুই পরোয়া করছেন না। অনুসন্ধানে জানা গেছে শাসার বন্ধু-বান্ধবদের অধিকাংশই মাদকাসক্ত।

বখে যাওয়া ছেলেকে ফেরাতে মতিউর শাসাকে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। অ্যানেক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড নামক বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানটি করে দিয়ে তিনি তখন বলেছিলেন, ‘অ্যাড ফার্মের কাগজপত্রসহ সব ওকে করে দিয়েছি। এবার এটা দিয়া ধান্ধা করো। তোমার অস্ত্র প্রথম আলো। এমনভাবে কাজ করবে যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙ্গে।’ অ্যানেক্সের সাবেক একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানা গেছে।

মতিউর রহমান প্রথম আলোর মাধ্যমে ‘মাদককে না বলুন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশ ব্যাপী মাদকবিরোধী আন্দোলন করছেন। মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক কনসার্টেরও আয়োজন করেছেন। অথচ নিজের ছেলেকেই তিনি মাদকের অন্ধকার জগৎ থেকে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। যদিও সেসব সচেতনতামূলক কনসার্ট আয়োজন করে স্পনসরদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়াটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল তার বলে দাবি করেন অনেকে।



ট্যাগস

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Know about Cookies
Ok, Go it!
To Top