সেবা ডেস্ক:
-জার্মানি
১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপের পর আর কখনোই প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়নি। আজ
সুইডেনের বিপক্ষে তাই চ্যাম্পিয়নদের বাঁচা-মরার লড়াই। আজ বিপদ হলেই
বিশ্বকাপের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হবে জোয়াকিম লো’র দলকে।
বাড়তি
সতর্কতার তাই কোনো বিকল্প নেই। যদিও, কোচ জোয়াকিম লো খেলোয়াড়দের নির্ভার
থাকারই পরামর্শ দিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি না অন্য দেশের ক্ষেত্রে কি হতো
তবে আমি মনে করি আমাদের সামনে কোনো দুর্ভাগ্য অপেক্ষা করছে না। আমি
নিশ্চিত যে, দ্বিতীয় পর্বে আমরা যাব। আমাদের পরিকল্পনা পাল্টানোর কোনো
প্রয়োজন নেই, নির্ভার থাকাটা জরুরি। আমরা নিজেদের মতো খেলতে পারলেই জিতে
যাব। চাপ না নিয়ে ভালো খেলাটাই দরকার।
প্রতিপক্ষ
সুইডেন আছে ফুরফুরে মেজাজে। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া
দলটি মেক্সিকোর সাথে ‘এফ’ গ্রুপে যৌথ ভাবে শীর্ষে আছে। জার্মানদের বিপক্ষে
মুখোমুখি লড়াইয়েও দলটা খুব একটা পিছিয়ে নেই। দল দু’টো মুখোমুখি হয়েছে মোট
৩৬ বার। এর মধ্যে জার্মানরা জিতেছে ১৫টি ম্যাচ, আর সুইডেন জিতেছে ১২ বার।
ফলে, আজকে সুইডেন জিতে গেলে তাকে মোটেই অঘটন বলার কোনো উপায় নেই। ম্যাচটি
অনুষ্ঠিত হবে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়। একই গ্রুপের অন্য খেলায় রাত নয়টায়
মেক্সিকোর মুখোমুখি হবে এশিয়ার দল দক্ষিণ কোরিয়া।
তবে,
বিশ্বকাপের মঞ্চে পারফরম্যান্সের দিক থেকে একটু হলেও এগিয়ে থাকবে
জার্মানি। কারণ, চারবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে তিনবারই এখানে জিতেছে জার্মানি।
আর সুইডেন বিশ্বকাপে জার্মানদের বিপক্ষে একমাত্র জয়টি পেয়েছে ১৯৫৮ সালে,
নিজেদের দেশে। সেবার ফাইনাল খেলেছিল সুইডেন, ফাইনালে হারে পেলে-গারিঞ্চাদের
ব্রাজিলের কাছে।
জার্মানির
জন্য আরেকটি সুসংবাদ হলো আজ একাদশে ফিরতে পারেন লেফট ব্যাক জোনাস হেক্টর।
প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে ফ্লু জনিত কারণে তাকে বিবেচনায় রাখতে
পারেননি জোয়াকিম লো। সেই ম্যাচে জার্মানি মেক্সিকান তরুণ হার্ভিং লোজানোর
গোলে ১-০ ব্যবধানে হারে।
সুসংবাদ
আছে সুইডিশ শিবিরেও। দেশটির ডিফেন্ডার ভিক্টর লিন্ডেলোফ দক্ষিণ কোরিয়ার
বিপক্ষে অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেননি। তবে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের এই
ফুটবলার সুস্থ জয়ে ফিরেছেন অনুশীলনে।
সুইডিশ
ফরোয়ার্ড এমিল ফোর্সবার্গ ম্যাচে এগিয়ে রাখছেন জার্মানিকেই, তবে, একই সাথে
তিনি এটাও জানালেন যে, সুইডেন একবিন্দুও ছাড় দেবে না জার্মানিকে। তিনি
বলেন, ‘ওরা এখানে বড় ফেবারিট দল হিসেবে এসেছে। নিঃসন্দেহে ওদের দলটা
অসাধারণ। আর ওরা বাঁচামরার লড়াইয়ের মধ্যে আছে। ওরা যদি আজ না জিততে পারে
তাহলে সমালোচকরা ওদের ছেড়ে কথা বলবে না। ওরা মানসিক ভাবেও অনেক শক্ত দল।
তবে, আমরা নিজেদের শক্তিমত্তার পুরোটা দিয়ে খেলতে চাই। এর জন্য আমরা
পরিশ্রমের কোনো কমতি রাখছি না।’
ফোর্সবার্গের
দাবি জামার্নিকে বিপদে ফেলতে হলে নিজেদের সামর্থ্যের চেয়েও ওপরে গিয়ে
খেলতে হবে সুইডেনকে। তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে নিজেদের সামর্থ্যের শতভাগের
চেয়েও বেশি ভালো খেলতে হবে। ওদের হারানো খুব শক্ত, এমনকি ড্র করাও সহজ নয়।
কিন্তু, চেষ্টা না করে আমরা কিছু বলতে পারছি না। আমরা মানসিক ভাবে
প্রস্তুত। দেখা যাক কতটুকু যেতে পারি, তবে এটা সত্যি যে, আমরা বড় কিছুর
স্বপ্ন নিয়েই মাঠে নামবো।’
বাছাইপর্বে
ফ্রান্সের গ্রুপে ফরাসিদের ঠিক পেছনেই ছিল সুইডেন। সেখানে নেদারল্যান্ডসকে
টপকেছে তারা। একই সাথে প্লে-অফে ইতালিকে দুই লেগ মিলে ১-০ গোলে হারানোর
পরই নিশ্চিত হয়েছে সুইডেনের বিশ্বকাপ খেলা। বোঝাই যাচ্ছে, নার্ভ শক্ত রেখে
বড় দলের বিপক্ষে কিভাবে জিততে হয় সেটা সুইডিশদের ভালো ভাবেই জানা আছে।
জার্মানির
বাছাইপর্বটা ছিল খুবই স্বাচ্ছন্দ্যময়। বাছাইপর্বের ১০ খেলার সবগুলোতেই
জিতেছে তারা। তবে, ম্যানুয়েল নয়্যারের দলের বড় সমস্যা সাম্প্রতিক
পারফরম্যান্স। শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে কেবল একটিতে জিতেছে তারা। সেই ২-১
ব্যবধানে জয় আবার এসেছে দুর্বল দল সৌদি আরবের বিপক্ষে।
গত
৮০ বছরের মধ্যে জার্মান কেবল নিষেধাজ্ঞার কারণে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ খেলতে
পারেনি। এর বাদে আর কোনোবারই প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়ার কোনো নজির নেই।
ফলে, আজ কোনো বিপদ হলেই সেটা জার্মান ফুটবলের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়
হিসেবে বিবেচিত হবে।